জানুন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

প্রকাশিত: ০৯ এপ্রিল ২০১৫, ০৩:২৬ এএম

সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেসের র‌্যাংকিং অনুযায়ী গত বিংশ শতাব্দির গুরুত্বপূর্ণ আটটি ঘটনার একটি হলো প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। এই মহাযুদ্ধ সংঘটনের ফলে পরবর্তীতে একাধারে অনেকগুলো ঘটনা ঘটে। যেমন: বিশ্বজুড়ে বিষণ্নতা, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, হত্যাযজ্ঞ, স্নায়ুযুদ্ধ আর সাম্রাজ্যের পতন। এটি ছাড়া এমন কোনো ঘটনা নেই যে ভবিষ্যতের ওপর এমন প্রভাব বিস্তার করতে পারে। শতবছরের মধ্যে ইউরোপ বড় কোনো যুদ্ধে লিপ্ত ছিল না। কিন্তু যুদ্ধ পূর্ববর্তী পাঁচ সপ্তাহের ভুল হিসাব, ভুল বোঝাবুঝি আর যোগাযোহীনতা এই যুদ্ধকে তরান্বিত করে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ফলে জার্মান, অ্যাস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান, অটোমান ও রোমান সাম্রাজ্যের পতন ঘটে। এই মহাযুদ্ধের ফলে মধ্যপ্রাচ্য ও ভিয়েতনামে ঔপনিবেশিক বিদ্রোহের সূচনা হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ অ্যামেরিকানদের সংস্কার ও নৈতিক ধর্মযুদ্ধের বিশ্বাস ধ্বংস করে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ফলে নিষেধ, নারীর ভোটাধিকার এবং সুশীল সমাজের তিক্ত তর্কের একটি সুদূর প্রসারী প্রভাব দেখা দেয়।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ৯০ লক্ষ যোদ্ধা ও ৫০ লক্ষ নিরীহ মানুষ নিহত হয়। এই মহাযুদ্ধে প্রায় ১৮৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রত্যক্ষ ও ১৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পরোক্ষ খরচ হয়। যা ইতিপূর্বে ঘটিত যেকোনো যুদ্ধব্যায়ের চেয়ে অনেক বেশি।

অ্যাস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্যের যুবরাজ আর্চডিউক ফ্রানজ ফার্দিনান্দকে হত্যাই মূলত প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সূচনা করে, ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দের আগস্টে, যখন জার্মানি, বেলজিয়াম ও ফ্রান্সে আক্রমণ করে বসে। কিছুক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপও এই যুদ্ধ শুরুর অন্যতম কারণ বলে বিবেচনা করা হয়। যেমন: জার্মান ডুবোজাহাজের অবাধ চলাচলের ফলে লুসিটানিয়া নামের একটি বৃটিশ যাত্রীবাহী জাহাজ ‍ডুবে যাওয়া; এবং জিমারম্যানের একটি নোট, যেখানে লেখা ছিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে জার্মানদের কূটচালের কথা। ভার্সাই চুক্তির ফলে জার্মান তার অধিকৃত অনেক এলাকা ছেড়ে দিতে এবং ক্ষতিপূরণ বাবদ অর্থ পরিশোধ করতে বাধ্য হয়। সেসময়ের মার্কিন রাষ্ট্রপতি উইলসন ভার্সাই চুক্তি সম্পাদন করেন কিন্তু তিনি সিনেটকে দিয়ে এটি অনুমোদন করাতে ব্যর্থ হন।

এই যুদ্ধের ফলাফল:
১. প্রায় এককোটি সৈন্য এবং ২ কোটি ১০ লক্ষ সাধারণ মানুষ আহত হয়, এদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ছিল এক লক্ষ ষোল হাজার পাঁচশত ষোল জন।

২. চারটি সাম্রাজ্যের পতন ঘটে। রোমান সাম্রাজ্য ১৯১৭ সালে, জার্মান ও অ্যাস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্য ১৯১৮ সালে এবং অটোমান সাম্রাজ্য ১৯২২ সালে।

৩. অস্ট্রিয়া, চেক স্লোভাকিয়া, এস্তোনিয়া, হাঙ্গেরি, লাটভিয়া, লিথুনিয়া এবং তুরস্ক স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে ওঠে।

৪. অটোমান সাম্রাজ্যের অধীনে থাকা অধিকাংশ আরব এলাকা বৃটিশ ও ফরাসি সাম্রাজ্যের অধীনে আসে।

৫. ১৯১৭ সালে বলশেভিকরা রাশিয়ার এবং ১৯২২ সালে ফ্যাসিস্টরা ইতালির ক্ষমতায় আরোহন করে।

৬. এ যুদ্ধের অন্য ফল হলো: অ্যামেরিকানরা তুরস্কে গণহত্যা চালায় এবং ইনফ্লুয়েঞ্জায় বিশ্বব্যাপী ২৫ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হয়।-সূত্র: ডিজিটাল হিস্টোরি।

সম্পাদনা: তাহমিনা শাম্মী।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: