সেনাবাহিনী নয়, রোহিঙ্গা হত্যাযজ্ঞের নেপথ্যে সুচি!
মিয়ানমারে মুসলিম রোহিঙ্গা জাতি নির্যাতনের শিকার হওয়া নতুন কোন ঘটনা নয়। দীর্ঘ বছর ধরে মিয়ানমার সরকার ও উগ্র মগদের নির্মমতা রোহিঙ্গারা ভালো করেই জানেন। যুগ যুগ ধরে এই অবহেলিত জাতি মিয়ানমারে বসবাস করলেও এখন পর্যন্ত নাগরিত্ব পায়নি তারা।
মিয়ানমারের রোষানলে পড়ে এই অসহায় জাতি ধর্মীয় রীতিনীতি ঠিক মতো পালন করতে পারে না। এই জাতির জন্য মিয়ানমারে নেই কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।বলা যেতে পারে বর্তমানে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে যেভাবে রয়েছে ঠিক সেই ভাবেই মিয়ানমারেও বাস করতো তারা।
সম্প্রতি গত ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কয়েকটি চৌকিতে হামালা হয়েছে। এরই সূত্র ধরে কোন প্রকার বিচার বিশ্লেষন ছাড়াই মিয়ানমার সেনাবাহিনী এই অসহায় রোহিঙ্গা জাতি নিধনে নেমে পড়েছে।একটি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক দেশ এটা কিভাবে করতে পারে? যদি মিয়ানমার মনে করে যে হ্যাঁ রোহিঙ্গারাই সেনাবাহিনীর চৌকিতে হামলা করেছে। তাহলে নিশ্চই সেটা অপরাধ।মিয়ানমারের উচিত ছিল প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে তাদের বিচার করা। তবে এখন যেটা করছে সেটা মোটেও ঠিক নয়।
মিয়ানমার প্রকৃত অপরাধীদের না ধরে পুরো একটি জাতিকে এভাবে শেষ করতে পারে না। বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রই সুচির পক্ষে,অনেকে আবার বিপক্ষে। আসলে আমার মনে হয় এখানে পক্ষে বিপক্ষের কিছু নেই। সবার আগে ভাবতে হবে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি মানুষ। তারা পৃথীবির বাইরে থেকে হঠাৎ করে আসে নি। তাদের জন্য একটি জায়গা দরকার। আমার মনে হয় সকলের উচিত তারা যেখানে যুগ যুগ ধরে বসবাস করে আসছে সেখানেই তাদের সকল মৌলিক অধিকার দিয়ে বসবাস করার সুযোগ করে দেয়া। আশা করি সারাবিশ্ব এই অসহায় জাতির জন্য এটা করবেন।
বর্তমানে মিয়ানমারে জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে মসজিদ-মাদ্রাসা। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে মানুষ। নদীতে ডুবিয়ে দেয়া হচ্ছে রোহিঙ্গাবাহী নৌকা।চোখের সামনেই ধর্ষণ করা হচ্ছে স্ত্রী, সন্তান, বোন ও মাকে।গুলি করা হচ্ছে যুবকসহ সবাইকে। কুপিয়ে হত্যা করা হচ্ছে অনেককে। বিশ্ববাসীর চেষ্টায় এটা এখন বন্ধ হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।
তবে একটি স্থানে আমার মতো অনেকেরই প্রশ্ন? নরওয়ের নোবেল কমিটি ১৯৯১ সালে অং সান সুচিকে গণতন্ত্র,মানবাধিকার ও তার অহিংস সংগ্রাম এবং নিপীড়নের বিরুদ্ধে একজন আদর্শ ব্যক্তি হিসেবে তাকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দিয়েছেন।
তাছাড়া সুচির বাবাও একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন তার বাবা অং সান আধুনিক বর্মী সেনাবাহিনী গঠন করেন এবং আলাপ-আলোচনা করে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের থেকে বার্মাকে স্বাধীন করেন। সুচির এতো গুণ থাকা সত্যেও তিনি কি করে একটা জাতিকে এভাবে নিধন করছে?
একজন গণমাধ্যমকর্মী হিসিবে আমি নিজের চোখে দেখে এসেছি উখিয়ায় কিভাবে বেঁচে আছে নারী-শিশুসহ অন্যান্য রোহিঙ্গারা। সেখানে কথা হয়েছে অনেক রোহিঙ্গাদের সঙ্গে। তাদের কাছ থেকে শুনেছি ভয়ঙ্কর সব বর্ণনা। যেহেতু সেবস বর্ণনা ইতোমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে তাই সে বিষয়ে আমি বেশি কিছু বিশ্লেষন করলাম না।
তবে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আমি একটা বিষয়ের সঙ্গে সবার কথার মিল পেয়েছি। সেই কারণেই হয়তো আমার আজকের এই লেখা। কয়েকজন মোটামুটি শিক্ষিত এবং বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারেন এমন রোহিঙ্গা শরণার্থী বলছে, ‘এই হত্যাযজ্ঞের মূলে রয়েছে সুচি নিজেই। একটা গণতান্ত্রিক দেশের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ছাড়া সেনাবাহিনী এটা কখনো করতে পারে না। এই হত্যাযজ্ঞে সুচির মদদ রয়েছে। যদি তার মদদ না থাকে তাহলে সে সেনাবাহিনীকে থামায় না কেন? প্রয়োজনে সে বিশ্ববাসীর সাহয্য নিতে পারতো। এ সবের পিছনে সুচিই রয়েছে।ওকে (সুচি) কিভাবে বিশ্ব শান্তিতে নোবেল দিল। ওর (সুচি) নোবেল কেড়ে নেয়া হোক।’
লেখক: সাংবাদিক।
খোলা কলামে প্রকাশিত সব লেখা একান্তই লেখকের নিজস্ব মতামত। এর সাথে পত্রিকার কোন সম্পর্ক নেই।
বিডি২৪লাইভ/এমআর
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: