উখিয়ায় ঘরে ঘরে ভাইরাস জ্বরের প্রাদুর্ভাব

প্রকাশিত: ২৩ মে ২০১৮, ১১:০৬ পিএম

উখিয়ায় সর্বত্র ভাইরাস জ্বরের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনই নতুন করে এই জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে শত শত মানুষ। শরীরে তীব্র ব্যাথা আর কাঁপুনিতে আতঙ্কিত রোগীরা ছুটছে বিভিন্ন হাসপাতালে। 

চিকিৎসকেরা বলছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে জনস্বাস্থ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার অংশ হিসেবে ভাইরাস জ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। উখিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র তামজিদ কবির গত কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছেন। জ্বরের মাত্রা ১০৪ ডিগ্রি। একই সঙ্গে ডায়রিয়া, দুই পায়ের পাতা ও মুখ ফুলে যাওয়া, বমি হওয়া এবং কিছুই খেতে না পারার কারণে ভীষণ দুর্বল হয়ে পড়েছেন তিনি। 

চিকিৎসকের পরামর্শে প্যারাসিটামল ট্যাবলেট ও এজিথ্রোমাইসিন এন্টিবায়োটিক খেয়ে একটু সুস্থ হয়ে উঠলেও শারীরিক দুর্বলতা কিছুতেই কাটছে না। এর আগে তার বড় ভাই আবুল কাশেম নুর জাহান চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র তাহমিদ কবিরও জ্বরে আক্রান্ত হয়। 

চিকিৎসকরা জানান, উখিয়াতে এবার ঘরে ঘরে কেউ না কেউ জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে শুধু উখিয়ায় নয়, রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পজুড়েই এ বছর জ্বরের প্রকোপ বেশি। কয়েকজন চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত এক মাসে তাদের কাছে যত রোগী এসেছেন, তার ৯০ শতাংশ জ্বরে আক্রান্ত।

মূলত আবহাওয়ার পরিবর্তন, তীব্র তাপদাহ, বাতাসে আদ্রতার পরিমাণ বেশি হওয়ায় মানুষ জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। বেশির ভাগ রোগীর জ্বরের স্থায়ীত্ব সর্বোচ্চ সাতদিনের মতো হলেও হাত-পায়ে ব্যাথা ১৪ দিন থেকে ২১ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হচ্ছে। কারও কারও ব্যাথা আরও বেশি দিন থাকছে। কুতুপালং এলাকার বাসিন্দা রাশিদা খাতুন প্রথমে নিজে এবং পরে তার বড় ছেলে ও শিশুকন্যা জ্বরে আক্রান্ত হন। 

রাশিদা খাতুন বলেন, জ্বরে কিছুই খেতে পারতাম না। যদিও চিকিৎসক বেশি করে পানি খেতে বলেছিলেন। বেশি পানি খাওয়ার কিছুক্ষণ পর পর বমি হতো। মেয়েটাও জ্বরে ভুগছে। তার কষ্ট দেখে সহ্য করতে পারছি না। ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হয়ে উখিয়া উপজেলা স্থ্যাস্থ কমপেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে প্রতিদিন রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসছেন। 

আবহাওয়ার পরিবর্তনকে দায়ী করে ডাক্তার রবিউল বলেন, এবার তীব্র তাপদাহের কারণে বাতাসের আদ্রতা ছিল অত্যন্ত বেশি। তীব্র গরমের সঙ্গে ছিল মাঝে মাঝে হালকা বৃষ্টি। আবহাওয়ার এই তারতম্যই জনস্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলেছে। ফলে মানুষ ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। 

এ সময় জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের প্রচুর পরিমাণ পানি, স্যালাইন, ডাবের পানি এবং জ্বরের জন্য কেবলমাত্র প্যারাসিটামল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে ডাক্তার ইউনুছ বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো আ্যান্টিবায়োটিক না খাওয়ায় ভালো। আর নিজে নিজে কোনো ওষুধই খাওয়া যাবে না। হাত-পায়ের জয়েন্টের ব্যাথার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেতে হবে।

বিডি২৪লাইভ/এমকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: