একজন শিক্ষক-ছাত্রী নিয়ে স্কুলটি চলছে টিমটিম করে

প্রকাশিত: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১২:৫০ পিএম

ভারতের কলকাতার ঝাঁ চকচকে গুরুগ্রাম (গুরগাঁও) থেকে মাত্র ৬০ কিমি দূরে রেওয়ারি। গ্রামে সরকারি স্কুল থাকলেও, কোনও শিক্ষার্থী যায় না সেখানে। কেন জানেন? স্কুলে রয়েছেন মাত্র একজন শিক্ষক। আর তিনিই পড়ান সব বিষয়। অথচ তার নিজের বিষয় সমাজ বিজ্ঞান। শিক্ষক না থাকায় ছাত্রীদের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তায় অভিভাবকরা। তাই বাধ্য হয়েই দূরের সরকারি স্কুলে পাঠাতে হচ্ছে ছাত্রীদের। সেই স্কুলে অবশ্য শিক্ষার্থী নেই বললে ভুল হবে, আছে মাত্র একজন ছাত্রী!

শিক্ষক আর ছাত্রী একজন করে থাকলেও, নেই কোনও অশিক্ষক কর্মী। ফলে বিদ্যালয়ের যাবতীয় কাজ একজন শিক্ষককেই করতে হয়। আবার ওই একজন ছাত্রীর পড়াশুনার দায়িত্বও তাঁর। স্কুলটির শিক্ষক দয়া কিষাণ সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানান, ২০১৩ সাল থেকে এই স্কুলটিতে কর্মরত তিনি। সরকার তাকে এখানে কাজ করতে বলেছে, তাই কাজ করতে বাধ্য তিনি। অন্য কোথাও স্থানান্তরিত করা হলে, সেখানে চলে যাবে। তার কোনও সমস্যা নেই।

তিনি আরও জানান, স্কুলের এই দশা আগে ছিল না। বেশ কয়েকজন ছাত্রী এখানে পড়াশুনা করত। তবে ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমতে থাকে। গত মাসেও দুজন ছাত্রী ছিল স্কুলে। কিন্তু একজনের মৃত্যু হয়েছে। তারপর থেকেই একজন ছাত্রী নিয়ে স্কুলটি চলছে টিমটিম করে।

স্কুলের এই দুর্দশার জন্য তিনি শিক্ষকের অপ্রতুলতাকেই দায়ী করেন। তিনি বলেন, রাজ্যে শিক্ষকের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট কম। তাই এই স্কুলে এমন অবস্থা। অভিভাবকদের অসহায়তার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন শুধু শিক্ষক নয়, প্রয়োজনের তুলনায় কম রয়েছে অশিক্ষক কর্মীও। আর এই ছবিটা রাজ্যের প্রায় সবকটি সরকারি স্কুলে দেখা যায়।

লুখি গ্রামের প্রধান চন্দ্র হর্ষ যাদব বলেন, স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যা বাড়লেই ছাত্রীরা সেখানে ভরতি হবে। কিন্তু শিক্ষক না থাকলে পড়াবে কে? ছাত্রীদের ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন। যাদব আরও বলেন, এই সমস্যা নিয়ে বিডিওকে চিঠি দিয়েছেন তিনি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

এর আগে, জুন মাসে হরিয়ানার দশম শ্রেণীর ফল প্রকাশিত হলে দেখা যায়, হিসারের কাবরেল গ্রামের সরকারি স্কুল রেকর্ড করেছে। এই স্কুল থেকে ২৪ জন ছাত্রী দশম শ্রেণির পরীক্ষা দিয়েছিল। কিন্তু পাশের জন্য নির্দিষ্ট নম্বর কেউই তুলতে পারেনি।

শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক জানান, গতমাসে ফলাফল ঘোষণার পর দেখা যায়, ওই স্কুলের সব ছাত্রী অকৃতকার্য হয়েছে। তিনি যোগ করেন, এটিই একমাত্র স্কুল যা এত খারাপ ফল করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্কুলে নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষকের দাবিতে পঞ্চায়েত সদস্যরা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু কোনও ফল মেলেনি। জানা যায়, গত শিক্ষা বর্ষে স্কুলে সংস্কৃত, হিন্দি, বিজ্ঞান, অঙ্কে কোনও শিক্ষক ছিল না।

বিডি২৪লাইভ/এএস

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: