এক কারাগারের একমাত্র বন্দি!
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে আদালত গতকাল বৃহস্পতিবার পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। রায়ের পর পরই খালেদা জিয়াকে র্যাব-পুলিশের বিশেষ নিরাপত্তায় ঢাকা মেট্রো-গ ১১-৭০৪৪ নম্বরের একটি নিসান ব্র্যান্ডের গাড়িতে করে আদালতের পাশে নাজিমউদ্দিন রোডের লালদালানখ্যাত ২২৮ বছরের পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। দুই শতাধিক বছরের পুরনো সাবেক এ কারাগার খালি করা হয় ২০১৬ সালের ২৯ জুলাই। ওইদিন সাড়ে ছয় হাজার বন্দিকে কেরানীগঞ্জে নবনির্মিত কারাগারে স্থানান্তর করা হলেও এখন খালি হওয়া এ বিশাল কারাগারে একমাত্র বন্দি খালেদা জিয়াই।
জানা গেছে, খালেদা জিয়াকে রাখা হয়েছে কারাগারের মূল ফটকের ভেতরে পুরনো অফিস ভবনে। এক সময় ওই কারাগারের সিনিয়র জেল সুপারের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহূত হতো ঐ কক্ষ। বর্তমানে কক্ষে একটি খাট, টেবিল, চেয়ার, টিভি, ফ্রিজ ও দুটি ফ্যান রয়েছে। কারাগারে নিয়ে যাওয়ার পর কারা রেজিস্ট্রারে খালেদা জিয়ার নাম এন্ট্রি করা হয়। তাকে কয়েদি নম্বর ১ দেয়া হয়। কারাগারে প্রথম রাতে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী ভাত, মাছ ও সবজি খেয়েছেন বলে কারা সূত্রে জানা গেছে।
এছাড়া রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার পাশাপাশি এবাদত-বন্দেগি করেন তিনি। এরপর ভোরে ফজর নামাজ আদায় করে সকালে কারা কর্তৃপক্ষের দেয়া রুটি-সবজি দিয়ে নাস্তা করেছেন। সকালে তাকে একটি জাতীয় দৈনিক পড়তে দেয়া হয়েছে বলেও জানা যায়।
জানা গেছে, কারা কর্তৃপক্ষের আপাতত জেল সুপারের কক্ষে তাকে রাখা হলেও তার জন্য নারী সেলও প্রস্তুত রয়েছে। এরইমধ্যে ওই সেল ঘষামাজা করা হয়েছে। সেন্সরে সাত দিনে একবার চিঠি লিখতে পারবেন। স্বজনরা মাসে একবার প্রথম শ্রেণির কয়েদিদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন। তখন তারা শুকনো খাবার ও ফল নিতে পারবেন।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে একজন চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া তাকে সেবা-শুশ্রূষা করতে একজন সেবিকা নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ওই সেবিকা সার্বক্ষণিক খালেদা জিয়ার সঙ্গে থাকবেন। অন্যদিকে, আদালতের অনুমতি নিয়ে কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে রয়েছেন তার ব্যক্তিগত পরিচারিকা ফাতেমা।
এদিকে, খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখার পর ওই এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কারারক্ষী, পুলিশ ও র্যাব ছাড়াও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন ওই এলাকায় দায়িত্ব পালন করছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কারা অধিদপ্তরে ঊর্ধ্বতন কারা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা বৈঠকও করেছেন।
বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, 'তার (খালেদা জিয়া) বয়স, দুইবার তিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, সামাজিক অবস্থার চিন্তা করে ঢাকার পুরাতন যে কেন্দ্রীয় কারাগারটি ছিল সেখানেই তাকে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তার সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে, তিনি কয়েকবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং একটা বড় দলের তিনি চেয়ারপার্সন, কাজেই যা যা প্রয়োজন জেলকোড অনুযায়ী তা-তাই পাবেন।'
কারা অধিদপ্তরের ডিআইজি (ঢাকা বিভাগ) তৌহিদুল ইসলাম গনমাধ্যমকে বলেন, খালেদা জিয়াকে পুরনো কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের নিচ তলায় জেল সুপারের কক্ষে আপাতত রাখা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে স্থানান্তর করা হতে পারে। একজন সাজাপ্রাপ্ত বন্দি হিসেবে জেল কোড ও আইন অনুযায়ী খালেদা জিয়া সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবেন। সে বিষয়ে জেল কর্তৃপক্ষ সতর্ক রয়েছে।
বিডি২৪লাইভ/এসএইচআর/এসএস
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: