জেলে আত্মহত্যা করলেন সেই স্নিগ্ধার প্রেমিক

প্রকাশিত: ১০ নভেম্বর ২০১৮, ০৮:০৬ পিএম

রংপুর বিশেষ জজ আদালতের বিশেষ পিপি ও জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রথীশ চন্দ্র ভৌমিক (বাবু সোনা) হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামী কারাগারে বন্দি স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার দীপা ভৌমিকের প্রেমিক কামরুল ইসলাম কারাগারে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। স্ত্রীর পরকীয়ার জেরে খুন হন অ্যাডভোকেট রথীশ চন্দ্র ভৌমিক। 

এ বিষয়ে রংপুর কারাগারের জেলার আমজাদ হোসেন জানান, অ্যাডভোকেট বাবু সোনা হত্যা মামলার প্রধান আসামী তার স্ত্রীর পরকিয়া প্রেমিক কামরুল ইসলাম বেশ কিছু দিন থেকে নামাজ পড়া শুরু করেছে। শুক্রবার (৯ নভেম্বর) রাতের কোন এক সময় সকলের অগোচরে বিছানার চাদরকে রশি বানিয়ে গলায় পেচিয়ে জানালার সাঙ্গে ঝুলিয়ে সে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। 

পরবর্তীতে ভোর ৫ টার দিকে ফজরের নামাজের সময় অন্য আসামীরা তাকে অজুর জন্য ডাকতে গিয়ে জানালার পাশে হেলান দেয়া অবস্থায় দেখতে পায়। ডাকাডাকিতে সাড়া না দেয়ায় অন্যান্য আসামীরা তার গায়ে হাত দিতেই সে জানালার পাশে লুটিয়ে পড়ে। এসময় তাকে গলায় চাদর পেচানো অবস্থায় অন্যান্য হাজতিরা গেটের দিকে নিয়ে আসে।

তিনি বলেন, আমি সঙ্গে সঙ্গেই তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠাই। সেখানে ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে সে মারা যায়। লাশ ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. অজয় রায় জানান, হাসপাতালে ভর্তি করার কিছ্ক্ষুণ পরেই কামরুল মারা যায়। কী কারণে মারা গেছে তা ময়না তদন্তের রিপোর্টে বোঝা যাবে। ময়না তদন্তের জন্য কামরুলের লাশ পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

এর আগে গত ১৪ এপ্রিল এই মামলার অন্যতম আসামী অ্যাডভোকেট রথীশের অফিস সহকারী মিলন মোহন্ত (৩০) একই হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন অবস্থান মারা গিয়েছিলেন।

অ্যাডভোকেট রথীশ চন্দ্র ভৌমিক (বাবু সোনা) ছিলেন জাপানি নাগরিক হোসিও কোনি ও মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা মামলার সরকার পক্ষের প্রধান কৌশুলি।

উল্লেখ্য, রংপুর মহানগরীর তাজহাট বাবু পাড়ায় অ্যাডভোকেট রথীশ চন্দ্র ভৌমিককে গত ২৯ মার্চ রাত ১০ টার দিকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে গলায় ওড়না পেচিয়ে হত্যা করে স্ত্রী সিগ্ধা সরকার দীপা ভৌমিক, প্রেমিক কামরুল ইসলামও তার সহযোগি মিলন মোহন্ত। 

পরবর্তীতে রথীশনের বিছানায় দীপা ও কামরুল রাত কাটায়। এর পরদিন তারা মাটির নিচে লাশ পুতে রাখে। রথীশের ছোট ভাই সুশান্ত ভৌমিক এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা করেন।

অ্যাডভোকেট রথীশ চন্দ্র ভৌমিক হত্যার ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে দীপা ভৌমিক ও প্রেমিক কামরুল ইসলাম জঙ্গি, দেবোত্তর সম্পত্বিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে রথীশ নিখোঁজের নাটক সাজিয়ে বিভিন্ন প্রপাগাণ্ডা চালায়। 

পরে র‌্যাব জিজ্ঞাসাবাদ করলে ৫ দিন পর দীপা ভৌমিকে হত্যার কথা স্বীকার করেন তারা। তাদের তথ্যের সূত্র ধরে নগরীর তাজহাট মোল্লাপাড়ার একটি পরিত্যাক্ত বাড়ির দরজা জানালা বিহীন রুমের মাটির নীচে বস্তাবন্দি অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে।  

রথীশের স্ত্রী দীপা ভৌমিক ও কামরুল ইসলাম এই মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেয়।

বিডি২৪লাইভ/এএইচ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: