ফের কুবির মুক্তমঞ্চে ফাটল

প্রকাশিত: ১৯ জানুয়ারি ২০২১, ০৭:১৪ পিএম
শাহীন আলম কুবি থেকে: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) নবনির্মিত মুক্তমঞ্চে ফের ফাটল দেখা দিয়েছে। স্থাপনাটির পশ্চিম পাশে উপর দিকে প্রায় তিন ফুট দীর্ঘ এ ফাটলটি সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে চলতি বছরের শুরুতে স্থাপনাটি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের আগেই দেখা দিয়েছিল বিশাল ফাটল। এর ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অভ্যন্তরীণ সড়ক নির্মাণের পর বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। এতে ফের কাজের অনিয়ম ও নিম্নমানের উপাদান ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন মহলে। শিক্ষার্থীদের দাবি সংশ্লিষ্ট কমিটির দায়িত্বহীনতা এবং প্রশাসনের কাজে গড়মিলের ফলে মোটা অংকের অর্থ ব্যয় হলেও ফল পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সদ্য শেষ হওয়া বছরের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ সোহরাব উদ্দীনকে প্রধান করে সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের জন্য সাত সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠিত হয়। প্রকল্পের মোট বাজেট ছিল ৫৩ লাখ টাকা। যার কাজ পায় সুমাইয়া এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে মুক্তমঞ্চের কাজ ছিল অন্যতম এবং সাথে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে সৌন্দর্যবর্ধন কাজ। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, মুক্তমঞ্চ নির্মাণের সময় ভবন নির্মাণের কোনো নিয়ম মানা হয়নি। পাহাড় কিংবা উঁচু স্থানে ব্রিকসের ওপর কোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে হলে মাটির নিচ থেকে ন্যূনতম ৩০ ইঞ্চি বিম প্রস্তুত করতে হয়। কিন্তু এখানে মানা হয়নি সে সব নিয়মনীতি। জানা গেছে, এত বড় প্রকল্প বাস্তবায়িত হয় কোনো ধরনের পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়াই। এমনকি ছিল না নির্দিষ্ট কোনো নকশা। ফলে বিশৃঙ্খলভাবে কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। কাজের মান শতভাগ নিশ্চিত হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি সংশ্লিষ্ট প্রকৌশল দপ্তরের কর্তা ব্যক্তিরা ও প্রকল্পের আহ্বায়ক। বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিবর্তনের সভাপতি সজীব দাশ বাঁধন বলেন, দীর্ঘ ১৪ বছরের পর একটি মুক্তমঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছিল।মুক্তমঞ্চকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃতি চর্চা হয়। কিন্তু নির্মাণের সময় যথাযথ পরিচর্যার কারণে হস্তান্তর করার সময় ফাটল দেখা দিয়েছে। যা একজন সাংস্কৃতিক কর্মী হিসাবে মেনে নেওয়া খুব কষ্টকর। তাছাড়া এই ফাটল কখন ঠিক হবে, তা বলাও যায় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম শহিদুল হাসান বলেন, ঠিকাদার স্ট্রাকচার করার সময় ফাটল না হওয়ার জন্য একটি সাপোর্টার হিসাবে একটি বিম দিয়েছিল। কিন্তু সৌন্দর্যবর্ধনের কমিটির কথা অনুযায়ী সাপোর্টার ভেঙ্গে ফেলা হয়েছিল। যার ফলে এই জায়গা ফাটল দেখা দিয়েছে। যদি করার আগে সৌন্দর্যবর্ধন কমিটি বলত সাপোর্টার দেওয়া যাবে না, তাহলে ঠিকাদার অন্য সিস্টেম স্ট্রাকচার তৈরি করত। কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার পর বললে তো সব কিছু ঠিক হবে না। সৌন্দর্যবর্ধনের কমিটি অধ্যাপক সোহরাব উদ্দীন বলেন, মুক্তমঞ্চে কাজ করার সময় কোন জায়গা বিম হবে, কোথায় ব্রিকস হবে সেটা আমি শিক্ষক হয়ে কিভাবে জানব। কিভাবে করলে ফাটল হবে, কোথায় বিম বা পিলার হবে সেইগুলো জানার কথা প্রকৌশলী দপ্তরা। বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোঃ আবু তাহের বলেন, এই মুক্তমঞ্চ হস্তান্তর করার সময় একবার মেরামত করা হয়েছিল। যেহেতু আবার ফাটল দেখা দিয়েছে সেটা আমরা সৌন্দর্যবর্ধন কমিটির সাথে কথা বলব। তবে আমার জানা মতে কন্টাক্টরকে এখনও তার জামানত টাকা ফেরত দেয়া হয় নি। দরকার হলে আমরা আবার মেরামত করব যাতে আর ফাটল না হয়। যদি বড় কোন সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে সেটা আমরা যত দ্রুত সম্ভব সমাধান করব।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: