মাশরাফির যে সিদ্ধান্তে পাল্টে গেল খেলার ধারা
‘স্নায়ুযুদ্ধ’ ছিল শেষ বল পর্যন্ত। উত্তেজনার এই ম্যাচে নিয়তি সু-প্রসন্ন ছিল বাংলাদেশের। ফলে ৩ রানের অসাধারণ এক জয় পেয়েছে টাইগাররা।
আর সেই জয় নিয়ে উচ্ছসিত টাইগার দলপতি মাশরাফি। তিনি জানালেন কাটার মাস্টার মোস্তাফিজের কৃতিত্বের কথা, ‘আসলে যেভাবে আমরা জিতেছি তার কৃতিত্বটা অবশ্যই মোস্তাফিজের। সে ছিল জাদুকর। তার নিজস্ব জাদুতে বের করে এনেছে আমাদের জয়। সে যেভাবে বল করেছে তা এক কথায় অসাধারণ।’
তাই বলা রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে যাওয়ার আশা টিকিয়ে রাখল টিম বাংলাদেশ। এই পরাজয়ের ফলে এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে গেল আফগানিস্তান। আর এখন ফাইনালের দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছে ভারত, এরপরই বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্য থেকে যেকোনো এক দল যাবে।
অবশ্য ভারতের কাছে পাকিস্তান হেরে যাওয়ায় বাংলাদেশের সম্ভাবনা এখন অনেকটাই বেশি।
রোববার আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ইনিংসের মাঝপথে মনে হচ্ছিল, বাংলাদেশ ছিটকে গেছে এশিয়া কাপ থেকে। কিন্তু, কোণঠাসা বাংলাদেশ বাঘের মতো ঘুরে দাঁড়িয়েছে, আফগানদের থেকে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে।
অবশ্যই এ জন্য কৃতিত্ব দিতে হবে মোস্তাফিজকেই। তবে, নেপথ্য নায়ক কিন্তু অন্যজন। তিনি হলেন- মাশরাফি বিন মর্তুজা। একেই বলে অধিনায়ক। তার একটি সিদ্ধান্তে খেলার মোড় ঘুরে গেছে। মাশরাফি এই ঝুঁকি না নিলে হয়তো খেলার ফলাফল অন্য রকম হতে পারতো।
তা হলো- ম্যাচের তখন ৪৬তম ওভার চলে। শেষ ২৪ বলে আফগানিস্তানের প্রয়োজন ৪২ রান। হাতে রয়েছে ৫টি উইকেট। তখন বল করার কথা মাশরাফির। কিন্তু বল করলেন না। তিনি বল দিলেন মোস্তাফিজকে। পরের ৩ ওভারই যেন মোস্তাফিজ বল করতে পারেন, সে জন্যই এই সিদ্ধান্ত। ব্যস, ফল পাওয়া গেল অবিশ্বাস্য জয়ে।
বোলিংয়ে এসে ওই ওভারে মোস্তাফিজ ৯ রান দেন। কিন্তু তা কি খুব বেশি? মাশরাফি আসেন পরের ওভার বল করতে। ১১ রান দেন। ৪৮তম ওভারে মোস্তাফিজ দেন ১২ রান। উত্তেজনা আরও বেড়ে গেল।
এরপর খেলার ৪৯তম ওভারে সাকিব আল হাসান ১১ রান দিয়ে ১টি উইকেট তুলে নেন। মোহাম্মদ নবীকে বিদায় করায় কিছুটা স্বস্তি বাংলাদেশ শিবিরে। তারপর শেষ ওভারের জাদু ইতিহাস সৃষ্টি করলেন মোস্তাফিজ।
৫০তম ওভারে মোস্তাফিজ যখন বল হাতে নেন আফগানদের প্রয়োজন ৮ আট রান, হাতে রয়েছে ৪ উইকেট। পরিস্থিতি তাই পুরোটাই ছিল আফগানদের অনুকূলে। ক্রিকেটের এই যুগে যেটি মোটেই কঠিন নয়। কিন্তু মোস্তাফিজ সেটাই পাল্টে দিলেন। কাটার মাস্টার যখন নিজের নামের প্রতি সুবিচার করেন, দল জেতার আর কোনো উপলক্ষ লাগে না। সেটি আবাও প্রমাণ করলেন দ্য ফিজ।
ওভারের প্রথম বলে কাভার অঞ্চলে খেলে ২ রান নিলেন ক্রিজে থাকা রশিদ খান। কিন্তু দ্বিতীয় বলে ছক্কা মারতে গিয়ে বল তুলে দিলেন মোস্তাফিজের হাতেই। নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নিলেন কাটার মাস্টার। ততক্ষণে অবশ্য দৌড়ে স্ট্রাইকে চলে যান শেরওয়ানি। চার বলে দরকার ৬ রান। পরের বলে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচের মতো উঠেছিল; কিন্তু আম্পায়ার নাকচ করে দিলেন, রিপ্লেতেও দেখা গেল বল প্যাডে লেগেছে। লেগবাই সূত্রে এলো এক রান। ৩ বলে দরকার ৫ রান। চতুর্থ বলে পরাস্ত হলেন নতুন ব্যাটসম্যান গুলবুদ্দিন নাইব। সমীকরণ দাঁড়াল ২ বলে ৫ রানের। পঞ্চম বলেও ব্যাটে বলে করতে পারেননি নাইব, তবে দৌড় থামেনি তাদের। লেগ বাই থেকে এবারো একটি রান। শেষ বলে আফগানদের প্রয়োজন ছিল ৪ রান।
তখন গ্যালারি ভরা দর্শকও পুরোপুরি নিশ্চুপ। স্বভাব সুলভ ভঙ্গিতে বল করলেন মোস্তাফিজ, গুড লেন্থের বলটি ছিলে কিছুটা রাইজিং ডেলিভারি। সজোরে ব্যাট চালালেন শেরওয়ানি; কিন্তু ব্যাটে বলে হলো না। সঙ্গে সঙ্গে জয়ের আনন্দে মেতে উঠল বাংলাদেশ।
এদিন ৯ ওভার বোলিং করে ১টি মেডনসহ ৪৪ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজ। ম্যাচ শেষে তাই কাটার মাস্টার মোস্তাফিজকে রীতিমতো প্রশংসায় ভাসিয়েছেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাও।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান: ২৪৬ /৭ (৫০ ওভারে)
বাংলাদেশ: ২৪৯/৭ (৫০ ওভারে)
ফলাফল: বাংলাদেশ ৩ রানে জয়ী।
বিডি২৪লাইভ/টিএএফ
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: