‘মাত্র ৩ জন আমাকে ধর্ষণ করেছে, আমি ভাগ্যবান’!
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে একের পর এক নির্মম অত্যাচারের কথা উঠে এসেছে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে। কীভাবে বর্বোরচিত হত্যাকাণ্ড, গণধর্ষণ, বাড়ি পোড়ানোর মত কাজ সবই কিছু এসেছে এই প্রতিবেদনে।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, তাদের কাছে তথ্য-প্রমাণ রয়েছে রাখাইনের অন্তত ১০টি গ্রামে ঢুকে সেনারা প্রকাশ্যে ও পরিবারের সদস্যদের সামনে ৪০ নারী ও কিশোরীকে গণধর্ষণ করেছে। অবস্থাটা এতটাই ভয়ঙ্কর যে, ধর্ষিত এক রোহিঙ্গা নারী তদন্তকারীদের কাছে বলেন, ‘আমি ভাগ্যবান, মাত্র তিনজন আমাকে ধর্ষণ করেছে!’
এদিকে, রাখাইনে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে জাতিসংঘ প্রতিবেদন, ফেইসবুকে সেনাপ্রধানকে নিষিদ্ধ করাসহ সবশেষ সেনাবাহিনীর মিথ্যাচারমূলক বই প্রকাশ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে মিয়ানমার সরকার। এমনকি খোদ ইয়াঙ্গুনবাসীও এর নিন্দা জানিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং গণহত্যার বিষয়টি ধামাচাপা দেয়া ও দায় এড়াতেই মিয়ানমার সেনাবাহিনী একের পর এক মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছে বলে মনে করছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার ছবিসহ সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনার ছবি বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ‘ট্রু নিউজ’ নামে যে বই প্রকাশ করেছে তা এখন দেশটির সবার হাতে হাতে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মিথ্যা তথ্য সংবলিত বই পড়েও অনেকেই তা বিশ্বাস করে নিয়েছেন।
একজন বলেন, ‘এ বইটা আমাদের দেশের জন্য অনেক উপকারে আসবে। বিদেশের মানুষ জানে না আসলে এখানে কী ঘটছে। এ বইয়ের মাধ্যমে এখন সবাই সত্যটা জানতে পারবে।’
মিথ্যা তথ্য দিয়ে মিয়ানমারের অনেক নাগরিককে বোকা বানালেও বিশ্ববাসীর কাছে নাইপিদোর মুখোশ উন্মোচন করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধন, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং গণহত্যার বিষয়টি ধামাচাপা দিতেই মিয়ানমার সেনাবাহিনী মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছে বলে মনে করছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এশিয়া বিষয়ক উপপরিচালক ফিল রবার্টসন বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মেলানো যায় এমন ছবিগুলো যেখান সেখান থেকে সংগ্রহ করে, তারা বইটিতে ব্যবহার করেছে। গুজব ছড়িয়ে সবাইকে বিশ্বাস করানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে। আমি মনে করি, রোহিঙ্গা নির্যাতন ও গণহত্যার দায় এড়াতে তারা এই বই প্রকাশ করেছে।’
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পাশাপাশি, রোহিঙ্গা ইস্যুতে নীরব থাকায় বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর সমালোচনা করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। একইসঙ্গে, রোহিঙ্গাদের নিয়ে জাতিসংঘ প্রকাশিত প্রতিবেদনে উঠে আসা তথ্যের ভিত্তিতে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানায় সংস্থাটি।
রোহিঙ্গাদের নিয়ে মিথ্যাচারের বিষয়ে মিয়ানমার সরকার এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালেও রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের ব্যাপক ক্ষোভের মুখে পড়েছে দেশটির সরকার। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্ববাসীর ক্ষোভ হজম করতে তারা বেশ হিমশিম খাচ্ছে বলে শুক্রবার খবর প্রকাশ করে টাইমস অফ ইন্ডিয়া।
রাখাইনে নির্যাতনের বিষয়ে জাতিসংঘ প্রতিবেদন, ফেসবুকে সেনাপ্রধানসহ ২০ প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ করা ছাড়াও বেশ কিছু ইস্যুতে মিয়ানমার সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়সহ খোদ ইয়াংগুনবাসীর সমালোচনার মুখোমুখি হয় বলে জানায় গণমাধ্যমটি।
বিডি২৪লাইভ/ওয়াইএ
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: