জানাজা পড়তে গিয়েও আমরা সেলফি তুলি! বাহ্ বাহ্ 

প্রকাশিত: ১৩ এপ্রিল ২০১৯, ০৭:১৯ পিএম

প্রথমে শুরু করছি জার্মানি দিয়ে। প্রযুক্তির কল্যাণে জার্মানি নিত্য নতুন গাড়ি আবিষ্কার করে বিশ্বকে চমক দিচ্ছে। জার্মানির অগ্রগতির পর চলুন প্যারিস খ্যাত ফ্রান্স কি করছে তাও জানি। ফ্রান্স তাদের রেলওয়ে খাতে বিপ্লব ঘটিয়েছে, প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তারা বিশ্বের দ্রুততম ট্রেন তৈরি করেছে। প্রযুক্তির কল্যাণে বিশ্বে প্রথম ফ্রান্স কৃত্রিম হৃৎপিণ্ডও তৈরি করেছে।

বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীদের জীবনের সবচেয়ে লোভনীয় দেশ আমেরিকার খবর না দিলে তো বদনাম হবে, চলুন তার খবর জানাচ্ছি। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ আমেরিকার তরুণেরা প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে অনলাইন জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। প্রযুক্তি তাদেরকে জুকারসবার্গ, জেফ বেজস এর মত অর্থনৈতিক জায়ান্ট তৈরি করে দিয়েছে। নাসা আজ পৃথিবী ছেড়ে মঙ্গল গ্রহে জীবের বসবাস নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে।

রাশিয়া তাদের প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়েছে অস্ত্রখাতে, যেখানে তারা অস্ত্র বিক্রি করে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার অর্থ আয় করে।

ফিলিস্তিনের নিরীহ জনগোষ্ঠীর উপর অত্যাচার চালানো ইসরাইলকে চিনে না এমন মানুষ পাওয়া মুশকিল। মাত্র ৮৫ লাখ মানুষের দেশ ইসরাইল আজ তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে পুরো বিশ্বকে নাড়া দিচ্ছে। আরবদের নিজস্ব প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ না থাকলে ও ভাড়া করা প্রযুক্তিতে তারা বিশাল অট্টালিকা নির্মাণ করে যাচ্ছে।

আর সর্বশেষে নিজের দেশ নিয়ে চলুন ভাবি! আজ দেশে বেকারের সংখ্যা বেড়ে ২ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। এমন এক অবস্থায় এখন এই জাতির তরুণদের নিজের সিভি বানানোর যোগ্যতাটুকুন বেশীর ভাগের নেই। নিজেকে যোগ্য করে তোলার জন্য স্কিল বাড়ানোর জন্য কখনো কাজ শিখার আগ্রহ নেই বললেই চলে। কাজ না শিখে এই বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম চাকরির জন্য হাহাকার যেমন করছে তেমনি দিন দিন আসক্তি বাড়ছে ফেসবুক, টিকটকসহ নানা অ্যাপের প্রতি।

আগে রেস্টুরেন্ট ভিড় থাকতো না, এমনকি দামি খাওয়ারের প্রতি আগ্রহ ছিল না কারই। এখন সেলফি এসে রেস্টুরেন্টে ভিড় বাড়িয়েছে, এমনকি লোক দেখানোর জন্য হলেও দামি খাবারের দিকে ঝুঁকিয়ে পড়ছে। সেলফি রেস্টুরেন্ট পর্যন্ত থাকলেও চলতো, সেই সেলফি অসহায় আইসিইউ রোগী থেকে আগুন লাগা ভবন সব অতিক্রম করে এখন জানাজাতেও প্রবেশ করেছে।

আমাদের এই সমাজ গুগল ব্যবহার করে অথচ বাইরের তরুণ প্রজন্ম কতটা এগিয়েছে তা দেখার চেষ্টা করেনি। একবার ভাবুন? জানাজা পড়তে গিয়েও আমরা সেলফি তুলি! এমনকি লাশ কবরে প্রবেশ করছে তার সাক্ষী রাখার জন্য যে তরুণ সমাজ হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। তাদের হাতে ভবিষ্যৎ দেশ কতটা আগাবে এই প্রশ্ন রেখেই শেষ করছি।

লেখক: আরিফ রহমান শিবলী, দক্ষিণ এশিয়ার শিশু গণমাধ্যম প্রধান ও সিইও কিডস মিডিয়া

বিডি২৪লাইভ/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: