মাত্র ৫৪ মিনিটেই ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম!

প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারি ২০১৯, ০৩:৫১ পিএম

বর্তমানে ট্রেনে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যেতে অনেকটা পথ ঘুরতে হয়। এতে ৩২১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়। তবে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে হাইস্পিড ট্রেন চালুর জন্য প্রস্তাবিত রেলপথের দৈর্ঘ্য হবে সর্বোচ্চ ২৩৩ কিলোমিটার। এতে নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা হয়ে সরাসরি চট্টগ্রাম যাবে ট্রেন। আর হাইস্পিড ট্রেনের গতি হবে সর্বোচ্চ ৩০০ কিলোমিটার। এতে মাত্র ৫৪ মিনিটেই ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়া যাবে। যদিও বর্তমানে এ রুটে সাধারণ ট্রেনে যাতায়াতে কমপক্ষে ছয় ঘণ্টা সময় লাগে।

সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন রেলপথ মন্ত্রণালয়ে জমা দেয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইস্পিড রেলপথ নির্মাণে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের সে প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

আগামী বছর নির্মাণ শুরু করলে ২০২৫ সালে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে হাইস্পিড ট্রেন চালু করা যাবে বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে।

এখনও নতুন রেলপথের রুট চূড়ান্ত করা হয়নি।

ভূমির ওপর দিয়ে রেলপথ নির্মাণে জমির বাড়তি ব্যবহার ও রেল চলাচলে নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে গতি সীমিত হয়ে পড়ে। এ কারণে রেলপথটি উড়ালপথে নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রথম, তৃতীয় ও চতুর্থ রুটে ছয়টি করে স্টেশন নির্মাণ করতে হবে। আর দ্বিতীয় রুটের ক্ষেত্রে স্টেশন হবে সাতটি। যদিও এক্ষেত্রে কুমিল্লা থেকে লাকসাম অংশটিতে কিছুটা জটিলতা রয়েছে। তবে ১০টি সূচকের ভিত্তিতে প্রথম রুটটি তথা ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, ফেনী হয়ে চট্টগ্রাম করিডোরে হাইস্পিড রেলপথ নির্মাণের জন্য সুপারিশ করে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান।

ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের জন্য ঘণ্টায় ৩০০ কিলোমিটার গতির রেলপথ নির্মাণের সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

চারটি রুটের ক্ষেত্রে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম বিরতিহীনভাবে যেতে সময় লাগবে যথাক্রমে ৫৬, ৫৭, ৫৫ ও ৫৪ মিনিট। আর প্রতি স্টেশনে দুই মিনিট করে বিরতি দিলে প্রস্তাবিত চার রুটে ঢাকা-চট্টগ্রাম করিডারে যাতায়াতে সময় লাগবে যথাক্রমে ৭০, ৭৬, ৬৯ ও ৬৮ মিনিট।

২০১৭ সালে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে দৈনিক গড়ে এক লাখ ৬২ হাজার ৩৯৬ জন যাতায়াত করেন। এর মধ্যে সড়কপথেই (বাসে ও ব্যক্তিগত গাড়িতে) যাতায়াত করেন দৈনিক গড়ে এক লাখ ১৩ হাজার ৭৯৬ জন। আর ট্রেনে দৈনিক গড়ে ৩৬ হাজার ৬১৬ ও বিমানে সাত হাজার ৪৩৯ জন। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে ২০৩০ সালে যাতায়াত করবে দুই লাখ ৮৬ হাজার ৪৭৭ জন ও ২০৪৫ সালে ছয় লাখ ২৮ হাজার ৮১ জন। ওই সময়ও এ রুটে সড়কপথেই নির্ভরতা থাকবে বেশি। এর মধ্যে ২০৩০ সালে সড়কপথে দুই লাখ সাত হাজার ২২১ ও ২০৪৫ সালে চার লাখ ৪৩ হাজার ৬৪৫ জন। ওই সময় রেলপথে যাতায়াত করবে যথাক্রমে ৭৯ হাজার ৬৫৬ ও এক লাখ ৩৩ হাজার ২৭৩ জন।

তবে হাইস্পিড ট্রেন চালু হলে রেলপথে যাত্রী পরিবহন সক্ষমতা অনেক বেড়ে যাবে। ২০৩০ সালে ৫০ জোড়া ট্রেনে দৈনিক এক লাখ ২৮ হাজার ৩১৪ জন যাত্রী পরিবহন করা যাবে। আর ২০৪৫ সালে ১৪৪ জোড়া হাইস্পিড ট্রেনে দৈনিক গড়ে তিন লাখ ২৮ হাজার ৪৫৫ জন যাত্রী যাতায়াত করতে পারবে। এতে সড়কপথের ওপর নির্ভরতা অনেকাংশে কমবে। এক্ষেত্রে সকাল ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত যাত্রীবাহী ট্রেন চালানো হবে এ রুটে।

যাত্রীবাহী ট্রেন ছাড়াও পণ্যবাহী হাইস্পিড ট্রেন এ রুটে চালানো যাবে। এক্ষেত্রে রাত ১১টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রেন চালানো হবে এ করিডোরে। এতে ২০৩০ সালে দৈনিক ১০ জোড়া ও ২০৪৫ সালে দৈনিক ২০ জোড়া ট্রেন চালানো যাবে। আর রাত ৩টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত রেলপথটির রক্ষণাবেক্ষণ ও নিয়মিত চেকিংয়ের কাজ করতে হবে।

উল্লেখ্য, ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইস্পিড রেলপথ নির্মাণে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ যৌথভাবে পরিচালনা করছে চায়না রেলওয়ে ডিজাইন করপোরেশন ও বাংলাদেশের মজুমদার এন্টারপ্রাইজ। এতে ব্যয় হচ্ছে ১১০ কোটি ১৬ লাখ টাকা। গত বছর ৩১ মে এ-সংক্রান্ত চুক্তি সই করা হয়। দেড় বছরের মধ্যে সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়াও বিস্তারিত নকশা প্রণয়নের কাজ করবে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান দুটি।

বিডি২৪লাইভ/এইচকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: