যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে দূর্বিসহ চরাঞ্চলের মানুষ

প্রকাশিত: ২৩ এপ্রিল ২০১৯, ০১:০০ পিএম

মোঃ জুয়েল রানা,
কুড়িগ্রাম থেকে:

কুড়িগ্রাম জেলার চরাঞ্চলগুলির মানুষ যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে দূর্ভোগসহ দূর্বিসহ জীবন যাপন করছেন। যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় স্বাস্থ্য সেবা ও শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এসব চরাঞ্চলের মানুষ।  

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলার চর নারায়নপুর, ভগবতীপুর, ঝুনকার চর, রলাকাটা, পোড়ার চর, দই খাওয়া, সাহেবের আলগা, জাহাজের আলগা, কালার চর, গোয়ালপুরী, কালির চর, আইরমারী, তিন হাজারী, চিড়া খাওয়া, বেরুবাড়ী, শান্তির চর, বউ ভাসাসহ ভূয়াপুর চরের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় নানা রকম দূর্ভোগসহ দূর্বিসহ জীবন যাপন করছেন।

এসব চরের মানুষজন কয়েক কি.মি. বালু বেষ্ঠিত পথ পায়ে হেঁটে নিজ নিজ নৌকা ঘাটে আসেন। সে সব ঘাট থেকে নৌকা যোগে নদী পাড়ি দিয়ে চলে যান যাত্রাপুর ঘাটে। যাত্রাপুর ঘাট থেকে আবার বালু বেষ্ঠিত ২ কি.মি. পথ পায়ে হেটে চলে যান যাত্রাপুর হাটে। সেখান থেকে পুনরায় অটো রিকসা যোগে চলে যান কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন স্থানে। কেউ কেউ চলে যান নিজ নিজ কর্মস্থলে। এছাড়াও শিক্ষার্থীরা চলে যান তাদের নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। অসুস্থ্য কিংবা মুমূর্ষ রোগীদের নিয়ে যাওয়া হয় কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালসহ দেশের বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে।

এ বিষয়ে যাত্রী মোঃ নজরুল ইসলাম (২৭), আব্দুল কুদ্দুস (৩৫), আমেনা বেগম (৩৩), মনছের আলী (৫৫) জানান, বিভিন্ন চর থেকে আগত মুমূর্ষ রোগীরা নদী পাড়ি দিয়ে যাত্রাপুর ঘাটে আসতে কিংবা যাত্রাপুর ঘাটে এসেই যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে সময় মত জেলা শহরে পৌছাতে না পারায় ঘাটেই রোগীর মৃত্যু হয়। অনেক গর্ভবতী মাকে বাচ্চা প্রসবের জন্য মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার আগেই ঘাটেই বাচ্চা প্রসব করেন কিংবা প্রসব ব্যাথায় মারা যান। এসব মুমূর্ষ রোগী কিংবা গর্ভবতী মাকে বিভিন্ন চরাঞ্চল থেকে চৌকিতে করে ভাড় সাজিয়ে নিজ নিজ নৌকা ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। অনেক সময়ই প্রতিকূল অবহাওয়ার কারণে ঘাটে নৌকা থাকে না। ইমার্জেন্সী ক্ষেত্রে কিংবা মুমূর্ষ রোগীকে শহরে নিতে চাইলে ৫শ থেকে ৭শ টাকায় নৌকা রিজার্ভ নিয়ে নদী পাড়ি দিতে হয়।

ঢাকাগামী শ্রমিক মোহাম্মদ আলী (২৭), শাহালম (২৫), হাফিজুল (৩৩) ও রফিকুল (৫২) জানায়, আমরা বিভিন্ন চর থেকে গরম উত্তপ্ত বালুকাময় পথ হেটে নিজ নিজ নৌকা ঘাট থেকে নৌকা যোগে নদী পাড়ি দিয়ে যাত্রাপুর ঘাটে এসেছি। এই ঘাটে আসতে আমাদের নানা রকম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। পথ হাটাসহ নদী পাড়ি দিতে সময় লাগে প্রায় ৪ ঘন্টা। আবার কুড়িগ্রাম থেকে নৈশ কোচ যোগে ঢাকা পৌছাতে সময় লাগে সব মিলিয়ে প্রায় ২০ ঘন্টা।    

এ ব্যাপারে যাত্রাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আইয়ুব আলী সরকার জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে এসব চরাঞ্চলের মানুষ নানা রকম দূর্ভোগে ভোগেন। সময় মত কিংবা জরুরী প্রয়োজনে অন্যত্র যেতে পারেন না। মুমুর্ষ রোগীগুলি অনেক সময়ই ঘাটেই মৃত্যুবরণ করেন। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হলে এসব চরাঞ্চলের মানুষের জীবনমানের উন্নতি হবে বলে তিনি মনে করেন।

বিডি২৪লাইভ/এজে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: