পাখিই হয়ে গেল সাজ্জাদ!

প্রকাশিত: ২২ অক্টোবর ২০১৮, ০৮:৩৩ এএম

ফাহিম আরমান সাজ্জাদ। ঝলমলে এক তারুণ্য। বন্ধুবৎসল এই তরুণ সরব ছিল সোশ্যাল মিডিয়াতেও। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার নিক নেম দিয়েছিল ‘পাগল’।
পাগলের মতোই এখানে-সেখানে ঘুরে বেড়ানো। ক্যামেরাবন্দি করতো ফুল, ফল, প্রকৃতিসহ চারপাশের জগতকে। এসব ছবি আর ভিডিও চিত্র সাড়া জাগাতো ফেসবুক, ইউটিউবসহ নানা সোশ্যাল মিডিয়ায়। 

এমন উচ্ছ্বলতার তরুণটি গত ১৭ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টার দিকে আপডেট করে তার বায়ো। সেখানে লিখেন, ‘নিজের মন যা চায়, তা করতে চাই... আমি পাখি হতে চাই।’

&dquote;&dquote;

ফেসবুকে তার বায়ো আপডেট এর মাত্র ৫ দিন পর অর্থাৎ রোববার (২১ অক্টোবর) পাখির মতোই উড়াল দিল ফাহিম আরমান সাজ্জাদ। চলে গেলেন দূর-বহুদূর, যেখান থেকে আর ফিরে আসা যায় না।

দুপুরে আন্তঃনগর কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের ভিডিও চিত্র ধারণ করতে গিয়ে ট্রেনের নিচে চলে যায় ফাহিম আরমান সাজ্জাদের দু’পা। এতে তার এক পা হাঁটুর নিচ থেকে এবং আরেক পা উরুর নিচ থেকে কাটা পড়ে।

দু’পা হারানোর খবরে তার বন্ধুমহলে নেমে আসে অসীম বেদনা। কিন্তু, তাদের জন্য যে আরও বড় দুঃসংবাদ অপেক্ষা করছিল, তা কে জানতো!

দু’পা হারিয়ে প্রায় ৭ ঘণ্টা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে হেরে যায় ফাহিম আরমান সাজ্জাদ। রোববার (২১ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দেহটাকে ফেলে রেখে প্রাণপাখি উড়ে যায় তার।

ফাহিম আরমান সাজ্জাদের এমন মৃত্যুতে কাঁদছে তার বন্ধু-স্বজনরা। ফেসবুকের ওয়ালে ওয়ালে স্ক্রিনশট হয়ে ঘুরছে তার আপডেটেড বায়ো, ‘নিজের মন যা চায়, তা করতে চাই... আমি পাখি হতে চাই।’ এই লিখাটি।

নিহত ফাহিম আরমান সাজ্জাদ কিশোরগঞ্জ শহরের হয়বতনগর এলাকার মৃত আমিনুল হক তপনের ছেলে। সে রাজধানী ঢাকার একটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীর ছিল। তবে সেখান থেকে ছাড়পত্র নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল নিজ শহর কিশোরগঞ্জের সরকারি গুরুদয়াল কলেজে।

&dquote;&dquote;

প্রত্যক্ষদর্শী, রেলওয়ে পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, কিশোরগঞ্জ রেলস্টেশনের প্লাটফরমে ফাহিম আরমান সাজ্জাদ বন্ধুদের সাথে নিয়ে ভিডিও চিত্র ধারণ করছিলেন। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্লাটফরমে ঢুকছিল।

ট্রেনটির ভিডিও ধারণে মগ্ন থাকা সাজ্জাদের কাছাকাছি আসার সময়ে অন্যরা চিৎকার দিলে সাজ্জাদ সরে আসার চেষ্টা করলেও ততক্ষণে তার দু’পা ট্রেনের নিচে পড়ে যায়। এতে তার এক পা হাঁটুর নিচ থেকে এবং আরেক পা উরুর নিচ থেকে কাটা পড়ে।

সাথে থাকা বন্ধু এবং স্থানীয় লোকজন দ্রুত উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ঢাকা নিয়ে যাওয়ার পর রাত ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চিরদিনের জন্য সবাইকে ফাঁকি দিয়ে চলে যায় ফাহিম আরমান সাজ্জাদ।

বিডি২৪লাইভ/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: