নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গাছ বিক্রি করছে ডেসটিনি

প্রকাশিত: ৩১ জানুয়ারি ২০১৯, ০৮:১০ পিএম

মানি লন্ডারিং সহ গ্রাহকের চার হাজার ১১৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ডেসটিনির বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)। ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমিন ও ডেসটিনি-২০০০ লিঃ এর চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ হোসেন সহ অনেকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আনা হয় মামলা গুলোতে।  

মামলা গুলো আমলে নিয়ে বিজ্ঞ আদালত ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড, ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড ও ডেসটিনি ট্রি-প্ল্যান্টেশনের নামে থাকা সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

এছাড়া ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীন, তাঁর স্ত্রী ফারাহ দীবা আমিন, ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনসহ ২২ কর্মকর্তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তিও জব্দ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। 
এদিকে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ডেসটিনি ট্রি-প্ল্যান্টেশনের শীর্ষ কর্মকর্তারা বাগানের পাহাদার ও সুপারভাইদের সাথে নিয়ে বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নের লম্বাশিয়া এলাকায় অবস্থিত ১৫০ একরের একটি বাগানের গাছ চুরি করে রাতের আধাঁরে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। 

ফাইতং লম্বাশিয়া বাগানের সুপারভাইজার মো. হারুণ বলেন, এই বাগানে রাবার, সেগুন, বেলজিয়াম, নারকেল ও কাঁঠাল সহ নানা প্রজাতির পুরাতন ও নতুন গাছ রয়েছে। বাগানে ৭জন গার্ড ও ১জন সুপারভাইজার কর্মরত আছে। ২০০৭ সালে জনৈক মামুন সাহেব থেকে ডেসটিনি গ্রুপ বাগানটি ক্রয় করে। সম্প্রতি বাগানের ১১শত ২০/২২ বছর বয়সী রাবার গাছ কেটে লাকড়ি হিসেবে স্থানীয় ব্রিকফিল্ডে বিক্রয় করতে আমাকে মোখিক নির্দেশ দিয়েছেন ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমিন ও ইঞ্জিনিয়ার মো. সাহেদ হোসাইন। আমি ঢাকায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এমডি রফিকুল আমিনের সাথে দেখা করতে গেলে তিনি গাছ কাটতে নির্দেশ দেন। ইতিমধ্যে প্রায় দুই শতাধিক রাবার গাছ কেটে ব্রিকফিল্ডে দেয়া হয়েছে।

বাগানের গার্ড আঃ মালেক, একরাম, মো. ইসকান্দর, গোলাম কাদের, তৈয়ব উদ্দিন হিরো বলেন, বাগানের জায়গার নামজারি, এমডি রফিকুল আমিনের চিকিৎসা ও আমাদের বকেয়া বেতনের দেয়ার জন্য বাগান কাটা হচ্ছে। এমডি রফিকুল আমিন গাছ কাটার মোখিক অনুমতি দিয়েছেন বলে আমাদের জানান ইঞ্জিনিয়ার মো. সাহেদ হোসাইন। 
ডেসটিনি ট্রি-প্লান্টেশনের বান্দরবান ম্যানাজার মো. শহীদুল ইসলাম কিরণ বলেন, বাগান কাটছে শুনলাম। ঢাকা থেকে এসে শীর্ষ কর্মকর্তারা গাছ কাটছে।

বাগানের দায়িত্বে থাকা ডেসটিনি গ্রুপের শীর্ষ কর্মকতা ইঞ্জিনিয়ার মো. সাহেদ হোসাইন বলেন, বাগানের জায়গার নামজারি সম্পন্ন, এমডি রফিকুল আমিনের চিকিৎসা ও কর্মচারীদের বকেয়া বেতন দেয়ার জন্য ১১শত রাবার গাছ লাকড়ি হিসেবে বিক্রয় করা হয়েছে। এমডি আমাকে মোখিকভাবে অনুমতি দিয়েছে। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বে গাছ কাটলেন কেন ? এমন প্রশ্নে তিনি উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান।

স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার থোয়াই হ্লাচিং মার্মা বলেন, ডেসটিনি বাগানের অসংখ্য রাবার গাছ কাটা হচ্ছে দেখেছি। বাগানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা গাছগুলো কাটছে।

লামা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অপ্পেলা রাজু নাহা বলেন, বিষয়টি আমি জানিনা। এখনি পুলিশ পাঠিয়ে বিষয়টি দেখছি। গাছ কাটার বিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। 

বিডি২৪লাইভ/এজে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: