মানুষ এখন ব্যাংকে আসতে ভয় পায়: অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১৪ মার্চ ২০১৯, ০৮:৩৩ পিএম

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, অনাকাঙ্খিত হলেও এটা ঠিক, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো কিছুটা বিপদে আছে। এক সময় ব্যাংক ছিল সবার প্রিয় জায়গা। আর মানুষ এখন ব্যাংকে আসতে ভয় পায়।

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) অগ্রণী ব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিরি এসব কথা বলেন। ব্যাংক খাতের পুরনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে কাজ করছেন বলেও এ সময় উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী।

অর্থমন্ত্রী বলেন, যারা দেশের বাইরে চলে গেছে, তাদেরকে বলবো- দেশে ফিরে আসুন। দেশে এসে ব্যবসা-বাণিজ্য করুন। ভালো ব্যবসায়ীদেরকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে।

আ হ ম মুস্তফা কামাল আরও বলেন, ‘এক সময় মানুষের প্রিয় এলাকা ছিল ব্যাংক। এখন মানুষ ব্যাংকে যেতে ভয় পায়। এ ভয় কাটাতে হবে। আমি অর্থমন্ত্রী হয়েছি ব্যাংকিং খাতকে গ্ল্যামার দেওয়ার জন্য।’

আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে রাজস্বের আওতা বাড়বে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকেই আছেন, যারা কর দেওয়ার সামর্থ রাখেন, কিন্তু তাদেরকে এতদিন কর দিতে হয়নি। এখন থেকে করের আওতা বাড়ানো হবে।’

আ হ ম মুস্তফা কামাল আরও বলেন, দেশের প্রতিটি পরিবারে অন্তত একজন করে লোককে কর্মক্ষম করে গড়ে তোলা হবে। তাদের মধ্যে হয়তো কাউকে সরকারি চাকরি, কাউকে বেসরকারি চাকরি, কাউকে কোনো ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে দেওয়া হবে।

মুস্তফা কামাল বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী স্থায়ী কোনো সমাধান না। প্রত্যেক পরিবার থেকে অন্তত একজনকে কর্মের সন্ধান দেওয়া হবে। সেটা সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি দিয়ে কিংবা, মুদি দোকান বা অন্য কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযুক্ত করে করা হবে। বেকার সমস্যা থেকে মানুষকে মুক্ত করার লক্ষ্যেই এটা করা হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের ৯৫ শতাংশই মন্দামানে শ্রেণিকৃত। এসব ঋণ আদায় জোরদার করতে হবে। এ জন্য শুধু মামলার ওপর ভরসা না করে বিকল্প উপায়ে টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করতে হবে।

অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত বলেন, খেলাপি ঋণ আদায়ের অন্যতম প্রতিবন্ধকতা উচ্চ আদালতে রিট নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রিতা। এজন্য আলাদা বেঞ্চ গঠন এবং রিটের সঙ্গে ডাউন পেমেন্টের শর্ত জুড়ে দেওয়া গেলে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হবে।

তিনি বলেন, ব্যাংক খাত এখন স্বল্প সুদে আমানত নিয়ে সিঙ্গেল ডিজিট সুদে বিতরণ এবং বৈদেশিক মুদ্রা সংকুলান করার চ্যালেঞ্জে পড়েছে। অগ্রণী ব্যাংক তার ব্যবসা সম্প্রসারণের মাধ্যমে এক্ষেত্রে উন্নয়নের চেষ্টা করছে। আদায় বৃদ্ধি এবং যাচাই-বাছাই করে নতুন ঋণ বিতরণের মাধ্যমে খেলাপি ঋণ ২০ শতাংশ থেকে ১৭ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।

ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ শামস-উল ইসলাম বলেন, এক বছরে ব্যাংকটির আমানত ১৮ শতাংশ বেড়ে ৬২ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা হয়েছে। ঋণে ২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়ে ৩৯ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা হয়েছে। রফতানিতে ১৭ শতাংশ এবং রেমিট্যান্সে ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এতে করে গতবছর ব্যাংকটি ৯৫৭ কোটি টাকার পরিচালন মুনাফা করেছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখ্ত ও অগ্রণী ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষক মো. সিরাজুল ইসলাম।

এতে সভাপতিত্ব করেন অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামস্-উল-ইসলাম।

বিডি২৪লাইভ/এইচকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: