প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান, যুবলীগ নেতার ছেলের ছুরিকাঘাত!

প্রকাশিত: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৯:২৯ এএম

বগুড়ায় বিউটশিয়ান কাম কলেজছাত্রীকে তুলে নিয়ে ছুরিকাঘাত মামলার প্রধান আসামি শহর যুবলীগ সভাপতি মাহফুজুল আলম জয়ের ছেলে কাওসার আলম অভি (২২) কে পুলিশের নিকট সোপর্দ করা হয়েছে। সোমবার (৩ সেপ্টেম্বর) পুলিশ তাকে আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে ভারপ্রাপ্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট শরিফুল ইসলাম তার দুই দিনের রিমান্ড মন্জুর করেন।

এর আগে অভির মা নাসরিন আলম গত রবিবার রাতে তাকে সদর থানা পুলিশে সোপর্দ করেন। এ ঘটনা তুফান কাণ্ডের এক বছর পর আবারও ব্যাপক সমালোচনার মুখে ফেলেছে সরকারি দলকে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়া সদর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর শেখ ফরিদ জানান, তাদের অভিযানের মুখে অভিকে থানায় সোপর্দ করেছে তার পরিবার। বগুড়া শহর যুবলীগের সভাপতি মাহফুজুল আলম জয়ের স্ত্রী নাসরিন আলম রবিবার রাতে সদর থানায় এসে তার ছেলে কাওসার অভিকে সোপর্দ করেন।

জানা গেছে, বগুড়া শহরতলির পালশা বিদ্যুৎনগর এলাকার জাহিদুর রহমানের মেয়ে বগুড়া সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষে পড়ে। লেখাপড়ার পাশাপাশি তিনি শহরের বাদুড়তলায় রূপছাড়া বিউটি পার্লারে বিউটিশিয়ানের কাজ শিখছিলেন। বাড়ি থেকে কলেজ ও পার্লারে যাওয়ার পথে অভি তাকে উত্ত্যক্ত ও প্রেমের প্রস্তাব দিত। এতে সাড়া না দেওয়ায় তার ওপর ক্ষিপ্ত হয় অভি। গত ৩০ আগস্ট বৃহস্পতিবার বিকালে অভি তার তিন সঙ্গীকে নিয়ে ওই বিউটি পার্লারে গিয়ে ছাত্রীকে তুলে নিয়ে যায়। পরে কাটনারপাড়ার একটি বাড়িতে নিয়ে অভি আবারও প্রেমের প্রস্তাব দেয়। তখনও ওই ছাত্রী প্রত্যাখ্যান করলে অভি ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে মারধর করার পর উরু ও হাতে ছুরিকাঘাত করে। এরপর এ ঘটনা ফাঁস না করার জন্য হুমকি দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়।

পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নামাজগড় এলাকার একটি ক্লিনিকে ভর্তি করেন। পরে সেখান থেকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অভির মা ও অন্যরা হাসপাতালে গিয়ে মীমাংসার প্রস্তাব দিলে ভয়ে অভিভাবকরা ৩১ আগস্ট ছাড়পত্র ছাড়াই মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। এরপর ১ সেপ্টেম্বর ছাত্রীর বাবা জাহিদুর রহমান সদর থানায় অভি ও তার তিন সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা করেন।

এরপর পুলিশ অভিকে গ্রেফতারে তৎপর হয়। এরপর পুলিশের চাপে বাধ্য হয়ে রবিবার রাতে মা নাসরিন আলম তাকে পুলিশে সোপর্দ করেন।

এদিকে, আসামির পরিবার রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় ঝামেলা এড়াতে ছাত্রীর পরিবার মামলাটি প্রত্যাহার করতে পারেন বলে জানা গেছে। অপরদিকে, অভির উচ্ছৃংখল আচরণে তার পরিবারসহ এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ বলে জানা গেছে। কিন্তু, প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পেতো না।

উল্লেখ্য, গত বছর শ্রমিক লীগ নেতা তুফান সরকার ও তার সহযোগিদের হাতে কিশোরী নির্যাতন ও ধর্ষণের পর বগুড়া সহ দেশে ও বিদেশে নিন্দার ঝড় ওঠে। সমালোচনার মুখে তুফানকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়। সেইসঙ্গে তার বড় ভাই যুবলীগ নেতা মতিন সরকারকেও দল থেকে বহিস্কার করা হয়। বর্তমানে তুফান সরকার কারাগারে আটক রয়েছে এবং ওই মামলা বগুড়ার আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এদিকে, কাওসার আলম অভির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এলাকাবাসীর উদ্যোগে সোমবার সকাল ১১টায় শহরের তিনমাথা রেলগেট এলাকায় মানববন্ধন করে।

বিডি২৪লাইভ/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: