ক্যামেরা হাতে কাঁদছিলেন নারী সাংবাদিক, তবু...

বিক্ষোভকারীদের তুলকালাম তাণ্ডব চলছিলো চারপাশে। তাদের নির্যাতনের হাতে ছাড় পাননি সাংবাদিকরাও। এর মধ্যে এক নারী সাংবাদিক দৌড়ে বেড়াচ্ছিলেন এদিক থেকে ওদিকে। প্রতিটি মুহূর্তকে তিনি চটপট ক্যামেরাবন্দি করছিলেন। কর্তব্যে অবিচল থাকা এবং সাহসিকতার নিদর্শন প্রকাশ পেল এই মুসলিম নারী সাংবাদিকের কাছ থেকে।

অন্যদের মতো বিক্ষোভকারীদের হাত থেকে বাঁচলেন না তিনিও। কিল-চড়-ঘুসি আছড়ে পড়ল তার উপর। সঙ্গে চলল চরম হেনস্থাও। ব্যথায় কঁকিয়ে উঠলেন। চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছিল। কিন্তু কাঁধ থেকে ক্যামেরা সরাননি। শত হেনস্থা সয়েও নিজের কর্তব্যে কিন্তু অবিচল থেকেছেন শাজিলা আব্দুল রহমান। শাজিলার সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পরই তার প্রশংসা করেন অনেকে।

ভারতের কেরালার কৈরালি টিভি চ্যানেলের চিত্র সাংবাদিক শাজিলা আব্দুর রহমান। এই কেরালায় শবরীমালা মন্দিরে নারী প্রবেশ নিয়ে চলছিল ব্যাপক বিক্ষোভ। প্রতিবাদ-বিক্ষোভে উত্তাল গোটা রাজ্য।

এমতাবস্থায় শবরীমালা মন্দিরে দুই মহিলার প্রবেশের পরেই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কেরলে। বিক্ষোভ চলছিল তিরুঅনন্তপুরমেও। সেই তাণ্ডবের ছবিই তুলতে গিয়েছিলেন চিত্র সাংবাদিক শাজিলা। কেরলের কৈরালি টিভি চ্যানেলের চিত্র সাংবাদিক তিনি।

তুঁতে রঙের সালোয়ার পরা, ডান কাঁধে ক্যামেরা, লেন্সে চোখ স্থির রেখে ছবি তুলছেন— এমনই একটি ছবি ভাইরাল হয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখেও তিনি সেই মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করছিলেন। তার উপর নজর পড়তেই রে-রে করে তেড়ে আসেন বিক্ষোভকারীরা। মারধর তো বটেই, চলে হেনস্থাও। ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ারও চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীরা। কিন্তু তিনি হাল ছাড়েননি। সেই অবস্থাতেই ছবি তুলে গিয়েছেন। তবে তার ঘাড়ে, পিঠে আঘাত লেগেছে বলে জানা গেছে।

শাজিলার সেই ছবি ভাইরাল হওয়ার পরই তার কর্তব্যে অবিচল থাকা এবং তার সাহসিকাতার বিপুল প্রংশসা আছড়ে পড়ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

এর আগে মহিলা সাংবাদিকরা শবরীমালায় ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের রোষের মুখে পড়ে পিছু হাঁটতে হয়েছিল তাদের। তবে শাজিলা বিক্ষোভকারীদের রক্তচক্ষুকেও যেন তার কর্তব্যের কাছে নতিস্বীকার করিয়ে ছেড়েছেন। চার দিকে এখন তাকে নিয়েই আলোচনা, তার সাহসিকতার প্রশংসার ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়ালে!

বিডি২৪লাইভ/এইচকে