ধানের শীষের প্রার্থীর কাছে পরাজিত হওয়ায় প্রার্থীকে বহিষ্কারের দাবি

প্রকাশিত: ১১ জানুয়ারি ২০১৯, ০৫:২০ পিএম

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আরেকটি আসনে জয় পেয়েছে বিএনপি। বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের স্থগিত তিন কেন্দ্রে পুনরায় ভোট গ্রহণের পর বিজয়ের মুকুট উঠল বিএনপির প্রার্থী আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার মাথায়।

এ নিয়ে বিএনপি মোট ছয়টি আসনে জয় লাভ করল। ধানের শীষ প্রতীকে ৮৩ হাজার ৯৯৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। তার নিটকতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মঈনউদ্দিন কলার ছড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ৭৫ হাজার ৪১৯ ভোট।

সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আওয়ামী লীগ নেতা মঈনউদ্দিন মঈনসহ তিন নেতার বহিষ্কার চেয়েছে আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ।

বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এমন দাবি তোলা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পড়েন উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক হাজি মো. ছফিউল্লাহ মিয়া।

বুধবার সন্ধ্যায় নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর রাতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের হাইওয়ে রেস্তোরা উজান ভাটি হোটেলের কনফারেন্স রুমে তাৎক্ষণিক এক সংবাদ সম্মেলন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মঈনউদ্দিন মঈন।

এ সময় তিনি বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালানোর অভিযোগে আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক হাজি মো. ছফিউল্লাহ মিয়াসহ দলের পাঁচ নেতার বহিষ্কারের দাবি জানান। পাশাপাশি সাত দিনের মধ্যে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল আলম তালুকদারেরও অপসারণ দাবি করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক হাজি মো. ছফিউল্লাহ মিয়া বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী মঈনউদ্দিন মঈন জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অমান্য করে মহাজোট প্রার্থীকে পরাজিত করা এবং দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার অপরাধে তাঁর বহিষ্কার দাবি করছি। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সব সময়ের জন্য বিদ্রোহী হিসেবে উল্লেখ করে আনিসুর রহমান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু নাছেন আহমেদের বহিষ্কার দাবি করেন তিনি।

এ সময় হাজি মো. ছফিউল্লাহ ষড়ন্ত্রকারীদের মিথ্যা প্রচারণা বন্ধ করে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান। পাশাপাশি তাঁরা নিজেরা এখন সংগঠন গোছাতে কাজ করবেন বলেও জানান তিনি।

এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হানিফ মুন্সি, মাহবুবুর রহমান, হাজি খোরশেদুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আবু সায়েদ, জাকির হোসেন বাদল, উপজেলা ও ইউনিয়নের নেতাকর্মীসহ স্থানীয় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত ৩০ ডিসেম্বর এ আসনের মোট ১৩২ কেন্দ্রের মধ্যে তিনটি কেন্দ্রে অনিয়ম ও গোলযোগের কারণে ভোটগ্রহণ স্থগিত রাখা হয়। তবে ১৩২ কেন্দ্রের ফলাফলে জয়ের দ্বারপ্রান্তে ছিলেন আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৮২ হাজার ৭২৩ ভোট আর স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মঈন উদ্দিন কলার ছড়ি প্রতীকে পান ৭২ হাজার ৫৬৪ ভোট। ফলে স্থগিত তিন কেন্দ্রের ভোট নিয়ে জেলাবাসীর আগ্রহ বেড়ে যায়।

বুধবার কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্য দিয়ে স্থগিত তিন কেন্দ্রে পুনরায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। তিন কেন্দ্রের ফলাফলে ধানের শীষ প্রতীকে সাত্তার পেয়েছেন ১ হাজার ২৭৪ ভোট আর কলার ছড়ি প্রতীকে মঈন পেয়েছেন ২ হাজার ৮৫৫ ভোট। এ তিন কেন্দ্রের নিরাপত্তায় মোতায়েন ছিল ৩৩৯ জন পুলিশ সদস্য, ৩৬ জন আনসার এবং দুই প্লাটুন বিজিবি ও দুই প্লাটুন র‌্যাব সদস্যরা।

ভোটের প্রথম প্রহরে আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর (দক্ষিণ) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাহাদুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও যাত্রাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটারদের সরব উপস্থিতি ছিল। তবে বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে কমতে থাকে ভোটারদের ভিড়। এ তিন কেন্দ্রের মোট ভোটার ১০ হাজার ৫৭৪ জন। আর আগে থেকেই ১০ হাজার ১৫৯ ভোটে এগিয়ে থাকায় জয় অনেকটা নিশ্চিত ছিল সাত্তারের।

উল্লেখ্য, গত ৩০ ডিসেম্বর অনিয়ম ও গোলযোগের কারণে সোহাগপুর (দক্ষিণ) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাহাদুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও যাত্রাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। পরে পুনরায় ভোট গ্রহণের জন্য ৯ জানুয়ারি নির্ধারণ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

বিডি২৪লাইভ/এআইআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: