নিজ বুদ্ধিমত্তায় বেঁচে ফিরল শিশু আল-আমিন

প্রকাশিত: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৯:১৯ এএম

আল-আমিনের যখন জ্ঞান ফেরে তখন সে দেখে একটি কালভার্টের নিচে শুয়ে আছে। কালভার্ট থেকে বেরিয়েই দেখে ৪-৫ জন লোক দাঁড়িয়ে আছে। একজনের হাতে বড় একটি ছোরা। ছোরা হাতে লোকটি আল-আমিনের কাছে এসে বলে তোর আগে মোট ৩০ জনকে খুন করেছি, তোকে দিয়ে ৩১টি হবে। কালভার্টটি মেইন রোডের পাশেই, রাস্তা দিয়ে যাওয়া গাড়ির আলো দেখতে পাচ্ছিল আল-আমিন। বুদ্ধি এলো দৌঁড়ে পালাতে হবে। দেরি না করে আল-আমিন দ্রুত গতিতে দৌঁড়ে পালাল। কিছুক্ষণ দৌঁড়ে এসে রাস্তার পাশে একটি দোকান দেখতে পেয়ে ওই দোকনে গিয়ে লোকজনদের তাকে বাঁচানোর আকুতি জানায়। এভাবেই বর্ণনা করেছেন অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে আসা শিশু আল-আমিন (১২)। 

দোকানে থাকা লোকজন অপহরণকারীদের ধরতে কালভার্টের ওখানে আসার পূর্বেই তারা পালিয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার রাতে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বলিদাপাড়া সংলগ্ন এলাকায়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।  

আল-আমিনের বাড়ি রাজবাড়ি জেলার সদর উপজেলার শহীদ ওহাবপুর ইউনিয়নের রুপপুর গ্রামে। সে জাহাঙ্গীর শেখ ও রেনু বেগমের ছেলে।  

রেনু বেগম বলেন, কুষ্টিয়া তাদের এক পরিচিতের বাড়িতে দাওয়াত খেতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বুধবার বেলা ১২টার দিকে আল-আমিন বাড়ি থেকে বের হয়। কিন্তু বিকেলে ওই পরিচিতরা জানান আল-আমিন তাদের বাড়িতে আসেনি। তাই ছেলের সন্ধান পেতে ওই দিনই কুষ্টিয়া থানায় একটি জিডি করেন। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে ছেলে উদ্ধারের খবর পেয়ে তারা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থানায় আসেন।

আল-আমিন জানায়, সে বুধবার দুপুরে ট্রেনে চড়ে কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে আসছিল। এ সময় ট্রেনের ভিতর একজন লোক একটি রুমাল তার নাকে চেপে ধরে। এর পর যখন তার জ্ঞান ফিরল তখন দেখে একটি কালভার্টের নিচে শুয়ে আছি। কালভার্ট থেকে বেরিয়েই দেখি ৪-৫ জন লোক দাঁড়িয়ে আছে। একজনের হাতে বড় একটি ছোরা। ছোরা হাতে লোকটি আমার কাছে এসে বলে, তোর আগে মোট ৩০ জনকে খুন করেছি, তোকে দিয়ে ৩১টি হবে। কালভার্টটি মেইন রোডের পাশেই, রাস্তা দিয়ে যাওয়া গাড়ির আলো দেখছিলাম। এক পর্যায়ে দৌঁড়ে পালাই এবং একটি দোকানে এসে উঠি।     

কালীগঞ্জ থানার এসআই অমিত কুমার জানান, বুধবার রাত ১২টার দিকে সংবাদ পেয়ে সুগার মিল এলাকার একটি কফি হাউজ থেকে আল-আমিনকে উদ্ধার করা হয়। ছেলেটির বর্ণনা মতে সে একটি অপহরণকারী চক্রের হাত থেকে পালিয়ে ওই কফি হাউজে আশ্রয় নেয়। 

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার ওসি ইউনুচ আলী জানান, বুধবার রাতে ছেলেটিকে পুলিশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। বৃহস্পতিবার রাতে আল-আমিনকে তার বাবা মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়।  

বিডি২৪লাইভ/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: