এডিসি জেনারেল তরফদার আক্তার জামীলকে বদলি

প্রকাশিত: ১৭ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:৫১ পিএম

কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) উপসচিব তরফদার মোঃ আক্তার জামীলকে ভূমি মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়েছে। পদায়ন করা হয়েছে বরিশাল ভূমি সংস্কার বোর্ডের উপ-ভূমি সংস্কার কমিশনার পদে। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রেষণ-১ অধিশাখা থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এই বদলির আদেশ জারি করা হয়েছে।

উপসচিব মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আগামী ২৩ এপ্রিল তারিখের মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থলে তাঁকে যোগদান করতে হবে। অন্যথায় ২৩ এপ্রিল অপরাহ্ণে বর্তমান কর্মস্থল থেকে তাৎক্ষণিকভাবে অবমুক্ত বলে গণ্য হবেন।

তরফদার মোঃ আক্তার জামীল ২০১৫ সালের ২রা সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) হিসেবে যোগদান করেন। এখানে কর্মরত অবস্থাতেই ২০১৭ সালের ২৪ এপ্রিল তিনি উপসচিব পদে পদোন্নতি লাভ করেন।

কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সাথে কাজ করে গেছেন। কিশোরগঞ্জ জেলাবাসীর কাছে খুবই পরিচিত একটি নাম- তরফদার মোঃ আক্তার জামীল।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) উপসচিব তরফদার মোঃ আক্তার জামীলের নেতৃত্বে কিশোরগঞ্জে একের পর এক বাল্যবিয়ে বন্ধ হয়। কাকডাকা ভোর, তপ্ত দুপুর কিংবা নিঝুম রাত যখনই হোক, বাল্যবিয়ে আয়োজনের খবর শোনামাত্রই সেই বাড়িগুলোতে হাজির হয়ে তা বন্ধ করছেন তরফদার মোঃ আক্তার জামীল।

কিশোরগঞ্জে যোগদানের পর থেকেই বাল্যবিয়ের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে ছিলেন তরফদার মোঃ আক্তার জামীল। যেখানেই বাল্যবিয়ে আয়োজনের খবর পেয়েছেন, সেখানেই ছুটে গেছেন। শহরের অলিগলি থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত জনপদ সর্বত্রই বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সোচ্চার থেকেছেন তিনি। গাঁয়ের মেঠো-কর্দমাক্ত পথ মাড়িয়েও তিনি বন্ধ করেছেন একাধিক বাল্যবিয়ে। এমনও হয়েছে দিনে একাধিক বিয়েবাড়িতে তিনি হানা দিয়েছেন।

বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে অবহিত করেছেন বর ও কনে পরে লোকজনসহ এলাকাবাসীকে। তাঁর সুন্দর উপস্থাপনায় মুগ্ধ হয়ে দুই পক্ষের অভিভাবকেরাই বিয়ে বন্ধ করে দেন। তিনি ফোনেও ঠেকিয়েছেন অসংখ্য বাল্যবিয়ে।

এর বাইরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিতে তিনি চষে বেড়িয়েছেন জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যোগ দিয়েছেন বাল্যবিয়ে বিরোধী প্রচারণা ও বাল্যবিয়েকে লালকার্ড কর্মসূচিতে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনটিও বাদ যায়নি তাঁর। প্রায় প্রতি শুক্রবারই তিনি ছুটে গিয়েছেন মসজিদে মসজিদে। মুসল্লিদের মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছেন বাল্যবিয়ের কুফলের নানা দিক। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে তিনি অসংখ্য উঠান বৈঠকও করেছেন। তাঁর এমনসব কার্যকর পদক্ষেপে জনসচেতনতা বেড়েছে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে।

বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ ছাড়াও তরফদার মোঃ আক্তার জামীল পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং ধুমপান বিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছেন অত্যন্ত সাহসিকতা ও নিষ্ঠার সাথে।

এছাড়া প্রতিবন্ধী, বিধবা ও হতদরিদ্র মানুষের কল্যাণে নানামুখী পদক্ষেপ ও তৎপরতা চালিয়ে গেছেন তরফদার মোঃ আক্তার জামীল। যোগ দিয়েছেন নানা সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে। এসব নানা কারণে কিশোরগঞ্জের নানা শ্রেণী-পেশার মানুষের কাছে তিনি ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয়।

বিডি২৪লাইভ/এজে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: