জীবিকার সন্ধানে প্রবাসে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরল আনোয়ার

প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০১৮, ০৫:০০ এএম

অভাবের সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে ধার দেনা করে প্রায় সাত মাস আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছিলেন আনোয়ার হোসেন মন্ডল (৪০)। সেখানে গিয়ে কাজ না পেয়ে প্রায় চার মাস বেকার বসে থাকার পর গত জুলাই মাসে একটি চাকরি জোটে তার। স্বপ্ন দেখেন সুন্দর ভবিষ্যতের। চাকরিতে ঢুকেই স্ত্রীকে ফোন করে বলেছিলেন, খুব দ্রুতই পাওনাদারদের টাকা পরিশোধের জন্য টাকা পাঠাবেন। ছেলে-মেয়েদের ভাল স্কুলে পড়াশুনা করাবেন। কিন্তু একটি সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিল তার সব স্বপ্ন।

পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের জগতলা কান্দিপাড়া গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে আনোয়ার জীবন-জীবিকার সন্ধানে সৌদি আরবে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন।

শুক্রবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে নিহত আনোয়ারের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছালে সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। বৃদ্ধ বাবা সন্তানের নিথর দেহ দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে যান। স্ত্রী লাশের পাশে বার বার ছুটে যাচ্ছেন প্রিয় মানুষের মুখখানা একবার দেখার জন্য। বারবার মূর্ছা যান তিনি। সন্তান দুটি কাঁদছেন অঝোর ধারায়। উপস্থিত সবাই তাদের কি সান্তনা দিবে। কেউ কোন ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলেন না।

এর আগে শুক্রবার ভোরে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে নিহত আনোয়ারের কফিন গ্রহণ করেন ছোট ভাই আজাদ হোসেন। শুক্রবার বিকেলে আনোয়ারের মৃতদেহ বাড়িতে আসছে এমন সংবাদ গ্রামে পৌঁছালে শত শত শোকার্ত মানুষ আগে থেকেই বাড়িতে গিয়ে ভিড় করতে থাকে।

নিহতের ছোট ভাই আজাদ হোসেন জানান, আমরা চার ভাইয়ের মধ্যে আনোয়ার মেজ। জীবিকার সন্ধানে গত সাত মাস আগে তার চাচাতো ভাই হাবিবুর রহমানের মাধ্যমে সৌদির রাজধানী রিয়াদে পাড়ি জমান। গত দুইমাস পূর্বে রিয়াদ থেকে ৪২০ কিঃ মিঃ দূরে হাবুব এলাকায় আল-আলাইদ কোম্পানিতে চাকরি শুরু করেন।

রাস্তার পাশে কর্মস্থলে কাজ করার সময় একটি দ্রুত গতির গাড়ি তাকে চাপা দিলে গুরুতর আহত হন। সঙ্গে সঙ্গে দেশটির পুলিশ তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় এক হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরের দিন সকালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আনোয়ার হোসেন। বহু প্রতিক্ষার পরে দির্ঘ ২ মাস পরে শুক্রবার ভোরে দেশে আসে ভাইয়ের লাশ। সেখান থেকে বিকেলে অ্যাম্বুলেন্সে করে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসি।

&dquote;&dquote;শুক্রবার সন্ধার আগে গ্রামের জগতলা মাদ্রসা মাঠে নিহত আনোয়ারের যানাজা নামাজ শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।


বিডি২৪লাইভ/এইচকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: