১৫ লাখ টাকা যৌতুকেও শেষ রক্ষা হয়নি বৃষ্টির, লাশ হয়ে পুড়ল চিতায়!
ছেলে উচ্চশিক্ষিত বেশ ভালো চাকুরে। ব্যাঙ্ক কর্মকর্তা। তাই অমত ছিলো না। মেয়ে এখানেই সুখে থাকবে। এমনটাই ভেবেছিলেন কুমিল্লার মুরাদ নগরের শ্যামল চৌধুরী। যে ভাবা সে কাজ। বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক। আদরের মেয়ে বৃষ্টি চৌধুরীকে মহা ধুমধামে বিয়ে দেন তিনি।
বিয়েতে মেয়ের সুখের কথা বিবেচনায় নগদ ১৫ লাখ টাকা এবং ৭ ভরি স্বর্ণালঙ্কারও দিয়েছিলেন ব্যাঙ্ক কর্মকর্তা পাত্র সুদীপ রায়কে। কিন্তু যে বাড়িতে মেয়ে সুখী হবে ভেবে পাঠিয়েছিলেন সেই বাড়ি থেকে দু’ বছরের মাথায় মেয়ের লাশ বয়ে নিয়ে যাবেন তা তো কল্পনাতেও আনেননি শ্যামল চৌধুরী। তারপরও নির্মম বাস্তবতায় হাসি খুশি ভরা আদরের মেয়ের লাশ কাঁধে করে শ্মশান ঘাটে নিয়ে যেতে হয়েছ হতভাগ্য পিতা শ্যামল চৌধুরীকে।
শনিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরের দিকে বৃষ্টি চৌধুরীর ময়না তদন্ত শেষ করেছে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল। এরপরই মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দুপুর তিনটার দিকে মাসদাইর শ্মশান ঘাটে বৃষ্টি চৌধুরীর অন্তিমক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে, জানিয়েছেন নিহতের বড় ভাই মিঠুন চৌধুরী। তার সাথে উপস্থিত রয়েছেন পিতা শ্যামল চৌধুরীসহ আত্মীয় স্বজন।
১২ এপ্রিল বিকেলে ব্যাঙ্ক কর্মকর্তা স্বামী সুদীপ রায়, শ্বশুর সুভাষ চন্দ্র রায়, শাশুড়ি চিত্রা রানী রায় এবং ননদ ডেইজী সাহার নির্মম নির্যাতনে নিহত হয়েছেন বৃষ্টি চৌধুরী। এমন অভিযোগ এনে নিহতের ভাই মিঠুন চৌধুরী এদিন রাতেই নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় এই চারচনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ স্বামী ও শ্বশুরকে গ্রেফতার করেছে।
মিঠুন চৌধুরী জানান, বৃষ্টিকে বিয়ে দেওয়ার সময় ১৫ লাখ টাকা ও ২০ ভরি স্বর্ণালংকার যৌতুক হিসেবে দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু বিয়ের পরে আরও যৌতুকের জন্য বৃষ্টিকে প্রায় মারধর করতো তার স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এসব নিয়ে কয়েকবার বিচার সালিশ হয়েছিল। শুক্রবার স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদ মিলে নির্যাতন করে বৃষ্টিকে হত্যা করে।
আর্য নামে বৃষ্টির ৮ মাসের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। তবে, সে কার কাছে থাকবে, কুমিল্লা নিয়ে যাবে না এখানেই থাকবে সে বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন মিঠুন চৌধুরী।
তবে, বৃষ্টির স্বামী সুদীপ রায় তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, পারিবারিক ঝগড়ার জের ধরে শুক্রবার দুপুরে ঘরের দরজা বন্ধ করে রাখে বৃষ্টি। বিকেলে ডাকাডাকির পরেও দরজা না খোলায় তালা ভেঙে ভেতরে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় বৃষ্টিকে পাওয়া যায়। পরে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।
নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডা. নুরুজ্জামান জানান, মৃতের শরীরে আঘাতের চিহ্নসহ গলায় দাগ পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর মূল কারণ বলা যাবে।
সদর মডেল থানা পুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম। তিনি জানান, নিহতের ভাই শুক্রবার রাতে চারজনকে আসামী করে মামলা করেছে। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
বিডি২৪লাইভ/এআইআর
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: