ঝুলে আছে সাদ হত্যা মামলা: অভিযুক্ত ৬ জন পলাতক

প্রকাশিত: ০১ এপ্রিল ২০১৬, ১১:৪৯ পিএম

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের ছাত্র ও আলোচিত ছাত্রলীগের নেতা সাদ ইবনে মমতাজ হত্যার দুই বছর পূর্ণ হলো আজ।

২০১৪ সালের ৩১ মার্চ রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশরাফুল হক হলের ২০৫ নং কক্ষে সাদকে আটকে রেখে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়। কার্পেট দিয়ে মুড়িয়ে লোহার রড, লাঠি, হকিস্টিক দিয়ে পেটানো হয় ঘন্টার পর ঘন্টা। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১লা এপ্রিল বেলা ১১টার দিকে মারা যান সাদ। এ ঘটনার পর বিক্ষোভে ফেটে পড়েন মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থীরা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ময়মনসিংহ কোতোয়ালী থানায় সাদ হত্যার মামলা করতে বাধ্য হয়।

হৃদয় বিদারক ওই ঘটনার দীর্ঘ দুই বছর পার হলেও সাদ হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের কিছুই হয়নি। বীরদর্পে তারা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সাদ হত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের করা মামলার চার্জশিটে অভিযুক্ত ১৪ জনের নাম থাকলেও তাদের বিচারের আওতায় আনা হয় নি।

হত্যাকান্ডের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে ২০১৪ সালের ৯ এপ্রিল ৬ ছাত্রকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বহিষ্কৃত ছাত্ররা হলেন মো. রেজাউল করিম রেজা, সাদের সহপাঠী সুজয় কুমার কুন্ড ও রোকনুজ্জামান, নাজমুল সাদাত, দেওয়ান মুনতাকা মুফরাদ এবং অন্তর চৌধুরী। এদের সবাইকে বিভিন্ন মেয়াদে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কার করা হয়। এদের মধ্যে রেজা আশরাফুল হক হল ইউনিটের ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন, সুজয় ও নাজমুল সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাকিরা সক্রিয়কর্মী ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের করা মামলায় পুলিশি তদন্তে ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। অভিযুক্তরা হলেন- সুজয় কুমার কুন্ডু, রোকনুজ্জামান, সাদেকুর রহমান, রোকন, রেজাউল করিম, নাজমুল সাদাত, দেওয়ান মো. মুনতাকা মুফরাত, অন্তর চৌধুরী, সুমন পারভেজ, মিজানুর রহমান, ফয়সাল ইসলাম জয়, মনোয়ারুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ এবং প্রশান্ত দে। এরা প্রত্যেকেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। এর মধ্যে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও তারা বর্তমানে জামিনে মুক্ত রয়েছে। বাকি ৬ জন পলাতক রয়েছে। এরা হলেন- ফয়সাল ইসলাম জয়, মনোয়ারুল ইসলাম, সুমন পারভেজ, মিজানুর রহমান, হাসান মাহমুদ এবং প্রশান্ত দে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, এ মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৭ জুন অনুষ্ঠিত হবে। মামলাটি দ্রুত বিচার আইনেও নেওয়া হয়েছিল। অভিযুক্তদের প্রথম আটজনকে বিভিন্ন সময়ে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। এদের সবাই এখন জামিনে আছেন। বাকি ৬ জনকে গ্রেপ্তার করতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। কিন্তু পুলিশের কাছে এরা আজও পলাতক। এই পলাতকদের সচারচর ক্যাম্পাসে ঘুরাফেরা করতে দেখা যায়।

ময়মনসিংহ কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম জানান, অভিযুক্তদের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বাকিরা পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে ।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: