টাঙ্গাইলে ১৭ দিনে ধর্ষণের শিকার ৫
চলতি বছরের এপ্রিল মাসের শুরু থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন উপজেলায় পাকিস্তানী মেয়েসহ ধর্ষণ ও গণধর্ষণের শিকার হয়েছে ৫ জন। এছাড়া শিক্ষক কর্তৃক ধর্ষণ চেষ্টার শিকারসহ ৬ জন ছাত্রী-কিশোরী, তরুণী ও গৃহবধূ শ্লীলতাহানির স্বীকার হয়েছে। জেলার ৫টি উপজেলায় ধর্ষণ ও ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনা ঘটে।
জেলার ৫টি উপজেলায় এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। সংক্ষিপ্তে তা নিম্নে তুলে ধরা হল:-
ঘটনা-১। গত সোমবার (১ এপ্রিল) দুপুরে ভূঞাপুর উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নে বাসুদেবকোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে ৪র্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া এক স্বুল ছাত্রীতে কু-প্রস্তাব ও বুকে জড়িয়ে ধরে শরীরের আপত্তিকর স্থানে হাত দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। রোববার (০৭ এপ্রিল) দুপুরে ভুক্তোভোগি স্কুল ছাত্রী ও পরিবার প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ভূঞাপুর থানা বরাবর একটি অভিযোগ ও মামলা দায়ের করেন। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক উপজেলার ফলদা ইউনিয়নের (চন্ডিপুর) গ্রামের বাসিন্দা। বিডি২৪লাইভকে ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঝোটন চন্দ ও থানা অফিসার ইনচার্জ অফিসার মো. রাশিদুল ইসলাম এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনা-২। সখীপুরে প্রেমিকের সামনে প্রেমিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। প্রেমিকাকে ধর্ষণের প্রধান আসামী মো. সাদ্দাম (২৭) কে গ্রেফতার করেছে টাঙ্গাইল র্যাব-১২ এর সদস্যরা। গত শুক্রবার (০৫ এপ্রিল) ভোরে টাঙ্গাইল পৌর শহরের নতুন বাস স্ট্যান্ড এলাকার রাঙ্গামাটি কর্টেস থেকে ওই আসামীকে গ্রেফতার করা হয়। পরে বিকেল বেলা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন টাঙ্গাইল র্যাব-১২ সিপিসি-৩ এর কোম্পানী কমান্ডার মো: শফিকুর রহমান।
ঘটনা-৩। স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ। জানা যায়, টাঙ্গাইল নতুন বাস স্ট্যান্ড এলাকার ডিসি লেকসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে পাল্লাক্রমে গণধর্ষণের শিকার হয় এক নারী। শুক্রবার (১২ এপ্রিল) রাত ৯ টা দিকে পৌর শহরের ডিসি লেকে এ ঘটনা ঘটে। রাতেই ধর্ষিতা স্বামী এ বিষয়টি টাঙ্গাইল মডেল থানা পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ভোর রাতে ৬ জন ধর্ষককে আটক করে। পলাতক ২ জন। টাঙ্গাইল মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সায়েদুর রহমান বিডি২৪লাইভ কে নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনা-৪। গোপালপুরে সিনেমার নায়িকা বানানোর কথা বলে ও প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক কলেজ ছাত্রীকে (১৯) আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত আকাশ ওরফে ফারুক শিকদারকে আটক করেছে পুলিশ। ধর্ষক আকাশ ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী থানার মাইটকুমরা গ্রামের কাইয়ুম শিকদারের ছেলে। এ ঘটনায় রোববার রাতে গোপালপুর উপজেলার ভোলারপাড়া গ্রামবাসী ছাত্রীকে উদ্ধার করে অভিযুক্ত ধর্ষককে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দেয়। পরে রোববার (১৪ এপ্রিল) গভীর রাতে মেয়ের বাবা বাদি হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আকাশকে প্রধান আসামী করে তার সহযোগী অজ্ঞাত আরো দু’জনের বিরুদ্ধে গোপালপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সোমবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে অভিযুক্ত আসামী আকাশকে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ বিষয়টি সত্যতা বিডি২৪লাইভকে নিশ্চিত করেছেন গোপালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ হাসান আল-মামুন।
ঘটনা-৫। প্রেমিকাকে বৈশাখী মেলায় বেড়াতে গিয়ে কৌশলে বন্ধুর বাড়িতে নিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নাগরপুরে একাধিবার এক ছাত্রীকে (১৬) ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ধর্ষণকারী ও ধর্ষণে সহযোগিকে আটকে রেখে পুলিশে সোপর্দ করে স্থানীয়রা। ধর্ষণকারী হলেন- উপজেলার বেকড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রউফের ছেলে মোবারক হোসেন (২০) ও তার সহযোগি একই উপজেলার চৌবাড়িয়া গ্রামের মৃত আব্দুল মিয়ার ছেলে রাজিব মিয়া কালু (২২) আটক। রোববার (১৪ এপ্রিল) উপজেলার চৌবাড়িয়া বন্ধু রাজিবের বাড়িতে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। পরে সোমবার দিবাগত গভীর রাতে ধর্ষিতার বাবা ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করেন। নাগরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আলম চাঁদ এ ধর্ষণের খবরটি বিডি২৪লাইভে নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনা-৬। পাঁচ আগে ৬ মাসের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় কিশোরীর মা ও তার মেয়ে নিয়ে পাকিস্তান চলে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেন। এ খবরটি জানতে পায় বখাটে আল-আমিন। তারপর ক্ষুদ্ধ হয়ে গত (১৭ এপ্রিল) গভীর রাতে একদল সন্ত্রাসীর সহযোগিতায় হুমেরা বাবু কিশোরীকে কৌশলে তার কাকার বাড়ি থেকে অপহৃরণ করে তুলে নিয়ে যায়। এরপর জামালপুরেরর বিভিন্ন স্থানে নিয়ে একাধিকার ধর্ষণ করে স্কুল ছাত্রী ওই কিশোরীকে। জানা যায়, ওই কিশোরীর গ্রামের বাড়ি অর্থাৎ তার মায়ের স্বামীর বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার উত্তর গোপালপুর উপজেলায় বাসিন্দা। তারা পাকিস্তানের নিউ করাচির সুপার হাইওয়েজ রোডের নাগরিক। গোপালপুর থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত (১৭ এপ্রিল) আল-আমিনসহ তিনজনকে আসামী করে কিশোরীর মা গোপালপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। পরে থানা পুলিশ গোপন সুত্রে খবর পেয়ে গত বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) ভোর রাতে জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলার মহিষাকান্দি মোড়ের এক বাসা থেকে বন্দীবস্থায় ধর্ষিতা কিশোরীকে উদ্ধার করেন পুলিশ।
বিডি২৪লাইভকে এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গোপালপুর থানা তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আসলাম উদ্দিন জানান, ধর্ষিতা কিশোরীকে উদ্ধার করে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করে তার মেডিক্যাল পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। এদিকে ধর্ষিতা বাংলা বলতে না পারায় এবং দো-ভাষী না পাওয়ায় বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) আদালতে ধর্ষিতার ২২ ধারায় জবানবন্দী নেওয়া যায়নি। আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এ ছাড়াও ভূঞাপুরে মেয়েদের উত্ত্যক্ত ও শরীরে বডি স্প্রে করার অপরাধে পাঁচ (ইভটিজিং) বখাটেদের অর্থদণ্ড অনাদায়ে কারাদন্ড প্রদান করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্যাট ঝোটন চন্দ।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে বিভিন্ন অংকে ইভটিজিংকারীদের অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
বিডি২৪লাইভ/আরআই
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: