বাংলাদেশের ফাইনাল খেলা কতটুকু সম্ভব?

প্রকাশিত: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৪:৩৪ পিএম

এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে বিশাল ব্যবধানে হারানোর পর, বাংলাদেশের চোখে ছিল টুর্নামেন্ট জয়ের স্বপ্ন কিন্তু পরের দুই ম্যাচে শোচনীয় পরাজয়ের পর, সেই স্বপ্ন এখন অনেকটাই ফিকে। তবে সামনের দুই ম্যাচ জিততে পারলে এখনও ফাইনাল খেলা সম্ভব। কিন্তু প্রশ্ন রয়েছে বেশ কিছু। এ ধরনের বড় প্ল্যাটফর্মে জয়ের জন্য যতটুকু মনোসংযোগ ও আত্মবিশ্বাস দরকার, ততটা কী টাইগাররা দেখাতে পেরেছে? দলের ব্যাটিং ব্যর্থতার গ্লানি কি সামনের দুই খেলায় মোচন করা সম্ভব হবে? নাকি আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের শক্তিশালী বোলিং লাইন আপের কাছে আবারও দেখতে হবে ব্যাটিং ধস?

এদিকে ব্যাটিং অর্ডারে প্রত্যাশিত সাফল্য আনতে এরই মধ্যে দেশ থেকে উড়াল দিয়েছেন, ইমরুল কায়েস ও সৌম্য সরকার। আরব আমিরাতের কন্ডিশনের সাথে তারা কতটুকু মানিয়ে নিতে পারবেন, সে প্রশ্নটা থেকেই যায়। সাথে রয়েছে দলে অন্তর্ভূক্তির পর তারা কতটুকু পারফর্ম করতে পারবেন, সেই সংশয়ও। কারণ, এই দুজনই দল থেকে বাদ পড়েছিলেন ফর্মহীনতার জন্য। তাদের টেকনিক্যাল যেসব বিষয়ে উন্নতির প্রয়োজন ছিল, তা নিয়ে তারা কতটুকু কাজ করতে পেরেছেন; রয়েছে সেই প্রশ্নও। অধিনায়ক মাশরাফি পর্যন্ত তাদের আকস্মিক অন্তভূর্ক্তি নিয়ে সংশয় জ্ঞাপন করেছেন।

কাল (২৩ সেপ্টেম্বর) আবুধাবিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। এর আগে আফগান বোলিংয়ের বিপক্ষে মাত্র ১১৯ গুটিয়ে গিয়েছিল টাইগাররা। রশিদ খান ও মুজিব উর রহমানের স্পিন আক্রমণের সামনে অসহায় বোধ করেছেন ব্যাটসম্যানরা। ওপেনাররা এখনও এই টুর্নামেন্টে ফ্লপ। তামিম ইকবাল খেলতে পারছেন না। ফলে তার অভাবও নিদারুণভাবে অনুভব করছে বাংলাদেশ। লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্ত রান পাননি একদিনও। ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী রয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন। এছাড়া বড় স্কোর পাননি মাহমুদুল্লাহ ও সাকিব। প্রথম ম্যাচের পর খোলসবন্দী রয়েছেন মোহাম্মাদ মিথুন। এই রকম ভঙ্গুর ব্যাটিং লাইন আপ নিয়ে আফগান বোলারদের ক্ষুরধার আক্রমণ প্রতিরোধ করা কতোটা সম্ভব, তা অনেক চিন্তার বিষয়।

এদিকে আফগানিস্তান বাংলাদেশের চেয়ে মানসিকভাবে অনেকটাই এগিয়ে থাকছে এই প্রতিযোগিতায়। কাল পাকিস্তানের বিপক্ষে হারলেও তারা লড়াই করেছে ভালোমতই। দলের ব্যাটিংটা বেশ গোছানো। রান হচ্ছে প্রতি ম্যাচেই। পাশাপাশি হাশমতউল্লাহ শাহিদি, ইহসানউল্লাহ , শেহজাদরা রান করছেন প্রতি ম্যাচেই। লোয়ার অর্ডারে রশিদ খান কিংবা গুলবাদিন নাইবরাও যোগ করছেন প্রয়োজনীয় রান। ফলে এরকম উদ্দীপ্ত ও ধারাবহিক পারফর্ম করা দলকে পরাস্ত করা টাইগারদের জন্য সহজ হবেনা মোটেও।

তারপরও ক্রিকেট গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা। সেই সাথে নিকট অতীতে আমরা দেখেছি খাদের কিনার থেকে বাংলাদেশকে ঘুরে দাঁড়াতে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেই দেখা গেছে তার নমুনা। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাও জানিয়েছেন সম্ভাবনার কথা, ‘আমরা তো এখনো টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাইনি। একটা দিন সময় পাচ্ছি চিন্তাভাবনা করার। এখনো ফাইনাল খেলা সম্ভব। হতাশ হওয়ার কিছু নেই। কামব্যাক করার সুযোগ আছে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে যদি জিততে পারি, পাকিস্তানের সঙ্গে ম্যাচটা ফিফটি-ফিফটি হয়ে যাবে।’

এখন দেখার বিষয় এটাই, যে মাঠেই খেলায় বাংলাদেশে কতোটা গুছিয়ে নিতে পারে। পর পর দুই ম্যাচে বড় ব্যবধানে হারার পর, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের বিপক্ষে টাইগারদের ভালো খেলার কোনো বিকল্প নেই। আর নিজেদের নিংড়ে দিতে পারলে, ফাইনাল খেলাটা মোটেও অসম্ভব কিছু নয়। দেয়ালে যখন পিঠ ঠেকেই গেছে, তখন সর্বোচ্চ প্রচেষ্টায় লড়ে যাওয়াই হোক টাইগারদের মূলমন্ত্র।

বিডি২৪লাইভ/এএআই

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: