মোকাব্বিরের সাথে একই মঞ্চে ড. কামাল

প্রকাশিত: ২৬ এপ্রিল ২০১৯, ০৬:২৮ পিএম

দলীয় নির্দেশ অমান্য করে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়া গণফোরামের মোকাব্বির খান শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দলের কাউন্সিলে অংশ নিয়েছেন। সকালে রাজধানীর গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চে অনুষ্ঠিত দলটির কাউন্সিলে তিনি অংশ নেন। কাউন্সিলে সভাপতিত্ব করছেন গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন।

দীর্ঘ ৮ বছর পর বিশেষ কাউন্সিলে বসে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরাম। সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে এই কাউন্সিল চলে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত।

দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে গত ২ এপ্রিল সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন মোকাব্বির খান। দল ও জোটের সিদ্ধান্ত অমান্য করে কাউকে কিছু না জানিয়ে শপথ নেওয়ায় তাকে নিয়ে শুরু হয় তুমুল আলোচনা। দলের প্রধান ড. কামাল হোসেন বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ হন।

এমনকি শপথ নেওয়ার তিনদিন পর ৫ এপ্রিল ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি মোকাব্বির খানকে সেখান থেকে বের করে দেন। সেসময় কয়েকজন গণফোরাম নেতা জানিয়েছিলেন, তাকে বহিষ্কার করা হতে পারে।

&dquote;&dquote;
ওই ঘটনার দেড় মাসের মাথায় ড. কামালের সঙ্গেই কাউন্সিল ভেন্যুতে প্রবেশ করেন মোকাব্বির খান। দলের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য’র জায়গা হয় মূল মঞ্চেই। গণফোরামের আরেক শীর্ষ নেতা ড. রেজা কিবরিয়ার ডান পাশে বসেন তিনি।

এদিকে কাউন্সিলে মোকাব্বিরের উপস্থিতি নিয়ে নেতা-কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। গণফোরামের প্রশিক্ষণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পথিক গণমাধ্যমকে বলেন, মোকাব্বির খানকে নিয়ে কামাল হোসেনের নানামুখী আচরণ রাজনীতির জন্য খুব কষ্টদায়ক।

মোকাব্বিরের ব্যাপারে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে গণফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক মোশতাক আহমেদ বলেন, তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তিনি জবাব দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দলের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্যের ভাষ্য, মোকাব্বির খানকে সম্ভবত দাওয়াত দেওয়া হয়নি। তিনি নিজেই এসেছেন।

&dquote;&dquote;বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন ১৯৯২ সালে আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে এসে পরের বছর গঠন করেন গণফোরাম। ১৯৯২ সালের ১৯ এবং ২০ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলে জিল্লুর রহমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এ সময়ে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যের পদ থেকে বাদ পড়েন ড. কামাল হোসেন।

১৯৯৩ সালের আগস্ট মাসের শেষ দিকে গণতান্ত্রিক ফোরামের নামে তিন দিনব্যাপী জাতীয় মহাসম্মেলন আহ্বান করা হয়। এ সম্মেলনের মাধ্যমে ২৯ আগস্ট রাজনৈতিক দল গণফোরাম গঠনের ঘোষণা দেয়া হয়। এ সময়ে সিপিবির একটি সংস্কারবাদী অংশ, পংকজ ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে ন্যাপ এবং শাহজাহান সিরাজের নেতৃত্বে জাসদের একটি অংশ গণফোরামের সাথে একসাথে কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়।

ড. হোসেনের নেতৃত্বে গণফোরামে যোগ দেন সিপিবি নেতা সাইফুদ্দিন আহমেদ মানিক, ন্যাপ নেতা পংকজ ভট্টাচার্য, ব্যারিস্টার আমীর উল ইসলাম, আবুল মাল আব্দুল মুহিত, শাহজাহান সিরাজ দলের প্রথম আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব ছিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। এর পরে কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক পদটি পান সাইফুদ্দিন আহমেদ মানিক। তার মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ইঞ্জিনিয়ার কাসেম ও অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী। ২০১১’র ২৯ আগস্ট মোস্তফা মহসিন মন্টু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

এ দিকে এবারো বিশেষ কাউন্সিলে দলের সাধারণ সম্পাদকসহ বেশ কয়েকটি পদে নতুন মুখ আসছে। এ ছাড়া সুশীলসমাজের একটি প্রতিনিধিদল সম্পৃক্ত হতে যাচ্ছেন বলে শোনা যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জোটের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচিত হন গণফোরামের দুই নেতা সুলতান মনসুর ও মোকাব্বির খান। ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করে জয়ী হওয়া সুলতান মনসুর গত ৭ মার্চ শপথ নিয়ে সংসদ অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন।

ওই সময় মোকাব্বির খানও শপথ নেবেন বলে জানানো হলেও শেষ পর্যন্ত তিনি সরে যান। তিনি পরবর্তীতে নিজ সিদ্ধান্তেই শপথ নেন। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে শপথ নেয়ায় সুলতান মসসুরকে গণফোরাম থেকে প্রাথমিকভাবে বহিষ্কার করা হয়।

বিডি২৪লাইভ/এইচকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: