নিথর কিশোরীর পাশে রক্তাক্ত যুবক, রহস্যের জট খুলেনি

প্রকাশিত: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৫:৫৬ পিএম

হঠাৎই এলাকাবাসীর চোখে ধরা পড়ে একটি দৃশ্য। আর তাতেই থমকে গোটা পরিবেশ। নির্জন রেললাইনের পাশের ঝোপের ভেতর পড়ে আছে এক কিশোরী, তাকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে এক যুবক। কিশোরীটির পরনে স্কুল ড্রেস। তাতে ছোপ ছোপ রক্ত। যুবকটিও ছিল রক্তাক্ত।

দিশেহারা এলাকাবাসী সাথে সাথেই খবর দেয় থানায়। পুলিশ এসে যখন তাদের উদ্ধার করে, ততক্ষণে মেয়েটির হৃদস্পন্দন থেমে গেছে। তীব্র রক্তক্ষরণের পর মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত টিকেছিল ছেলেটি।

শনিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এই হৃদয়বিদার ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার দক্ষিণ ভূর্ষি ইউনিয়নের বেলতল রেললাইনের পাশে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই শিলব্রত বড়ুয়া জানান, পটিয়া থেকে রক্তাক্ত এক যুবককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার শরীরে বেশ কয়েকটি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়া স্কুলছাত্রী রিমার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

পটিয়া থানার এসআই আলমগীর হোসেন বলেন, যুবকের দেহ নড়াছাড়ার সময় গোঙানীর শব্দ কানে আসে। তার পেটে ছুরির আঘাত রয়েছে। তবে স্কুলছাত্রীর পেটে একাধিক ছুরিকাঘাত। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বিষয়টি প্রেমঘটিত। তবে এর পেছনে অন্য কোনা হাত আছে কিনা তা জানতে ছেলেটি সুস্থ হয়ে ওঠা পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হবে।

এরই মধ্যে পুলিশ তাদের পরিচয় জানতে পেরেছে জানিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, মৃত কিশোরীর নাম রিমা আকতার (১৩)। সে উপজেলার পূর্ব হাইদগাঁও গ্রামের মাহদাম পাড়ার মঞ্জুরুল আলমের কন্যা। সে হাইদগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী বলে জানা গেছে। আর মারাত্মক আহত যুবকের নাম নজরুল ইসলাম মাসুদ (২২)। সে পৌর এলাকার উত্তর গোবিন্দারখীল গ্রামের (ফইল্ল্যাতলী) মৃত আবুল কালামের পুত্র।

গণমাধ্যমকে ওই চিকিৎসক জানান, মেয়েটির পেটে একাধিক ছুড়িকাঘাত রয়েছে। ছেলেটিরও ক্ষতবিক্ষত, তার গলার একাংশে ধারালো ছুড়ির আঘাত করা রয়েছে। অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে শ্বাসনালী। তাকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে।

পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ নেয়ামত উল্লাহ বলেন, বেলতল রেললাইনের পাশে নিহত স্কুলছাত্রীকে জড়িয়ে আহত যুবককে পড়ে থাকতে দেখে উৎসুক জনতার ভিড় জমে। পরে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে। প্রথমে মনে করা হয়েছিল দুজনই মারা গেছে। পরে গোঙানির শব্দ পেয়ে যুবকের বেঁচে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। পুলিশ আহত যুবককে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে।

ওসি আরও জানান, আহত নজরুল ইসলাম মাসুদ চমেক হাসপাতালের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে। তার গলায়ও ধারালো ছুরির আঘাত থাকায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

বিডি২৪লাইভ/এইচকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: