আওয়ামী লীগ চায় নিজের লোক, মেনন বললেন ভিন্ন চিন্তা হলে ভোটই করবো না!

প্রকাশিত: ১৪ নভেম্বর ২০১৮, ১২:৩৬ এএম

মিজানুর রহমান: ঢাকা-৮ আসন থেকে ফের নৌকা প্রতীকে ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। ২০০৮ থেকে সংসদে মহাজোটের হয়ে ওই এলাকার প্রতিনিধিত্ব করছেন তিনি। তার সময়ে আসনে ওয়ার্ডের সংযোজন-বিয়োজন ঘটেছে। কিন্তু বড় অংশ এখনো রয়েছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মেনন প্রতিদিনই ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। 

সোমবারও একটি নারী সমাবেশে বক্তৃতা করেছেন। আজ শান্তিনগরে তার প্রধান নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধনের কথা। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে মেনন কী ওই আসনেই মহাজোটের নমিনেশন পাচ্ছেন? তাকে ঢাকার অন্য আসন থেকে প্রার্থী করার বিষয়ে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী মহলে আলোচনা রয়েছে।

নানা সূত্রে খবরও বেরিয়েছে। তাছাড়া হার্ট অব দি সিটি মতিঝিল-রমনা-পল্টনের গুরুত্বপূর্ণ আসনটি আওয়ামী লীগ নিজেদের করতে চাইছে। 

এ নিয়ে তৃণমূল থেকে চাপ রয়েছে এবং মূল দল ও অঙ্গ সংগঠনের তরুণ ও প্রবীণ নেতারা অনেকেই প্রার্থী হওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন। সে ক্ষেত্রে জোটের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির প্রধান মেননকে অন্য আসনে দিলেও জয়ী হওয়ার মতো ক্যারিশমা তার রয়েছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এক নেতা বলেন, যা হওয়ার আলোচনা করে হবে। দেখা যাক কী হয়? দায়িত্বশীল ওই নেতা এ-ও বলেন, ২০১৪ আর ’১৮-র পরিস্থিতি এক নয়। এটা সবাই কম-বেশি বুঝেন। আর ২০০৮তে ছিল নৌকার পালে হাওয়া। এবারের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা, জোটের নেতাদের বুঝতে হবে। কিন্তু এসব গুঞ্জনের মধ্যে মেনন কী ভাবছেন? জানতে চাওয়া হলে মেনন সাফ জানিয়ে দেন-  অন্য আসনে দিলে তিনি নির্বাচনই করবেন না। 

মানবজমিনের সঙ্গে আলাপে মেনন বলেন, ‘অন্য আসন নিয়ে আমি ভাবছি না। আমার কোনো প্রস্তুতিও নেই। আমি ঢাকা-৮ এর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্রতিদিনই বিভিন্ন ওয়ার্ডে সভা করছি। সেন্টার কমিটি করছি। পোলিং এজেন্টদের ট্রেনিং দিচ্ছি। আমরা তো জোটগতভাবে নির্বাচন করছি। আমি নমিনেশন পাবো ধরে নিয়েই কাজ করছি। আমার মনে হয় সেটাই হবে।’ এত গেল মহাজোটের অবস্থা। বিরোধী ঐক্যফ্রন্টেও আছে ভিন্ন ভিন্ন মত। কিন্তু একটি বিষয় মোটামুটি নিশ্চিত যে, ওই আসনে বিএনপির প্রার্থীই লড়বেন। মেনন থাকেন বা না থাকেন, সেখানে বিএনপি জ্যেষ্ঠ নেতা সাবেক মন্ত্রী ও মেয়র মির্জা আব্বাস বা তার শিষ্য সাবেক ছাত্রনেতা হাবিব-উন-নবী খান সোহেল প্রার্থী হচ্ছেন। ওই দু’জনের বাইরে আরো অনেকে মনোনয়ন ফরম কিনছেন। কিন্তু চূড়ান্ত বিবেচনায় তাদের ধানের শীষের ‘টিকিট’ পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। 

আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারাও মানছেন, বিএনপির প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণায় পাল্টে গেছে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ আসন ঢাকা-৮ এর ভোটের হিসাবনিকাশ। প্রার্থিতা নিয়ে ক্ষমতাসীন মহাজোট যেমন নতুন করে অঙ্ক কষছে, বিরোধী শিবিরও কম অস্থিরতায় নেই। ঢাকা-৮ আসনটি বিএনপির কাছেও গুরুত্বপূর্ণ। তারা এটাকে তাদের আসনই মনে করে। আর এ জন্যই সবদিক বিবেচনায় তারা প্রার্থী দিতে চায়। 

আসনটি পুনরুদ্ধার করাই বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্টের একান্ত চাওয়া। তবে সেখানেও সংশয় রয়েছে। অল্প সময়ের প্রস্তুতিতে তারা কতটা পেরে ওঠতে পারবেন? কেবল ঢাকা-৮ আসনই নয়, সারা দেশে বিএনপি বা ঐক্যফ্রন্ট কতটা কি করতে পারলো বা না পারলো সেটি দেখতে চাইছে শাসক জোটের নীতিনির্ধারকরা। আর বিরোধীরা দেখার অপেক্ষায় আছেন নির্বাচনের মাঠে রেফারির ভূমিকা কী হয় তা দেখতে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতের ঘোষণা নির্বাচন কমিশন কতটা কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে পারে? এসবের ওপরই ঢাকা-৮ তথা গোটা দেশের নির্বাচনের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। 

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে রাজধানীর মতিঝিল-রমনা-পল্টন থানা নিয়ে গঠন করা হয় ঢাকা-৮ সংসদীয় আসন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৯, ২০ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ড এ আসনের আওতাভুক্ত। এর আগে এ আসনের মতিঝিল ও পল্টন থানার আওতাভুক্ত এলাকা ঢাকা-৬ ও রমনা থানার আওতাভুক্ত এলাকা ঢাকা-১০ আসনের অধীনে ছিল। সূত্র: মানবজমিন।

বিডি২৪লাইভ/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: