লাশকাটা ঘরেই থাকা-খাওয়া, এভাবেই ২৫ বছর!

প্রকাশিত: ২২ মার্চ ২০১৯, ১১:৩৭ এএম

প্রতিদিনই বাড়ছে দুর্ঘটনা, হত্যা কিংবা আত্মহত্যা এসব অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারণ উদঘাটনের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মামলার রায়ের ক্ষেত্রে এই রিপোর্ট উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। যে কারণে অভিজ্ঞ ডোম দিয়ে মৃতদেহের ব্যবচ্ছেদ করা হয় যাতে শরীরের আলামত নষ্ট না হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চারজন ডোম রুটিনমাফিক মৃত দেহ ব্যবচ্ছেদ করেন। তাদের একজন হলেন ফারুক হোসেন। দীর্ঘদিন ধরে ডোমের কাজ করছেন তিনি।

রাজধানীর চানখারপুল এলাকার বাসিন্দা ফারুক। ছোটবেলা থেকেই হাসপাতাল এলাকায় বিভিন্ন কাজ করতেন। এরপর ভাতা হিসেবে মর্গের কর্মচারী হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। এখন নিজেই ডোম হিসেবে কাজ করেন। প্রতিদিন অন্তত দুটি লাশ ব্যবচ্ছেদ করতে হয় ডোম ফারুক হোসেনকে।

ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমরা এই ডোমে ৪ জন ছিলাম, এখন তিনজন আছি। আমাদের কোন ভয় লাগে না মনের ভিতরে কোন কিছু জাগ দেয় না। রাতে এখানে থাকি এখানে ঘুমাই এখানেই খাই। সারাদিনে পাঁচটা ছয়টা সাতটা লাশ কাটি। ভয়ের কিছু নাই আমাদের তো একদিন মরতে হবে আমাদের এটা বেসরকারি চাকরি।’

এছাড়া ডোমের ইনচার্জ সেকেন্দার আলীর তিন পুরুষ এই মর্গেই কাজ করছে। তিনি জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ চালু হওয়ার পর তার দাদাকে ভারত থেকে আনা হয়। তারপর থেকে তারা এখানে আছেন। দাদা মারা যাওয়ার পর তার বাবাও এখানে কাজ করেছেন।

এখনে প্রায় ২৫ বছর ধরে সেকেন্দার আলী কাজ করছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে। সাথে রয়েছে দুই ভাই রামু ও রাজা এই কাজকে সেবা হিসেবে নিয়েছেন বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘এটা একটা সেবামূলক কাজ ও রাষ্ট্রের স্বার্থে করা এবং চাকরির স্বার্থে। এটা যদি আমি নাও করি আর একজন ঠিকই করবে। আর এটাতো কোন খারাপ পেশা না। পৃথিবীর সবচাইতে ভালো পেশা হচ্ছে ফরেনসিক পেশা। দামি পেশা। আমাদের এখানে এখন মূল্যায়ন হইতেছে আগে হয়নি। তারপরও আমরা মানুষের সেবার জন্য কাজ করতেছি।’

এই প্রতিবেদনটি বেসরকারি টেলিভিশনের একুশের চোখ অনুষ্ঠান অবলম্বনে করা হয়েছে।

বিডি২৪লাইভ/আইএইচ/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: