বিশ্বের সর্ববৃহৎ ‘ওয়াই সেতু’ আগামীকাল উদ্বোধন 

প্রকাশিত: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৬:৩১ পিএম

কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে তিতাস নদীর ওপর ১২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত তিতাস নদীর উপর নির্মিত ‘ওয়াই সেতুর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি সেতুটির উদ্বোধন করবেন। এর মধ্য দিয়ে সবার জন্য খুলে দেয়া হবে সেতুটি। বিষয়টি জানালেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফজলে রাব্বি।

উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে নাভানা বিল্ডার্সের আওতায় ২০১১ সালের ১৬ জুন সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। নির্মিত সেতুটির দৈর্ঘ্য ৭৭১ দশমিক ২০ মিটার এবং প্রস্থ ৮ দশমিক ১০ মিটার। দৃষ্টিনন্দন এ সেতু নির্মাণে খরচ ধরা হয়েছে ৮০ কোটি টাকা।

এছাড়া সংযোগ সড়ক নির্মাণে ব্যয় হবে ১২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। আর জমি অধিগ্রহণ খাতে খরচ সাড়ে ৯ কোটি টাকা। সেতুটি নির্মাণের ফলে এলাকার যোগাযোগ ও বিনোদনের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। সেতুতে পাইল হয়েছে ৩০২টি। তিতাস নদীর ওপর এ সেতুর নির্মাণ শেষ হলে এটি চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়কের বিকল্প পথ হিসেবে ব্যবহার হবে। সেতুটি নির্মাণের ফলে কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষ স্বল্পসময়ে ঢাকায় যাতায়াত করতে পারবেন। অন্যদিকে লাঘব হবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর, নবীনগর ও কুমিল্লার মুরাদনগর, তিতাস ও হোমনার লাখ লাখ মানুষের দীর্ঘদিনের কষ্ট। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগে কমে আসবে দুই-তিন ঘণ্টা সময়।

&dquote;&dquote;

স্বপ্নের এ সেতু চালু হলে পাল্টে যাবে চারদিকে নদীবেষ্টিত বাঞ্ছারামপুরের দৃশ্য। নদী পাড়ি দেয়ার অপেক্ষার প্রহর আর গুনতে হবে না এখানকার সাধারণ মানুষকে। অল্পসময়ে সারাদেশের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ এখন সময়ের ব্যাপার। এশিয়ার বৃহত্তম এ ওয়াই সেতুতে বদলে যাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সবচেয়ে সম্ভাবনাময় বাঞ্ছারামপুরের অর্থনীতির চাকা। সেতুটি ওয়াই আকৃতির হওয়ায় এর নামকরণ করা হয়েছে ‘ওয়াই সেতু’।

ত্রি-মোহনার দুই অংশে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ভুরভুরিয়া ও চরলহনিয়া, অপরটি পশ্চিম অংশে কুমিল্লার রামকৃষ্ণপুর বাজার এবং মুরাদনগর উপজেলা স্পর্শ করেছে। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের লেভেলিংয়ের কাজ। ধোয়ামোছা, ছোটখাটো ত্রুটিবিচ্যুতি সারাই ও রঙের কাজ। সেতুটি চালু হলে দুই জেলার তিন উপজেলার মধ্যে রচিত হবে সেতুবন্ধন। ফলে এ অঞ্চলের অর্থনীতির চাকা পাল্টে যাওয়া সময়ের ব্যাপার।

তবে এলাকাবাসী ও সেতু সংশ্লিষ্টদের দাবি, সেতুটি বিশ্বের বৃহত্তম ওয়াই সেতু। তবে কেউ কেউ বলছেন, বিশ্বের নয়, এশিয়ার সবর্বৃহৎ ওয়াই সেতু এটি। মূল সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে বছর খানেক আগে। সেতুর সংযোগ সড়কের কাজ শেষ হয়ে এখন প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের অপেক্ষায় বলে জানালেন বাঞ্ছারামপুর উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর আলম। বাঞ্ছারামপুর উপজেলার এলজিইডির প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, সেতুটি নির্মাণের ফলে ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যোগাযোগ সহজ হবে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম-ঢাকার বিকল্প পথ হিসেবেও ব্যবহার হবে সেতুটি।

সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) তাজুল ইসলাম বলেন, সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন আজ বাস্তবে রূপ নিতে চলেছে। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা।

তিনি বলেন, কুমিল্লা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিকল্প পথ হিসেবে বাঞ্ছারামপুরকে ব্যবহার করার স্বপ্ন ছিল দীর্ঘদিনের। আর সে স্বপ্ন থেকেই এ ওয়াই সেতু। এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবে রূপ নিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লার তিন উপজেলার সীমান্তের তিতাস নদীর ওপর নির্মিত বিশ্বের সর্ববৃহৎ ‘ওয়াই সেতু’।

স্থানীয়রা জানান, এক সময় ঝুঁকি নিয়ে নদীপথে নৌকা কিংবা লঞ্চ দিয়ে যাতায়াত করতে হতো এই এলাকার লোকজনের। সেতু চালুর ফলে অল্প সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করা সম্ভব হবে। এলাকার অর্থনীতিতে পড়বে ইতিবাচক প্রভাব। সেতুটি নির্মিত হওয়ার ফলে এলাকার যোগাযোগ ও বিনোদনের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে বলে মনে করেন এলাকাবাসী।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফজলে হাবিব মুঠোফোনে জানান, স্বপ্নের এই সেতু চালু হলে চারদিকে নদী বেষ্টিত মুরাদনগর, হোমনা ও বাঞ্ছারামপুরের চেহারা পাল্টে যাবে। ত্রিমোহনার দুই অংশে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ভুরভুরিয়া ও চরলহনিয়া, অপরটি পশ্চিম অংশে কুমিল্লার হোমনা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর বাজার এবং মুরাদনগর উপজেলা স্পর্শ করেছে। সেতুটি চালু হলে দুই জেলার তিন উপজেলার মধ্যে রচিত হবে সেতুবন্ধন। ফলে এ অঞ্চলের অর্থনীতির চাকা পাল্টে যাবে।

বিডি২৪লাইভ/এমকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: