দুদকের কাঠগড়ায় ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক এমডি

প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১১:০৩ এএম

সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার ব্যাংক হিসাবে ৪ কোটি টাকা স্থানান্তরের সঙ্গে ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির সম্পৃক্ততা থাকতে পারে, এমন অভিযোগে ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী একেএম শামীমসহ ৬ ব্যাংক কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় এ জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।

তলব কৃতরা হলেন- ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী একেএম শামীম, ফারমার্স ব্যাংকের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, এক্সিকিউটিভ অফিসার উম্মে সালমা সুলতানা, অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট শফিউদ্দিন আসকারী আহমেদ, ম্যানেজার (অপারেশন) ও ভাইস প্রেসিডেন্ট লুতফুল হক এবং সাবেক হেড অব বিজনেস ও সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট গাজী সালাউদ্দিন।

দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সংস্থাটির পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের সই করা নোটিশে তাদের বুধবার (২৬ সেপ্টেম্বর) হাজির হতে বলা হয়েছে। এ তদন্ত কাজে সহায়তা করছেন দুদকের সহকারী পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান।

বিষয়টি নিয়ে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, আমরা অনুসন্ধান করছি কিনা এ বিষয়ে সরাসরি উত্তর দেয়া সম্ভব না। দুদক দু’জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ঋণ নিয়ে ওই টাকা অবৈধভাবে অন্যত্র স্থানান্তরের বিষয়ে অনুসন্ধান করছে। অনুসন্ধান শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে বক্তব্য দেয়া যাবে না। দালিলিক প্রমাণ দিয়ে টাকা কোথায় ও কীভাবে গেল সে বিষয়টি খুঁজে বের করতে হবে। দালিলিক প্রমাণ ছাড়া দুদক কারও বিরুদ্ধে মামলা করবে না।

উল্লেখ্য, গত ৬ মে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে দুই ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহাকে এস কে সিনহার ব্যাংক হিসাবে ৪ কোটি টাকা স্থানান্তরের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

সে সময় তাদের দুই আইনজীবী আফাজ মাহমুদ রুবেল ও নাজমুল আলম সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, এস কে সিনহাকে তার বাড়ি বিক্রির ৪ কোটি টাকা পে-অর্ডারের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে দুই আইনজীবী আরও বলেন, বাড়ি কেনার বিষয়ে নিরঞ্জন ও শাহজাহান ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে ২ কোটি টাকা করে মোট ৪ কোটি টাকা ঋণ নেন। ঋণ পরিশোধে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে শান্তি রায় জামিনদার হন।

এদিকে দুদক সূত্র জানায়, এ বিষয়ে গত বছরের শেষদিকে আসা এক ব্যক্তির লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক তা যাচাই-বাছাই শেষে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়।

আর অনুসন্ধানে যদি জানা যায়, ওই ৪ কোটি টাকা বাড়ি বিক্রির নয়, বরং ঘুষ বা জালিয়াতি করে অন্য কোনো জায়গা থেকে এস কে সিনহার হিসাবে স্থানান্তরিত হয়েছে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।

জানা যায়, এস কে সিনহার উত্তরার ৬ তলা বাড়িটি ৫ কাঠা জমির ওপর। বাড়িটি ২০১৬ সালের শুরুর দিকে টাঙ্গাইলের বাসিন্দা ও সাবেক প্রধান বিচারপতির ‘কথিত পিএস’ রণজিতের স্ত্রী শান্তি রায় ৬ কোটি টাকায় ক্রয় করেন। বায়না দলিলকালে তিনি ২ কোটি টাকা পরিশোধ করেন। বাকি টাকা পরিশোধের জন্য নিরঞ্জন ও শাহজাহানের সহযোগিতা নেন। নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা শান্তি রায়ের স্বামী রণজিতের চাচা। আর শাহজাহান রণজিতের বন্ধু।
জামিনদার হিসেবে শান্তি রায় টাঙ্গাইল ও ঢাকার আশপাশের বেশকিছু জমি বন্ধক রাখেন।

তাদের তথ্যানুযায়ী, ২০১৬ সালের মে মাসে বায়না দলিল হয় এবং ৮ নভেম্বর দুটি পে-অর্ডারে এস কে সিনহা সোনালী ব্যাংক সুপ্রিমকোর্ট শাখার মাধ্যমে চার কোটি টাকা গ্রহণ করেন। পরে ২৪ নভেম্বর হস্তান্তর দলিলের মাধ্যমে বাড়িটি শান্তি রায়কে বুঝিয়ে দেন।

বিডি২৪লাইভ/এএইচ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: