কাঁদলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১৭ মার্চ ২০১৯, ০৬:৫৫ পিএম

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে জাতির পিতাসহ তার পরিবারকে নির্মমভাবে হত্যা করে ঘাতকরা। সেদিনের দুঃসহ স্মৃতি মনে করেই আবেগাপ্লুত হয়ে কাঁদলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ রবিবার (১৭ মার্চ) গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত জাতীয় শিশু দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যের সময় কেঁদে ফেলেন তিনি।

এ সময় জাতির পিতার স্বপ্নের কথা শিশুদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে সুন্দর দেশ হিসেবে গড়তে চেয়েছেন বঙ্গবন্ধু। এদেশের প্রতিটি শিশু শিক্ষা ও উন্নত জীবন পাবে এটাই ছিল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন। কিন্তু জাতির পিতা তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারলেন না। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে ঘাতকের বুলেট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। আমার মা, ভাই মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল, শেখ জামাল, তাদের স্ত্রী, ছোট ভাই শিশু রাসেল ও আমার একমাত্র চাচা শেখ আবু নাসেরকে হত্যা করে ঘাতকরা। তারা আমার তিন ফুফুর বাড়িতে আক্রমণ করে। তাদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। হত্যাযজ্ঞে প্রতিটি পরিবারের সদস্যরা নিহত হয়।

সেদিনের দুঃসহ স্মৃতি আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায়, বলেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী। চোখের পানি মুছতে মুছতে শেখ হাসিনা বলেন, আমি পরিবার হারিয়েছি, আপনজন হারিয়েছি। আমরা দুই বোন বিদেশে ছিলাম বলে প্রাণে বেঁচে যাই। কিন্তু সেদিন বাংলাদেশের মানুষ হারিয়েছিল তাদের বেঁচে থাকার সব সম্ভাবনা, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। ১৯৭৫ সালের পর আমাদের শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী কেউই মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। তবে সত্যকে কখনও মিথ্যা দিয়ে ঢাকা যায় না। সত্যের জয় একদিন হবেই। সেটাই প্রমাণ হয়েছে আজ, সত্য উদ্ভাসিত হয়েছে ঠিকই।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিশু প্রতিনিধি আরাফাত হোসেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নাহার, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার এএম আলী আজম ও গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ মোখলেসুর রহমান সরকার।

বক্তব্য শেষে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশুদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে প্রধানমন্ত্রীকে গোপালগঞ্জ জেলা ব্র্যান্ডিংয়ের লোগোর রেপ্লিকা প্রদান করা হয়। এরপর বঙ্গবন্ধুকে লেখা চিঠি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে সকাল সোয়া ১০টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জম্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়ায় সমাধিসৌধে বিনম্র শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিডি২৪লাইভ/এআইআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: