বৈশাখে রঙিন তারকারা

প্রকাশিত: ১৪ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:৪৩ এএম

বৈশাখ মানেই আনন্দ। বাংলা নববর্ষকে নতুন করে বরণের উৎসব আমাদের সংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য। বিশ্বের সকল প্রান্তের বাঙালী এ দিনে নতুন বছরকে বরণ করে নেয় একে অপরের প্রতি ভালবাসা আর সম্প্রীতির বন্ধনে। গ্রাম থেকে শুরু করে দেশের সব শ্রেণী পেশার মানুষ এই উৎসবে অংশ নেয়। পিছিয়ে নেই শোবিজ তারকারাও। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে শোবিজের কিছুসংখ্যক তারকাদের ভাবনা তুলে ধরা হয়েছে এই আয়োজনে।

কুমার বিশ্বজিৎ

পহেলা বৈশাখ মানে আনন্দ, উৎসব কিন্তু এখন আর সেটা উপভোগ করা হয় না। ছোটবেলা অনেক মজা করতাম। কাপড়-চোপড় উপহার পেতাম। সেটা পেলে নিয়ে যেতাম দর্জির কাছে। তখন তো রেডিমেট পেতাম না, কাপড় পেলে সেটাকে বানাতে হতো। তখন দর্জির দোকানের আশেপাশে ঘুরতাম শুধু কখন আমার কাপড়টা ধরে কখন শেষ করবে! শুধু ঘুরঘুর করতাম। আজকে হাত লাগাচ্ছে, কালকে বোতাম লাগাচ্ছে, পরশু বক্রম লাগাচ্ছে। এভাবে দেখতাম শুধু আর কখন পরবো এটা ভাবতাম। তখন যে আনন্দটা পেতাম এটা এখন আর পাই না। জামাটা তৈরি হওয়ার পর সেটাকে কে আবার আয়রন করাতে নিয়ে যাবে! তখন জামাটা বালিশের নিচে চাপা দিয়ে রাখতাম, আয়রন হয়ে যেত। আর উৎসবের আগে কাউকে জামা দেখানো যাবে না তাহলে উৎসব হবে না। তাই সব লুকিয়ে রাখতাম। জুতাগুলো খাটের নিচে লুকিয়ে রাখতাম। পরেরদিন বের করে পড়তাম। এই মজাটা এখনকার বাচ্চারা পায় না। আমাদের সময়টাতে আমরা যা করেছি তা তো এখন নেই। বিশ্বায়নের দোহাই দিয়ে এখন আমরা শেকড় থেকে বিচ্যুত হয়ে যাচ্ছি। সবকিছুই এখন সহজলভ্য হয়ে গিয়েছে। প্রাপ্তির যে মজাটা সেটারও মূল্য কমে গিয়েছে এখন। বিশ্বায়ন বিশ্বায়ন করতে করতে আমরা এখন বিশ্বের নাগরিক হয়ে গিয়েছি। আগে তো আমরা বাংলাদেশের নাগরিক ছিলাম, এখন আমরা বিশ্বের নাগরিক। যার ফলে এখন উৎসব আর উৎসব নেই। ঐতিহ্য, শিকড়, মূল্য সবই কমে গিয়েছে। সব সংস্কৃতি এক করাতে আনন্দটা বাড়লেও অনুভূতিটা কমে গিয়েছে।

ইমরান মাহমুদুল

বৈশাখ বলতে আমি বুঝি বাঙালীর একটা ঐতিহ্য যেটা সর্বজনীন। এদিন সবাই নিজেকে নতুন ভাবে আবিষ্কার করে, রঙিন করে সাজায়। আমার কাছে ঈদ উৎসবের পর সবচেয়ে বড় উৎসব মনে হয় এই পহেলা বৈশাখকে। আমি তো গানের মানুষ তাই এদিনটিকে গান দিয়েই সাজাতে পছন্দ করি। যখন ছোট ছিলাম তখন তো অনেক মজা করতাম, আনন্দ করতাম। বন্ধু বান্ধবদের সাথে ঘুরতাম কিন্তু এখন আর সেটা সম্ভব হয়ে উঠে না। আগের মত করে সেই মজাটা উপভোগ করতে পারি না। এ সময় স্টেজ প্রোগ্রাম থাকে তাই দর্শকদের ভালোবাসার টানে শোতে অংশগ্রহণ করি। তখন দর্শকদের আনন্দের মাঝেই নিজের আনন্দটা খুঁজে পাই। আর এই দিনটিতে বিশেষ করে নিজেকে একটু রঙিনভাবে সাজাতে পছন্দ করি। প্রত্যেকটা বাঙালীই সেদিন নিজেকে নতুনভাবে রাঙিয়ে তুলে। আমি ও আমার ব্যান্ডের সদস্যরা যখন রঙিন পোশাক পরিধান করে পরিপাটি হয়ে শো করতে যাই তখন রাস্তায় যেদিকে তাকাই সবকিছুই রঙিন মনে হয়। ছোট ছোট ছেলে মেয়ে থেকে শুরু করে সবাই নিজেকে নতুন রঙে রাঙায়! এগুলো যখন দেখি খুবই ভালো লাগে। এবারের বৈশাখেও গান নিয়েই থাকবো। সেদিন রাজশাহীতে শো করবো। আর বৈশাখে আমার দর্শকদের জন্য নতুন গান থাকবে।

সিয়াম আহমেদ

পহেলা বৈশাখ বাঙালী জাতির জন্য একটি ঐতিহ্যবাহী দিন। দিনটিতে সবাই নিজেদের নতুনভাবে রাঙিয়ে তুলে। ছাত্রজীবনে বৈশাখের দিন অনেক অনেক আনন্দ করতাম। আমি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসায়ী অনুষদ বিভাগে পড়াশোনা করতাম। তখন আমাদের ক্যাম্পাসে বৈশাখ নিয়ে উৎসব হতো, বন্ধুদের সাথে নিয়ে দিনটি উদযাপন করতাম। কিন্তু এখন আর সেটা করতে পারি না। এখন কর্মজীবী হয়েছি! অফিস করছি, শুটিং করছি আর পরিবারকে সময় দিচ্ছি। এখন বৈশাখটা এভাবেই কেটে যায়। আর এখন তো পরিবার বড় হয়েছে তাই এবারের বৈশাখ পরিবারের সাথেই কাটাবো। আমার স্ত্রী অবন্তী আছে তাকে সময় দিব, তাকে নিয়ে ঘুরতে বের হবো। এদিন অন্য কোন প্রোগ্রাম রাখবো না। পুরো দিনটা শুধু পরিবারের জন্য থাকবে। ক্যাম্পাস লাইফের আনন্দটা এখন আর পাই না। আর যদিও পাই সেটা ভিন্ন। তখন সব বন্ধুরা মিলে কনসার্ট দেখতে যেতাম আনন্দ উল্লাস করতাম। তখন যাদেরকে দেখার জন্য অপেক্ষা করতাম এখন তাদের সঙ্গে একসাথে স্টেজে পারফর্ম করি। এটা ভাবতেও ভালো লাগে।

বিডি২৪লাইভ/আইএন/আরআই

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: