এমনটা ভাবনায়ও ছিল না ট্রাম্পের

প্রকাশিত: ০৬ নভেম্বর ২০২০, ০৩:৫০ পিএম
এমনটা ভাবনায়ও ছিল না ডনাল্ড ট্রাম্পের। নির্বাচনে জিতবেন- আত্মবিশ্বাস ছিল তার। কিন্তু কোথা থেকে কি হয়ে গেল, কিছুই যেন বুঝে উঠতে পারলেন না তিনি। ১৯৯২ সালের পর প্রথম ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচনে হেরে যাচ্ছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের ঘোর শত্রু উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ চুক্তির মাধ্যমে, ইসরাইলের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে মধ্যস্থতা করার মাধ্যমে, চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক লড়াই চালানোর মাধ্যমে তিনি হয়তো ভেবেছিলেন বড় সমর্থন পাবেন দেশে। তাই তিনি নির্বাচনে জিততে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু করোনাভাইরাস ইস্যু তাকে তলে তলে ঘুণ পোকার মতো খেয়ে দিয়েছে তা হয়তো মালুম করতে পারেন নি। তিনি ইরানের সঙ্গে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার করা ঐতিহাসিক পারমাণবিক চুক্তি বাতিল করেছেন। ক্ষমতায় আসার পর পরই প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়েছেন, যার জন্য মাত্র ১৫ বছর বয়সী বালিকা গ্রেটা থানবার্গের চোখ রাঙানি দেখতে হয়েছে তাকে। জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে একতরফা স্বীকৃতি দিয়েছেন। এসব কারণে ট্রাম্পের পায়ের নিচ থেকে আস্তে আস্তে মাটি সরে গেছে। তিনি হয়তো তা বুঝতে পারেন নি। এবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি কিছুতেই পরাজয় মেনে নিতে রাজি নন। নির্বাচনের আগেই তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন। তাছাড়া তিনি পরাজিত হলে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন না বলে মন্তব্য করেন একাধিকবার। করোনাভাইরাসে যখন নিজের দেশে কমপক্ষে ২ লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে, নিউ ইয়র্ক সহ সারা মার্কিন মুলুকে গা হিম করা আতঙ্ক, তখন তিনি পরিস্থিতি মোকাবিলা করার পরিবর্তে এর জন্য দায়ী করেছেন ‘চীনা ভাইরাস’কে। এর মধ্য দিয়ে তিনি করোনাভাইরাসকে সামনে আনার চেয়ে চীনকে খোঁচা মারতে রাজনীতি ব্যবহার করেছেন। উল্টো মানুষজন ভীতসন্ত্রস্ত হবে বলে তিনি করোনাভাইরাসের ভয়াবহতাকে এড়িয়ে গেছেন বলেও জানিয়েছেন। পাল্টা জো বাইডেন করোনা ইস্যুতে সতর্কতা অবলম্বন করার কারণে তার কঠোর সমালোচনা করেছেন তিনি। জো বাইডেনকে ‘স্লিপি জো’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। এর ফলে যেসব ভোটার রিপাবলিকান বা ডেমোক্রেট- কোনো দলের একনিষ্ঠ সমর্থক নন, তারা নতুন করে হিসাব কষেছেন। নির্বাচনে যখন একের পর এক পিছিয়ে পড়ছিলেন ট্রাম্প, যখন ৬টি সুইং স্টেটের নির্বাচনের ফল স্থবির হয়ে পড়ে, তখনই তিনি ভোট জালিয়াতির অভিযোগ করেন। বলেন, ওইসব রাজ্যে ভোট জালিয়াতি হচ্ছে। ফলে তিনি বা তার টিম ওইসব রাজ্যের কমপক্ষে ৪টি রাজ্যে ভোট গণনা বন্ধ করতে বা নতুন করে গণনা করার দাবি জানিয়ে আইনি চ্যালেঞ্জ দাঁড় করেছেন। তিনি যেভাবেই হোক- আসলে তার আস্থার জায়গায় অটল থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে চাইছিলেন। কিন্তু শেষ বিচারে তা পারলেন না। এমনটা আসলে তার হিসাবে হওয়ার কথা ছিল না। সূত্র: মানবজমিন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: