মুখ চেপে সেলফি, জীবন দিলো স্কুলছাত্রী

প্রকাশিত: ২৪ এপ্রিল ২০১৯, ১২:৫৫ এএম

সরিষাবাড়ীতে মুখ চেপে ধরে এক বখাটে সেলফি তোলায় অপমানে জীবন দিলো ৭ম শ্রেণির মেধাবী   ছাত্রী অন্তরা সাহা। সোমবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলার সাইঞ্চার পাড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রিয়াদুজ্জামান (৩০) নামের এক জনকে আটক করেছে পুলিশ। ছাত্রীর পরিবার, স্থানীয় এবং পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সরিষাবাড়ী পৌরসভার মূলবাড়ী এলাকার মতিউর রহমান তালুকদারের  ছেলে সরিষাবাড়ী টেকনিক্যাল এ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইন্সটিটিউটের ব্যাংকিং বিষয়ে ১ম বর্ষের ছাত্র তৌহিদুর রহমান (তানিন তালুকদার) পার্শ্ববর্তী সাইঞ্চারপাড় গ্রামের কসমেটিক ব্যবসায়ী নারায়ণ চন্দ্র সাহার মেয়ে সরিষাবাড়ী সালেমা খাতুন বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী অন্তরা সাহা ছোয়া (১৪)কে বিদ্যালয় এবং কোচিংয়ে আসা যাওয়ার পথে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। এক পর্যায়ে তানিন তালুকদার প্রেমের প্রস্তাব  দেয়। 

ওই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তানিন বন্ধুদের নিয়ে অন্তরাকে নোংরা ভাষায় প্রতিনিয়ত ইভটিজিং করছিল। অতিষ্ঠ হয়ে অন্তরা তার পিতাকে জানায়। এরপর তার পিতা তানিনের পরিবারকে বিষয়টি অবহিত করেন।

এ ঘটনায় তানিন ক্ষিপ্ত হয়ে অন্তরাদের বাড়িতে ও তার পিতার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে গুলি করে হত্যা করার হুমকি দেয়। এ বিষয়গুলো বখাটের পরিবার ও স্থানীয় কতিপয় গণ্যমান্য ব্যক্তিকে অন্তরার পরিবারের সদস্যরা অবহিত করে। 

বিষয়টি তানিন জানতে পেরে গত ২০শে এপ্রিল স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে অন্তরাকে ধরে মুখচেপে ধরে মোবাইল ফোনে সেলফি তুলে এবং সেই ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে  দেয়।  অপমানে সোমবার সন্ধ্যারদিকে কোচিং শেষে বাড়িতে গিয়ে ঘরে ঢুকেই অন্তরা দরজা বন্ধ করে দেয়। মা নমিতা রাণী সাহা তাকে না পেয়ে তার কক্ষে খুঁজতে গেলে তার ঘরের ভেতর থেকে দরজা বন্ধ দেখে তাকে ডাকাডাকি করেন। কিন্তু কোন সাড়া না পেয়ে বাড়ির  লোকজন ঘরে প্রবেশ করে অন্তরাকে ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত দেখতে পান। পরে তাকে দ্রুত সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সাহেদুর রহমান অস্তরাকে মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে রাতে সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মাজেদুর রহমান ও উপ-পরিদর্শক আশরাফুল আলম সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে গিয়ে অন্তরার লাশের সুরতহাল করে লাশ থানায় নিয়ে আসেন। এ ঘটনায় বখাটে তৌহিদুর রহমান (তানিন তালুকদার)কে প্রধান আসামি করে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ২/৩ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে নিহতের পিতা নারায়ণ চন্দ্র সাহা বাদী হয়ে সরিষাবাড়ী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মাজেদুর রহমান বলেন, নিহতের পিতা বাদী হয়ে থানায় একটি অভিযোগ করেছেন। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। সূত্র: মানবজমিন।

বিডি২৪লাইভ/এমআর

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: