প্রস্তুত আতিকুল, সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় তাবিথ

প্রকাশিত: ১৭ জানুয়ারি ২০১৯, ০৪:৩৪ পিএম

শাখাওয়াত হোসাইন: ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র পদে উপনির্বাচন এবং দুই সিটি করপোরেশনের ৩৬টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে নির্বাচন নিয়ে জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছেন উচ্চ আদালত। আদালতের এই আদেশের ফলে এ দুটি নির্বাচন করতে আর কোনো বাধা রইল না। আগামী মার্চে তফসিল ঘোষণা হতে পারে বলেও জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা।

রুলটি খারিজ হওয়ায় উপনির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থী নিয়ে হিসাব-নিকাশ শুরু করেছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে প্রস্তুত এফবিসিসিআইয়ের (ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি) সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলাম। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে গত ২১ ডিসেম্বর গুলশানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উত্তরের মেয়র প্রার্থী হিসেবে আতিকুল ইসলামকে পরিচয় করিয়ে দেন। এর পর থেকে মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী এই ব্যবসায়ী নেতা। আওয়ামী লীগ আগের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবে না—এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন আতিকুল ইসলাম।

এদিকে উপনির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তবে নির্বাচনে অংশ নিলে দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়ালই ধানের শীষের টিকিট পাবেন—এমন গুঞ্জন রয়েছে। এর আগে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার পর তাঁকে প্রার্থী ঘোষণা করেছিল বিএনপি। তবে

এবার প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তাবিথ আউয়াল।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি উপনির্বাচনে অংশ নেবেন কি না, তা নিয়েও রয়েছে সংশয়।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিএনসিসির মেয়র পদের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে আতিকুল ইসলামকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার পর দলের মহানগর উত্তর শাখার যেসব নেতা মনোনয়ন দৌড়ে ছিলেন, তাঁরা নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন। অন্যদিকে আতিকুল ইসলাম সভা-সমাবেশ করে রাজনীতির মাঠে নিজেকে পরিপক্ব করার চেষ্টা করছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের ছাড়াও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন তিনি।

আতিকুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমন্ত্রী সবার সামনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে আমার নাম ঘোষণা করেছেন। আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পেলে মেয়র পদে নির্বাচন করতে প্রস্তুত আছি।’

মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবীব হাসান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অনেক নেতার আগ্রহ ছিল মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ার। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর এখন কারো মধ্যে কোনো আগ্রহ নেই। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা কাজ করব।’

তাবিথ আউয়ালের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির হাইকমান্ড থেকে এ বিষয়ে কোনো কথা না বলতে তাবিথকে বলা হয়েছে। দলের হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তের পর তিনি গণমাধ্যমে এ নিয়ে কথা বলবেন।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি।

জোনায়েদ সাকি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মেয়রের মেয়াদ শেষ হবে ২০২০ সালের এপ্রিলে। এখন এই স্বল্প সময়ের জন্য নির্বাচনে যাব কি না, তা নিয়ে সংশয়ে আছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে করা রিট দুটি খারিজ হয়ে যাওয়ায় নির্বাচন দিতে বাধ্য নির্বাচন কমিশন। তবে তফসিল ঘোষণার পর দেখেশুনে সিদ্ধান্ত নেব।’

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক মারা যাওয়ায় মেয়র পদ শূন্য হয়। পরে প্যানেল মেয়র ওসমান গণি ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করছিলেন। গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর ওসমান গণিও মারা যান। এরপর প্যানেল মেয়র মো. জামাল মোস্তফা ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মেয়র পদে উপনির্বাচনের জন্য গত বছরের ৯ জানুয়ারি তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। একই সঙ্গে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে নতুন যুক্ত হওয়া ৩৬টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদের নির্বাচন ২৬ ফেব্রুয়ারি হওয়ার কথা ছিল; কিন্তু আদালতের আদেশে স্থগিত হয়ে যায় নির্বাচন। সূত্র: কালেরকন্ঠ।

বিডি২৪লাইভ/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: