পাহাড়ে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে ‘চাইল্ড স্পন্সরশীপ প্রোগ্রাম’

প্রকাশিত: ২০ আগষ্ট ২০১৮, ০৭:৫৭ পিএম

বান্দরবানের লামায় ও পার্শ্ববর্তী বমুবিলছড়ি ইউনিয়নে সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে “বিলছড়ি চাইল্ড স্পন্সরশীপ প্রোগ্রাম- বিডি ৫০২”। কম্প্যাশন ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এর অর্থায়নে কর্মসূচীটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। ১৪ জন স্টাফ নিয়ে বিলছড়ি হেব্রোন মিশনে ২১৪ জন শিক্ষার্থীকে আবাসন, থাকা-খাওয়া ও শিক্ষা সম্পর্কিত যাবতীয় সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানটি।

চাইল্ড স্পন্সরশীপ প্রোগ্রাম এর অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সাল থেকে তারা এই কার্যক্রম শুরু করে। প্রাথমিক জরিপের মাধ্যমে দূর্গম পাহাড়ি এলাকায় অসহায় ও দরিদ্র শিশুদের খুঁজে যাচাই বাচাই করে সুবিধাভোগী শিশুদের তালিকা সম্পন্ন করা হয়। এইকাজে সহায়তা ও পরামর্শ প্রদান করেন সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউপি মেম্বার ও চেয়ারম্যান।

নির্বাচিত শিশুদের শিক্ষা সম্পর্কিত যাবতীয় সহায়তা করা হয়। এদের মধ্যে যারা এতিম ও অসহায় তাদের আবাসিক সুবিধা প্রদান করা হয়। শিশুদের যাবতীয় সহায়তা করতে প্রকল্পে বেতনভুক্ত ১৪ কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছে। শিক্ষার্থীরা লামা উপজেলা বিভিন্ন প্রাথমিক-মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজে পড়ালেখা করে।

প্রকল্পের অধিনে শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক ও নৈতিক শিক্ষা প্রদান করা হয়। এছাড়া শিক্ষা সরঞ্জাম, ব্যবহারের পোশাক, প্রসাধনী, খাবার সরবরাহ, স্বাস্থ্য পরিচর্য়া, সংস্কৃতি প্রশিক্ষণ, জাতীয় দিবস পালন, স্বনির্ভর হতে কর্মমুখী প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। অতিদরিদ্র শিশুদের পিতা-মাতাকে আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল হতে সাহায্য করা হয়ে থাকে।

প্রকল্পের সুবিধাভোগী শিক্ষার্থী মৃদুতা ত্রিপুরা (৫ম শ্রেণী), দীপংকর দেবনাথ (দ্বাদশ শ্রেণী), রনি নাথ (দ্বাদশ শ্রেণী) ও সোনিয়া আক্তার (দশম শ্রেণী) বলেন, আমরা ‘বিলছড়ি চাইল্ড স্পন্সরশীপ প্রোগ্রাম’ এর সহায়তা না পেলে আমাদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যেত। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সকল বিষয়ে এই প্রোগ্রাম হতে সহায়তা করা হয়। আমাদের অনেকের বাড়ি দূর্গম এলাকায়। আমরা এখান থেকে বিদ্যালয়ে যাই।

বিলছড়ি চাইল্ড স্পন্সরশীপ প্রোগ্রাম এর প্রজেক্ট ম্যানাজার মি. যোনা ত্রিপুরা বলেন, আমাদের এই প্রোগ্রামে অধিনে ২১৪ জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে। শিশুরা স্বর্গের ফুল। শিশুদের নিয়ে কাজ করার মজাটা আলাদা। প্রতিটি শিশু একদিন স্বনির্ভর হয়ে নিজের ও পরিবার-সমাজের দায়িত্ব নিবে। শিক্ষা, খেলাধূলা, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তাদের পদচারণা আমাদের অনেক মূখ উজ্জ্বল করে। এমন একটি সুন্দর কার্যক্রম বাস্তবায়নে আমরা সকলে কম্প্যাশন ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এর কাছে কৃতজ্ঞ।

বমু বিলছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতলব বলেন, বিলছড়ি চাইল্ড স্পন্সরশীপ প্রোগ্রাম এর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আমি অংশগ্রহণ করেছি। তাদের কার্যক্রম অনেক সুন্দর ও গোছানো। আমরা তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করি।

লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ জান্নাত রুমি বলেন, বিভিন্ন জাতীয় দিবসে তাদের অংশ গ্রহণ নজর কাড়ার মত। বিলছড়ি চাইল্ড স্পন্সরশীপ প্রোগ্রাম এর মধ্য দিয়ে অনেক শিশুরা শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে জেনে আনন্দিত হলাম। তিনি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যাবতীয় সহায়তার আশ্বাস দেন।

বিডি২৪লাইভ/আরআই

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: