ঢাকায় আসছেন মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ০৯:২৩ পিএম

১২ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে ঢাকায় আসছেন মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লেফটেনেন্ট জেনারেল খ শোয়ে। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) তিনি বাংলাদেশে আসবেন। এরপর শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সাথে তার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। 

দুই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন, ইয়াবার মত মাদকদ্রব্য চোরাচালান বন্ধ ও সীমান্তে দুই দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতার বিষয়টি প্রাধান্য পাবে।

অন্যদিকে মিয়ানমার ইতোপূর্বে দেয়া তালিকা অনুযায়ী আরাকান সেলভেশন আর্মি বা আরসা’র সদস্যদের বাংলাদেশ থেকে আটক ও হস্তান্তরের বিষয়টি উত্থাপন করতে পারে।

প্রত্যাবাসনের আলোচনা শুরু হলেও এখনো মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের আসা বন্ধ হয়নি। এ বিষয়ে বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান বলেন, আগে তো হাজারে হাজারে আসতো, এখন মাঝে মাঝে দুই-একশ’ আসে। সেটাও আশা করি বন্ধ হয়ে যাবে।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান মিয়ানমারে গিয়েছিলেন এবং মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় এসেছেন। এমতাবস্থায় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া কোন পর্যায়ে রয়েছে জানতে চাইলে তিনি আসাদুজ্জামান খান বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ইস্যুতে কথা বলতে আমি মিয়ানমারে গিয়েছিলাম। সেখানে চুক্তি ছাড়াও ১০টি পয়েন্টের ওপর কথা হয়েছিল। সে আলোচনা এখনো চলছে। আবারও কথা হবে।

মিয়ানমারের রাজধানী নেইপিডোতে অনুষ্ঠিত প্রত্যাবাসন বিষয়ক সর্বশেষ যৌথ কারিগরি কমিটির (জেডাব্লিউজি) বৈঠকে রোহিঙ্গাদের পরিচয় যাচাই-বাছাই ও প্রত্যাবাসনের জন্য দুটি পৃথক করিগরী কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। এ বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতি সপ্তাহে ১৫ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু মিয়ানমার তাদের সাপ্তাহিক ছুটির দিন শনিবার ও রোববার ছাড়া প্রতিদিন ৩০০ করে সপ্তাহে সর্বোচ্চ দেড় হাজার রোহিঙ্গা ফেরত নিতে সম্মত হয়েছে।

ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট অনুযায়ী, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ পাঁচটি ট্রানজিট ক্যাম্প স্থাপন করবে। রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করার জন্য মিয়ানমার প্রাথমিকভাবে দুটি অভ্যর্থনা কেন্দ্র নির্মাণ করবে। উত্তর রাখাইনে হ্লা পো খাউং এলাকায় রোহিঙ্গাদের জন্য অস্থায়ী শিবির গড়ে তোলা হবে। প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে সীমান্তের জিরো লাইনে অবস্থিত রোহিঙ্গাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

গত ২৩ নভেম্বর মিয়ানমারের রাজধানী নেইপিডোতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সইয়ের মাধ্যমে রূপরেখা প্রণয়ন করা হয়েছে। এই রূপরেখা বাস্তবায়নের জন্য ১৯ ডিসেম্বর ঢাকায় দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিবদের নেতৃত্বে জেডাব্লিউজি গঠন করা হয়। আর মাঠ পর্যায়ে সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নে ১৬ জানুয়ারি নেইপিডোতে জেডাব্লিউজি’র প্রথম বৈঠকে ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট সই করা হয়েছে।

এমওইউ অনুযায়ী দুই মাসের মধ্যে, অর্থাৎ গত ২৩ জানুয়ারি থেকেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উভয় পক্ষের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির অভাবে তা শুরু করা যায়নি। ঢাকায় অনুষ্ঠেয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে প্রস্তুতির বিষয়টি আলোচনায় আসবে।

অন্যদিকে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে গত নভেম্বরে আরসা’র কথিত এক হাজার ৩০০ সদস্যের একটি তালিকা বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। এ সময় তালিকায় উল্লেখিত ব্যক্তিদের আটক করে মিয়ানমারের কাছে তুলে দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে এ সম্পর্কিত অগ্রগতি জানতে চাইতে পারে মিয়ানমার।

 

বিডি২৪লাইভ/এমআই

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: