হিন্দু ও ইসলাম ধর্মের সাদৃশ্যতা- ডঃ জাকির নায়েক [পর্ব-০১]

প্রকাশিত: ০৯ জুলাই ২০১৫, ০৫:০৩ এএম

সুরা আলে-ইমরান এর ৬৪ তম আয়াতে উল্লেখ করা আছে, “হে অনুসারীরা, আসমানি কিতাবের আসো সেই কথায়, যাহা তোমাদের এবং আমাদের মধ্যে এক। প্রথম সাদৃশ্য কি? আমরা আল্লাহ্‌ ব্যতীত আর কারও ইবাদত করি না। আমরা কোন কিছুতে তার শরীক করি না।

আল্লাহ্‌ ব্যতীত আমরা কেহ অন্য কাউকে রব হিসেবে গ্রহণ করি না। তোমরা সাক্ষী থাকো, অবশ্যই আমরা মুসলিম। আল্লাহ্‌ পাকের কাছে আমাদের নিজেদের ইচ্ছাকে সমর্পণ করুন”।

পবিত্র কোরআনের এই আয়াতে স্পষ্ট করে আহলে কিতাবের নাম বলা হয়েছে। আহলে কিতাব অর্থাৎ ইহুদী ও খ্রিষ্টানেরা, কিন্তু তা বলতে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের কথা বলা হয়েছে। ধর্মকে সঠিকভাবে জানার জন্য আমাদের সকলের উচিৎ আমাদের যার যার নিজ ধর্মের গ্রন্থকে ভালভাবে পড়া।

আমরা যদি কোন অনুসারীকে অনুসরণ করে চলতে থাকি, তাহলে তার ভুল হবার সাথে সাথে আমাদের ভুল হতে পারে। ভালভাবে ধর্মকে জানার জন্য কাউকে অনুসরণ না করে ধর্মগ্রন্থকে ভালভাবে বুঝে নিতে হবে।

হিন্দু ধর্মকে বোঝার জন্য প্রথমে বেদ, বেদের পরে রয়েছে উপনিষদ, ইতিহাস, রামায়ণ, মহাভারত, ভগবদ-গীতা এবং তারপর পুরাণ রয়েছে। আমরা ভালভাবে বেদ পড়লে হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে জানতে পারব। ইসলাম সম্পর্কে জানতে হলে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোরআন মাজিদ ভালভাবে পড়তে হবে। কোরআন মাজিদ অর্থসহ পড়তে পারলে এবং নবীজির হাদিস জানতে পারলে আমরা ইসলাম সম্পর্কে ভালভাবে জানতে পারব।

হিন্দু ও ইসলাম ধর্মের মধ্যে সাদৃশ্যতা দেখার পূর্বে আমরা হিন্দু শব্দটিকে বিশ্লেষণ করি। হিন্দু শব্দের একটি ভৌগোলিক বিশ্লেষণ রয়েছে, হিন্দু শব্দটির দ্বারা তাদের বোঝায় যারা সিন্ধু নদের পাশে থাকে বা যাদের দেশের পাশ দিয়ে সিন্ধুনদ বয়ে চলেছে। ঐতিহাসিকরা বলেন, হিন্দু শব্দটি ফরাসিরা প্রথমে ব্যবহার করেছিলেন। ফরাসিরা ভারতে এসেছিল হিমালয়ের উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে।

এনসাইক্লোপিডিয়া অফ রিলিজিয়া এমিথিউস এর ৬ নং খণ্ডে বলা হয়েছে, মুসলমানেরা ভারত শাসনের পূর্বে হিন্দুদের কোন ধর্মগ্রন্থে হিন্দু শব্দটি ছিল না। হিন্দু শব্দটির ব্যবহার ১৯ শতকে ইংরেজরা প্রথম ব্যবহার করেছিলেন। ১৮৩০ সালে হিন্দুনিজম শব্দটি একজন ইংরেজ লেখক দিয়েছিলেন। হিন্দু শব্দটি সঠিক নয়, এটি হবে সনাতন ধর্ম। হিন্দুনিজম কোন শব্দ হবে না, এটি হবে বেদান্তবাদী। অর্থাৎ, বেদের অনুসারী।

একটি ভুল ধারণা আছে, ইসলামের উৎপত্তি ১৪ শতাব্দীতে হয়েছে এবং এর প্রবর্তক মহানবী (সঃ)। ইসলামের উৎপত্তি হয়েছে সৃষ্টির প্রথম থেকেই। পৃথিবীতে যখন মানুষ পা রেখেছে তখন থেকেই ইসলাম রয়েছে। মহানবী (সঃ) ইসলামের প্রবর্তক নন। তিনি হচ্ছেন ইসলামের সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী।

হিন্দুত্ব ও ইসলামের মধ্যে সাদৃশ্য হল, ইসলামে ইমান আনতে বলা হয়েছে। এই ইমান মূলত ছয়টি বিষয়ের উপর আনতে হবে। ১. স্রস্টার উপর ২. ফেরেশতাদের উপর ৩. নবী-রাসুলের উপর ৪. ইহকাল ও পরকালের উপর ৫. নিয়তির উপর ৬. কিতাবসমূহে বিশ্বাস। আসুন, এই বিশ্বাস নিয়ে আলোচনা করা যাক।

স্রস্টার উপর বিশ্বাসের ব্যাপারে কোন সাধারণ হিন্দুকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি তার স্রস্টার কথা বলবে। তিনি বলবে সূর্য দেবতা, চন্দ্র দেবতা ও অনেক দেবতার নাম বলবে। কিন্তু, একজন মুসলমান শুধু আল্লাহ্‌র কথা বলবে। হিন্দুরা সূর্যের, চন্দ্রের, আলোর ইত্যাদি বিভিন্ন জিনিসের স্রস্টা বলেন, কিন্তু, মুসলমানেরা সবকিছু স্রস্টার বলে থাকেন।

হিন্দু ও মুসলমানের বোলার মধ্যে মূল পার্থক্য হল, হিন্দুরা বলবে স্রস্টা এবং মুসলমানেরা বলবে স্রস্টার। যদি এই একটি অক্ষর “র” বাদ দিতে পারি তাহলে মুসলমান ও হিন্দু এক হতে সমস্যা হবে না।

সূত্র: ইন্টারনেট।


বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: