তিন মাস পর ক্লাসে ফিরল শিক্ষকরা

প্রকাশিত: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১১:০৬ পিএম

দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থার অবসান হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকরা সবাই ক্লাসে ফিরেছে। সোমবার সকল অনুষদে ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়েছে। টানা ১৫ ঘন্টা অবরুদ্ধ থেকে দফায় দফায় মিটিং শেষে রাত ১ টায় অচলাবস্থার অবসান হয়।

রেজিস্টার অধ্যাপক ড.শফিউল আলমের ৩১ মার্চের মধ্যে চুক্তি বাতিল,বহিস্কৃত দুইজন শিক্ষকের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার, তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ১৪/১১/১৮ এবং ২৯/১১/১৮ তারিখের ঘটনা সমূহের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ, বেতন বৈষম্যের সমাধানের জন্য ভিসি মহোদয় কর্তৃক ঘোষিত সর্বশেষ রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আন্দোলনরত ৫৭ জন সহকারী অধ্যাপকদের পে-স্কেল বাস্তবায়ন, ৩  সদস্য বিশিষ্ট সর্বজন গ্রহণযোগ্য দুটি তদন্ত কমিটি গঠন, ২,৩ ও ৪ নং সিদ্ধান্ত ১৮ ফেব্রুয়ারীর মধ্যে অফিস আদেশ জারি করা  এবং প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের অন্যান্য দাবি সমূহ ৩১ মার্চ ২০১৯ তারিখের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পদক্ষেপ নেয়ার শর্তে অচলাবস্থার অবসান হয়।

ইউজিসি কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য, প্রশাসন, সদ্য পদন্নোতি প্রাপ্ত শিক্ষকসহ প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রেখেছে সিএসই ও বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করে।

রবিবার(১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে ইউজিসি প্রতিনিধি দলের সাথে দফায় দফায় মিটিং করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশসন, ইনক্রিমেন্টের দাবীতে আন্দোলনরত পদন্নোতি প্রাপ্ত শিক্ষকরা, প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম। দিনব্যাপী মিটিং করলেও তারা কোন সমাধানের পথ খুঁজে পাননি তারা। ক্লাশ পরীক্ষা বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত না জানিয়ে সন্ধ্যা ৬ টার দিকে অডিটোরিয়াম-২ তে মিটিং শেষে বের হতে চাইল আগে থেকে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা অডিটরিয়ামের গেটে তালা লাগিয়ে দেয় । ফলে ভেতরে মিটিং এ থাকা সবাই অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। রাত ১ টা পর্যন্ত ইউজিসি কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য, প্রশাসন, সদ্য পদন্নোতি প্রাপ্ত শিক্ষকসহ প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের শিক্ষকরা  অবরুদ্ধ থাকে। পরে তারা সিদ্ধান্ত দিলে রাত ১ টার সময় তালা খুলে দেয় শিক্ষার্থীরা।

গত ১৪ নভেম্বর হতে পদন্নোতিপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা ইনক্রিমেন্টের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। তাদের সঙ্গে একাত্ম তা প্রকাশ করেন প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম। ফলশ্রুতিতে শিক্ষকদের আন্দোলনে প্রায় তিন মাস ধরে শিক্ষা কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয় । কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) অনুষদ ও বিজ্ঞান অনুষদের ক্লাস ও পরীক্ষা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এনিয়ে দফায় দফায় মিটিং করে শিক্ষার্থী-শিক্ষক-প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষার দাবি মেনে নিয়ে গত ২৭ জানুয়ারি থেকে ক্লাস-পরীক্ষা চালুর আশ্বাস দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন । কিন্তু সহকারী অধ্যাপক ও প্রগতিশীল শিক্ষকেরা তাদের দাবিতে অনড় থাকায় ক্লাস-পরীক্ষা চালু করতে চেয়েও পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ফলে ক্লাস-পরীক্ষা থেকে বঞ্ছিত শিক্ষার্থীরা।

ক্লাস ও পরীক্ষা চালুর দাবীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) অনুষদ ও বিজ্ঞান অনুষদের বিগত প্রায় ৩ মাস থেকে ক্লাস ও পরীক্ষা চালুর দাবিতে আন্দোলন করে আসছিল বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা। এ সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক ভবনে একাধীকবার তালা দেয়, উপাচার্যের বাস ভবন ঘেরাও এবং একাধীকবার মহা সড়ক অবরোধ করে। এরপরও কোন সুরাহা না হওয়ায় গত রবিবার সকাল ১০ টায় ইউজিসি কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য, প্রশাসন, সদ্য পদন্নোতি প্রাপ্ত শিক্ষকসহ প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের শিক্ষকরা অডিটোরিয়াম-২ এ আলোচনায় বসলে শিক্ষার্থীরা তাদেরকে পাহারায় বসে। সন্ধ্যায় কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই বের হয়ে যেতে চাইলে শিক্ষার্থীা অডিটোরিয়ামের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা জানায় যতক্ষন পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত হবেনা ততক্ষণ তালা খুলবেনা। পরে রাত ১ টার সময় সমঝোতায় পৌছালে তালা খুলে দেয়া হয়। সোমবার সকল শিক্ষক ক্লাসে ফিরে যায়। প্রাণ ফিরে পায় হাবিপ্রবি ক্যাম্পাস।

হাবিপ্রবির রেজিস্টার অধ্যাপক ড.শফিউল আলমের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান সকল সিদ্ধান্তের বিষয় অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে।

বিডি২৪লাইভ/এজে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: