এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে ৩২০ ফুট কাঠের সেতু নির্মাণ

প্রকাশিত: ১০ এপ্রিল ২০১৯, ১০:১৭ পিএম

যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না থাকায় এলাকায় কেউ বিয়ে করাতে বা দিতে চায়না। এ এলাকার আত্মীয়রা বাড়ীতে আসা এক প্রকার ছেড়েই দিয়েছেন। আমাদের ছেলে-মেয়েরা স্কুল-কলেজে কষ্ট করে পড়াশোনা করছে। অসুস্থ্য রোগী হাসপাতালে নেয়ার আগেই মৃত্যুসহ বিভিন্ন প্রতিকুলতার অবসান ঘটাতে একাট্ট্রা হয়েছেন এলাকাবাসী।

স্বেচ্ছাশ্রমে নিজেদের গাছ দিয়ে পিলার করে কাঠের ব্রীজ নির্মানের কাজ শুরু করেছেন এলাকাবাসী। গত ৬ এপ্রিল থেকে জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের জামিরার পশ্চিম পার্শ্বে যমুনা নদীর শাখায় স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে এ কাঠের ব্রীজ নির্মানের কাজ শুরু হয়েছে।

গফুরের বাড়ীর সামনে থেকে জিকাতলা পর্যন্ত এ ব্রীজ নির্মানসহ ব্রীজের শেষ প্রান্তে একটি মাটির রাস্তা তৈরী করা হবে বলে জানাগেছে। আসন্ন বন্যার আগেই এ কাজ শেষ করা হবে বলে অতিদ্রুত কাজ হচ্ছে বলে এলাকাবাসী জানায়।

সরেজমিনে জানাগেছে, সরিষাবাড়ী উপজেলার চর সরিষাবাড়ী থেকে পৌরসভার ঝালুপাড়া ঘাট পর্যন্ত চলাচলের রাস্তা ও সেতু না থাকায় প্রায় দশ গ্রামের স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ এলাকার প্রায় ১২-১৫ হাজার মানুষ দৈনন্দিন চলাচলে সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছিল।

পৌরসভার ঝালুপাড়া ব্রীজ থেকে পশ্চিমে চর সরিষাবাড়ী স্কুল পর্যন্ত দুটি ব্রীজ নির্মানের গণদাবী এলাকাবাসীর পূরণ হয়নি। সে দাবীর স্থলে দাশের বাড়ী এবং চর সরিষাবাড়ী নয়াপাড়া গ্রামের মাঝখানে একটি ব্রীজ র্নিমানাধীন রয়েছে। অথচ নয়াপাড়ার পিছনের নদীর ব্রীজটি অত্যাবশ্যকীয় হলেও স্থানীয় প্রশাসন বা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিকট কোন গুরুত্ব বহন করেনি।

যে কারণে ব্রীজটি সরকারী ভাবে নির্মিত হচ্ছেনা। নিজেদের প্রয়োজনে নির্মানাধীন ব্রীজটি গফুরের বাড়ীর সামনে হইতে জিকাতলা পর্যন্ত কাঠের ব্রীজ করার ছক একেছেন অবহেলিত এলাকাবাসী। ব্রীজটি নির্মিত হলে এ রাস্তা দিয়ে সাতপোয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড়ের দেওয়া পাড়া, চর জামিরা ও ৩ নং ওয়ার্ডের অলি পাড়াসহ পোগলদিঘা ইউনিয়নের টাকুরিয়া, ব্রাক্ষনজানিসহ কাজীপুরের শালগ্রাম ও মাজনাবাড়ী এবং শালদহের ৯০% লোকের চলাচলে সীমাহীন দূর্ভোগ লাঘব হবে বলে জানাগেছে। উন্নয়ন বঞ্চিত হয়ে এলাকার বাসিন্দারা তাদের নিজ অর্থায়নে ও নিজেদের বাড়ীর আঙ্গীনায় কিংবা বাগানে লাগানো ইউকিলিপটার গাছ দিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে সেতুটি নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন।

পিলার দ্বারা ব্রীজ নির্মানের জন্য প্রায় ৭শতাধিক গাছের প্রয়োজন। এ ছাড়াও আরও প্রচুর কাঠ ও লৌহজাত দ্রব্য প্রয়োজন হবে। এর পরেও ব্রীজ নির্মান কাজটি শুরু করায় এলাকাবাসীর মাঝে উৎফুল্ল ভাব লক্ষ্য করা গেছে। ব্রীজটি ইউকেলিকটাস গাছের পিলার বানিয়ে ৩২০ ফিট লাম্বা ও ৬ ফিট প্রস্থ করন কাজে প্রায় ৮/১০ লক্ষ টাকা ব্যায় হবে বলে এলাকাবাসী ধারনা করছেন।

কাঠের ব্রীজ নির্মানের জন্য উপজেলার ১নং সাতপোয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু তাহের, সদস্য আলমগীর কবীর, সমাজ সেবক শরিফুল ইসলাম লিটন, জাহিদুল ইসলাম বাবলু, সোহেল রানাসহ অনেকেই এ উদ্যোগে নেন। এ কাজের স্বাগত জানিয়ে এলাকার নারী-পুরুষদের উৎফুল্ল্য মনে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে এ ব্রীজ নির্মান কাজের সার্বিক সহযোগীতায় শুরু করেছেন ।

জানতে চাইলে সাতপোয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহের জানান, আসন্ন বর্ষার আগেই কাঠের তৌরী সেতু দিয়ে এলাকাবাসী চলাচল করতে পারবে। আমাদের মাননীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মুরাদ হাসান সহ প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আর্কষণ করছি আমাদের এই আদি চর সরিষাবাড়ী দিয়ে নামকরন আমাদের এই সরিষাবাড়ী। তাই আমাদের চর সরিষাবাড়ী থেকে ঝালুপাড়া ঘাট পর্যন্তচলাচলের রাস্তা ও একটি ব্রীজ ইউনিয়নবাসীর পক্ষ থেকে দাবী জানিয়েছেন।

বিডি২৪লাইভ/এজে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: