নারী খেলোয়াড়দের সঙ্গে এসব কী ধরনের নোংরামি?

প্রকাশিত: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৬:১০ পিএম

তালেবান যুগের অবসানের পর ঘর ছেড়ে বাইরে আসতে শুরু করেছে আফগান নারীরা, বিশেষ করে তরুণীরা। দেশটির নারীদের মুক্তি একটি প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশটির নারী ফুটবল দল।

বিশ্বজুড়ে এমন সাহসিকতার প্রশংসাই হচ্ছিলো সব মহল থেকে কারণ জঙ্গি কিংবা রক্ষণশীলদের ভয় তাড়িয়ে মাঠে নেমেছে মেয়েরা। কিন্তু এর মধ্যেই হানা দিয়েছে দুঃস্বপ্ন। বিবিসি বাংলার একটি প্রতিবেদনে এমন সংবাদ পাওয়া গেছে।

দেশটির পদস্থ ক্রীড়া কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন যে নারী খেলোয়াড়দের কয়েকজন যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। আর এটা শুধু ফুটবলেই সীমাবদ্ধ নেই বরং দু:স্বপ্নটি গ্রাস করতে শুরু করেছে অন্য খেলাকেও।

যদিও বেশির ভাগ নারী খেলোয়াড়রই প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাইছেননা বিশেষ করে কোচ কিংবা অন্য কর্মকর্তাদের দ্বারা হেনস্থার বিষয়ে। তবে ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টি বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়ই বিবিসিরি কাছে স্বীকার করেছেন।

আর এই কেলেঙ্কারির খবর বের হতে শুরু করে গত কয়েকদিন ধরে। শুক্রবার ফিফা জানিয়েছে জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের একজন খেলোয়াড়ের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে তারা বিষয়টি তদন্ত করছে।

পরে দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকেও ঘটনার তদন্তের ঘোষণা দেয়া হয়। সোমবার বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি নিজেও। তার মতে প্রতিটি আফগান নাগরিক এ খবরে দারুণ কষ্ট পেয়েছে।

"এমনকি সামান্য কোনো অভিযোগও যদি মানুষকে তার ছেলে বা মেয়েকে খেলাধুলায় না পাঠাতে উৎসাহিত করে সে বিষয়েও আমাদের দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে"।

ড্যানিশ প্রতিষ্ঠান হামেল ইতোমধ্যেই আফগান ফুটবল ফেডারেশনের স্পন্সরশীপ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সায়েদ আলিরেজা আকাজাদা ও তার সভাপতি কেরামুদ্দিন করিম। যদিও তারা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

তার দাবি মেয়েদের যৌন হয়রানির কোনো ঘটনাটিই ঘটেনি। সোমবার পার্লামেন্টের উভয় কক্ষেই বিষয়টি উঠে এসেছে।

এরপর আরও বিস্ময়কর বক্তব্য দিয়েছেন আফগান অলিম্পিক কমিটির প্রধান হাফিজুল্লাহ রাহিমি। "যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটছে। এটা শুধু ফুটবলেই নয় অন্য ফেডারেশনগুলোতেও। আমাদের এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে"।

আর অভিযোগের বেশিরভাগই এসেছে আফগান নারী ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক খালিদা পপালের কাছ থেকে। তালেবান আমলে কিশোরী বয়সে ফুটবল খেলতে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েছিলেন তিনি।

পরে মৃত্যুর হুমকি পেয়ে দেশ ছেড়ে ডেনমার্কে বসবাস করতে শুরু করেন তিনি। ডেনমার্ক থেকে বিবিসিকে তিনি জানান যে তিনি মেয়েদের কোচ ও ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের দ্বারা শারীরিক ও যৌন হয়রানির শিকার হতে দেখেছেন। অনেক মেয়েই বিষয়টি তাকে জানিয়েছে।

"আর এ হয়রানির মধ্যে ধর্ষণ, যৌন স্পর্শ কিংবা হয়রানি সবই ছিলো"।

তিনি বলেছেন দুজন কোচের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগের প্রমাণ সংগ্রহের পরেও কিছু না হওয়ায় তিনি হতাশ হন।

"তাদের শাস্তি দেয়ার বদলে প্রমোশন দেয়া হয়েছে"।

বিবিসি পরে আফগানিস্তানে থাকা কয়েকজন নারী অ্যাথলেটের সাথেও কথা বলেছে। যাদের ইতোমধ্যেই যৌন হয়রানির তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে। আর ঘটনাগুলো ঘটছে জাতীয় দলে জায়গা পাওয়ার লড়াইকে কেন্দ্র করে।

বিডি২৪লাইভ/এআইআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: