কণ্ঠ রোধটা কোথায়, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১১:৩১ পিএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে বলেছেন, দেশের স্বার্থেই ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন প্রণয়ন করছে তার সরকার। কেউ কেউ ব্যক্তি স্বার্থ থেকে মতামত দিয়ে এ আইনের বিরোধীতা করছেন। কিন্তু সমগ্র দেশ ও সমাজের স্বার্থে এটি যে গুরুত্বপূর্ণ তা তারা ভাবেননি।

বৃহস্পতিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দশম জাতীয় সংসদের ২২তম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি, সাংবাদিক, সম্পাদকরা ডিজিটাল আইনের বিরোধীতা করছেন। তারা বলছেন, সাংবাদিকদের কণ্ঠ রোধ হয়ে যাবে। কিন্তু কণ্ঠ রোধটা কোথায়? রোধ হলে তো মতামত দিতে পারতেন না।’

‘দেশে একটা মাত্র টেলিভিশন ছিল। টিভি, রেডিও বেসরকারি খাতে দিতে কোন সরকার সাহস করেছিল? আমরাই দিয়েছি। সারারাত টকশো হচ্ছে কেউ তো বাধা দিচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাংবাদিকতা হবে গঠনমূলক। বিভ্রান্ত, সহিংশতা ছড়িয়ে দেবে না। ব্যাপকহারে সংবাদপত্রের অনুমোদন দিয়েছি। এত পত্রিকার অনুমোদন পৃথিবীর কোন দেশে আছে?’

‘অনেক চড়াই-উৎরাই করে আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি। গণতন্ত্র আছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশের সকল আশাবাদকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল। ২১ বছর শেষে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দেশের মানুষ আবার সুশাসন পেতে শুরু করলো।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বে আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রুল মডেল। সারা বিশ্বে জঙ্গি-সন্ত্রাস বড় সমস্যা। তারপরও আমরা অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে এ সমস্যা মোকাবিলা করেছি। মাদকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিয়েছি। ফলে অনেক পরিবার ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে।’

দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের উন্নয়নের উদাহরণ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশ উন্নত করতে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও বিদ্যুৎ-জ্বালানিতে বিশেষ অবদান রাখতে হয়। মাত্র ৩ হাজার মেগাওয়াট থেকে আজকে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে এই খাতের বিপুল উন্নয়ন করেছি। সব শিল্প কারখানা যাতে চালু থাকতে পারে তার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সড়ক নৌ ও বিমান সব ক্ষেত্রেই উন্নয়ন হয়েছে। এসব বিষয়ে অনেক বিস্তারিত তথ্য আগে সংসদে বলেছি। মানুষকে সুন্দর একটি জীবন উপহার দেওয়ার উদ্দেশেই আমরা সরকার পরিচালনা করি।’

‘বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগের একটি দেশ। জলবায়ু ঝুকি মোকাবিলায় আমরা কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। দেশের মানুষের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে খাদ্যের নিশ্চয়তার পাশাপাশি চিকিৎসাখাতে ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। ৬৪ বছর বয়স থেকে মানুষের আজ ৭১ বছর বয়স। উত্তরাঞ্চলে গেলে কঙ্কালের মতো মানুষ দেখা যেত এখন মানুষের গায়ে মাংস দেখা যায়’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।

‘রাষ্ট্র পরিচালনা ভোগ বিলাশের জন্য না’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দৃষ্টি গ্রামের মানুষের দিকে। এক সময় বিদেশ থেকে কাপড় এনে বিলানো হতো। এখন সেই দিন নেই। গত কোরবানি ঈদের আগে কতগুলো ফ্রিজ বিক্রি হয়েছে তার হিসেব নেই। রাইস কুকারে ভাত রান্না করেন, মোবাইল ফোন হাতে হাতে, ডিজিটাল বাংলাদেশে পৌঁছে গেছি আমরা।’

‘মাত্র দশ দিনে ১৮টি বিল আমরা পাশ করেছি’ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এত অল্প সময়ে এত বিল কমই পাশ হয়েছে।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদলের সদস্যদেরকে ধন্যবাদ জানান। বলেন, ‘দশম জাতীয় সংসদে অশালীন কথা নাই, আজে-বাজে মন্তব্য নেই। সুন্দর একটি পরিবেশ ছিল। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। মানুষের এখন সংসদে আস্থা বিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে সরকার ও বিরোধী দলের পারস্পরিক সহযোগিতার কারণে। এই অধিবেশনে যে বিলগুলো পাশ হয়েছে সেগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

পরে প্রধানমন্ত্রী কয়েকটি বিলের উপর আলোকপাত করেন। বলেন, ‘অত্যন্ত সফল একটি অধিবেশন ছিল এটি। এই অধিবেশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।’

বিডি২৪লাইভ/ওয়াইএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: