আন্দোলনের ৭৯ দিন!

প্রকাশিত: ০৪ ডিসেম্বর ২০২০, ০৬:৫২ পিএম
সাভারের আশুলিয়ায় তাজরীন গার্মেন্টস ফ্যাশনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার আট বছর পার হলেও আহত শ্রমিকদের চিকিৎসা খরচ, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের দাবিতে টানা ৭৯ দিন যাবত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ভুক্তভোগীরা। তাদের ক্ষতি পূরণ না দিলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তিন দফা দাবি আদায়ের জন্য অবস্থান নিয়েছেন তাজরীন গার্মেন্টসে অগ্নিকাণ্ডে আহত শ্রমিকরা। আন্দোলনরত ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকরা বলেন, আজ আট বছর অতিবাহিত হলেও আমরা তাজরীন গার্মেন্টস এর আহত শ্রমিকরা দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা থেকে কিছু আর্থিক সহায়তা ছাড়া আর কিছুই পাইনি। সেই অগ্নিকান্ডের ঘটনায় আমরা স্থায়ীভাবে পঙ্গু হওয়ার কারণে কাজে অক্ষম ও কর্মহীন হয়ে পড়েছি। ফলে পরিবারের সন্তানদের নিয়ে বছরের পর বছর মানবেতর জীবনযাপন করছি। তারা আরও বলেন, শ্রম মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রী কাছে আমাদের দাবি সমূহ নিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর উদ্যোগ এখন পর্যন্ত আমরা দেখছি না। আন্দোলনকারীদের নেত্রী জরিনা বিডি২৪লাইভকে বলেন, আমরা আজ ৭৯ দিন ধরে তিন দফা দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছি। এখন পর্যন্ত আমরা কারও পক্ষ থেকে কোন ধরনের আশ্বাস পাইনি। তিনি বলেন, এই রাস্তার ওপর আমরা দীর্ঘ দিন যাবত আন্দোলন করে যাচ্ছি। এখানে আমাদের না আছে খাবারের ব্যবস্থা, না আছে টয়লেটের ব্যবস্থা। আমরা একবেলা খেতে পারলেও আরেক বেলার খাওয়ার সামর্থ্য থাকে না। তারপরও আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। যতদিন পর্যন্ত আমাদের দাবি আদায় না হবে ততদিন পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব। তাদের তিন দফা দাবি হল- ১. শ্রম আইনের ক্ষতিপূরণের ধারা অবিলম্বে বদল সাপেক্ষে সকল আহত শ্রমিকদের জন্য একজীবন আয়ের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। ২. সকল আহত শ্রমিকদের সম্মানজনক ও বাস্তবসম্মত পুনর্বাসনে ব্যবস্থা করতে হবে। ৩. আহত শ্রমিকদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এসকল দাবি নিয়েই তারা আজ ৭৮ দিন যাবত আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর সাভারের আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন অন্তত ১১৩ জন শ্রমিক। আহত হন আরও অনেকে। সেদিনের আগুনের লেলিহান শিখা আজও ভয়াবহ হয়ে চোখে ফেরে ভুক্তভোগী শ্রমিক ও তাদের পরিবারের কাছে। স্বজন হারানোর বেদনা বয়ে বেড়াচ্ছে নিহতদের পরিবার। আর আহতরা বয়ে বেড়াচ্ছেন সেই ক্ষত। নিদারুণ কষ্টে আছে ভুক্তভোগীদের পরিবার।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: