ঈদের বাজার নিয়ে হতাশায় ব্যবসায়ীরা

প্রকাশিত: ২৮ এপ্রিল ২০২১, ১০:৪১ পিএম
মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় টানা ১৫ দিন বন্ধ থাকার পর সর্বাত্মক লকডাউনের মধ্যেই রবিবার (২৫ এপ্রিল) থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান ও শপিংমল খুলে দেয়া হয়েছে। তবে মার্কেট খুলে দেওয়ার চতুর্থ দিনেও ক্রেতাদের তেমন সমাগম লক্ষ করা যায়নি। বেশির ভাগ দোকানে ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের বসে থাকতে দেখা গেছে। ঈদের বাজারে আশানুরূপ ক্রেতা এবং বিক্রি না হওয়ায় হতাশায় ব্যবসায়ীরা। আজ বুধবার (২৮ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত রাজধানীর শনি আখড়া এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। এ এলাকার আয়েশা সুপার মার্কেট ও আর এস শপিং কমপ্লেক্স এ চিত্র দেখা গেছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান ও শপিংমল খুলে দেয়া হলেও মার্কেটে ঢুকতে ফটকগুলোতে নিরাপত্তারক্ষীদের স্যানিটাইজার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়নি। এছাড়া অনেক দোকান কর্মচারীদের এবং অনেক ক্রেতাদেরও মাস্ক ব্যবহার দেখা যায়নি। ব্যবসায়ীরা বলেন, গণপরিবহন বন্ধ। আশপাশের মানুষ যারা, তারাই আসবে। দূরের ক্রেতারা আসতে পারবে না। বাস চলাচল শুরু হলে হয়তো বেচাবিক্রি বাড়বে। তবে কতটা ব্যবসা করতে পারবেন তা জানেন না। তারপরও কিছু বেচাবিক্রি হয়তো হবে। রোজার মাঝামাঝি হওয়ায় কিছুটা ব্যবসা হবে বলে আশা করছেন তারা। তারা বলেন, ঈদ উপলক্ষে তারা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। তবে এবার বিক্রি খুব একটা হবে বলে মনে করছেন না। কারণ মানুষের হাতে টাকা নেই। তাছাড়া ইতোমধ্যে ১৫ রোজা চলে গেছে। সাধারণত রোজার ঈদের বিক্রি ১০ রোজার আগেই শুরু হয়ে যায়। গত বছরের মতো এই বছরও তাদের লোকসান গুনতে হবে। ব্যবসায়ীরা জানান, লকডাউনের মধ্যে ক্রেতা না থাকায় দোকান খোলা আর না খোলা সমান। সারা বছরের ক্রেতা থাকে এখন তার থেকে বেশি নয়। লকডাউনের মধ্যে দোকান খোলায় ব্যবসায়ীদের ওপর চাপ আরও বাড়ছে বলে জানান তারা। তারা মনে করেন এখন বিক্রি হোক আর নাই হোক। এখন দোকান ভাড়া কর্মচারীদের বেতন ঈদ বোনাস সব মিলিয়ে চাপ বেড়েছে। এক বিপণি বিতানের কর্মকর্তা মো. আকাশ বলেন, সকাল থেকে দু-চারজন ক্রেতা এসেছিলেন ঠিকই, কিন্তু দরাদরি করে চলে যাচ্ছেন। দু'একটা বিক্রি হচ্ছে। ঈদের এই পূর্ব মুহুর্তে ক্রেতাদের যেমন সমাগম থাকার কথা ছিলো তার কিছুই নেই। গতবছর দোকানতো একেবারে বন্ধ ছিল। আমরা মনে করেছিলাম গতবারের সেই ক্ষতি কিছুটা পুরনো করতে পারবো। কিন্তু তা আর হচ্ছে না। এক দোকানের কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, মার্কেট খোলার অনুমতি দিলেও কাস্টমার এবং বিক্রির মাধ্যমে সন্তুষ্ট নই। কারন ঈদের বাজার হিসেবে যেমন চাপ থাকার কথা ছিলো, তার কিছুই নেই। স্বাভাবিক সময় যেমন বিক্রি হয় এখন তেমনই হচ্ছে। প্রতিবছরের এই সময়ে মার্কেটে যেমন চাপ থাকে এবং আমাদের বিক্রির যে একটা চাপ থাকে তার কিছুই নেই। এক ব্যবসায়ী মো. আকাশ ও তার কর্মচারী দোকান খুলে বসে আছেন। এসময় দোকানের মধ্যে কোন ক্রেতা লক্ষ্য করা যায়নি। লকডাউনে ঈদের পূর্বে ব্যবসার চিত্র সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন ভাই কি আর বলবো আপনি তো নিজেই দেখেছেন দোকান খুলে আমি এবং আমার কর্মচারী বসে আছি। কোন ক্রেতা নেই। ব্যবসায়ী মো. আরাফাত বলেন, গতবছর লকডাউনের পর থেকেই ব্যবসার অবস্থা খুবই খারাপ। গতবছর লকডাউনের পর দোকানের কর্মচারীকে বাদ দিয়ে দিয়েছি। কষ্ট হলেও নিজে একাই চালিয়ে নিচ্ছি। এখন অবস্থা খুবই ভয়াবহ। প্রতি মাসে চালান খোয়াচ্ছেন বলে জানান তিনি। আক্ষেপ নিয়ে তিনি বলেন দোকান ছেড়ে দিয়ে বাড়ি চলে যাবেন। বাড়ি গিয়ে জমি চাষ করবেন বলে জানান তিনি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: