রাজধানীতে ফের পথচারী নিহত

প্রকাশিত: ২০ মার্চ ২০১৯, ১০:০৪ পিএম

আবরার আহম্মেদ চৌধুরী মৃত্যুর রেশ কাটতে না কাটতেই ফের রাজধানীর পল্টনে কুরিয়ার সার্ভিসের গাড়ী চাপায় এক পথচারী নিহত হয়েছেন।

বুধবার (২০ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর অভিযুক্ত চালককে আটক করা হয়েছে।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সকালে রাজধানীর বসুন্ধরায় যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে নদ্দা এলাকায় সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাসের চাপায় নিহত হন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরী। এ ঘটনার পর রাস্তায় নামেন শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। তাঁরা সেখানে সড়ক অবরোধ করে রাখেন। তাঁরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের বিচার দাবি করেন। আজ সকাল থেকে আবার ঘটনাস্থলে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আট দফা দাবি জানিয়েছেন। দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম তিনটি দাবি হলো—৩০২ ধারার অধীনে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চার্জশিট গঠন করে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের অধীনে দ্রুততম সময়ে অপরাধীর বিচার করতে হবে, সুপ্রভাত ও জাবালে নূর পরিবহনের সব বাসের রুট পারমিট বাতিল করতে হবে ও আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করে আন্ডারপাস, ওভারব্রিজ, জেব্রা ক্রসিং নির্মাণের পরিকল্পনা ঘোষণা ও গেজেট আকারে প্রকাশ করতে হবে।

বুধবার সকাল ১০টা থেকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার প্রবেশমুখের সড়কে অবস্থান নেয় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি), নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, আইইউবিসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েক শ শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে অবস্থান নেয়।

পরে বিকেলে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলামের সঙ্গে বৈঠক শেষে আন্দোলন স্থগিত করে শিক্ষার্থীরা।

বিকেলে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলামের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান বিইউপির আইন বিভাগের শিক্ষার্থী তাওহিদুজ্জামান।

তাওহিদুজ্জামান বলেন, আমাদের যেসব দাবি ছিল সেগুলো সময় সাপেক্ষে মেয়র মেনে নিয়েছেন। যে তিনটি দাবি ফোকাসিং ছিল তার মধ্যে রয়েছে, আইন প্রক্রিয়ার মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব (সর্বোচ্চ ৩০ দিন) আবরারের দুর্ঘটনার চার্জশিট দাখিল করতে হবে, পাশাপাশি আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সু-প্রভাত এবং জাবালে নূর বাসের সমস্ত রুট পারমিট বাতিল করতে হবে। জেব্রা ক্রসিং, বাস স্টপেজ ও ফুটওভার ব্রিজ যেখানে দরকার সেখানে তা নিশ্চিতের জন্য ৭ দিনের মধ্যে পরিকল্পনা নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, অন্য দাবিগুলো সময় সাপেক্ষে মেনে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। এসব প্রতিশ্রুতির শর্তে আমরা ২৮ মার্চ পর্যন্ত আন্দোলন স্থগতি করেছি। ২৮ মার্চ আবার আমরা মেয়রের সঙ্গে বসবো এবং কাজের অগ্রগতি জানবো। কাজের অগ্রগতি দেখে যদি সন্তুষ্ট না হয় তাহলে ২৮ মার্চ থেকে আবারও আমরা আন্দোলনে যাবো। আমরা নিরাপদ সড়ক চাই, নিরাপদ বাংলাদেশ চাই।

এরই মধ্যে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বিকেল পৌনে পাঁচচার দিকে প্রগতি স্মরনিতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করেন ঢাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর। তিনি এই আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকেও একাত্মতা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, এর আগে নর্থ সাউথ, ইস্ট-ওয়েস্টসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে হামলা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের রক্তাক্ত করা হয়েছে।

বিক্ষুব্ধ বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, এই আন্দোলনে আঘাত করা হলে ‘দাত ভাঙা’ জবাব দেওয়া হবে।

বিডি২৪লাইভ/এইচকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: