নাসির-অমি ৭ দিনের রিমান্ডে

প্রকাশিত: ১৫ জুন ২০২১, ১০:৫৩ পিএম
অভিনেত্রী পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেফতার হওয়া আসামি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমির বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার (১৫ জুন) তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের দশ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম নিভানা খায়ের জেসি প্রত্যেকের ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন- (নাসির উদ্দিন মাহমুদ) (৬৫), তুহিন সিদ্দিকী অমি (৩৩), লিপি আক্তার (১৮), সুমি আক্তার (১৯) এবং নাজমা আমিন স্নিগ্ধা (২৪)। এর আগে সোমবার (১৪ জুন) চলচ্চিত্র অভিনেত্রী পরীমনির অভিযোগের পর গ্রেপ্তার হওয়া নাসির উদ্দিনকে ঢাকা বোট ক্লাবের এক্সিকিউটিভ কমিটি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া অভিযোগ তদন্তের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির এক ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কমিটির সভাপতি ড. বেনজির আহমেদের সভাপতিত্বে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কমিটির আরো আট সদস্য যুক্ত হন। ক্লাবের উপদেষ্টা রুবেল আজিজও এ সভায় অংশ নেন। ক্লাবের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরীমনি এবং নাসির ইউ মাহমুদকে কেন্দ্র করে যে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে কমিটি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৈঠকটিতে নাসির ইউ মাহমুদ, তুহিন সিদ্দিকী অমি এবং শাহ এস আলমের ক্লাবের সদস্য পদ স্থগিত করাও সিদ্ধান্ত হয়। অভিযোগ তদন্তের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবে বোট ক্লাব কর্তৃপক্ষের কাছে। সভায় বলা হয়, নাসির ইউ মাহমুদ ক্লাবের নিয়ম না মেনে নির্ধারিত সময়ের বাইরে অতিথিকে ক্লাবের ভিতরে নিয়ে এসেছিলেন। যা ক্লাবের নিয়ম শৃঙ্খলার পরিপন্থি। এর আগে রোববার প্রথমে ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়ে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চান পরীমনি। পরে ঢাকার বনানীর বাসায় ডেকে ঘটনার বর্ণনা দেন তিনি। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাসে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ তুলে তিনি লেখেন, ‘বরাবর, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমি পরীমনি। এই দেশের একজন বাধ্যগত নাগরিক। আমার পেশা চলচ্চিত্র। আমি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমাকে রেপ এবং হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।’ এই বিচার কই চাইবো আমি? কোথায় চাইবো? কে করবে সঠিক বিচার? আমি খুঁজে পাইনি চার দিন ধরে। থানা থেকে শুরু করে আমাদের চলচ্চিত্র বন্ধু বেনজীর আহমেদ আইজিপি স্যার! আমি কাউকে পাই না মা। যাদের পেয়েছি সবাই শুধু ঘটনার বিস্তারিত জেনে, দেখছি বলে চুপ হয়ে যায়! পরীমনি আরও লেখেন, আমি মেয়ে, আমি নায়িকা, তার আগে আমি মানুষ। আমি চুপ করে থাকতে পারি না। আজ আমার সঙ্গে যা হয়েছে তা যদি আমি কেবল মেয়ে বলে, লোকে কী বলবে এই গিলানো বাক্য মেনে নিয়ে চুপ হয়ে যাই, তাহলে অনেকের মতো (যাদের অনেক নাম এক্ষুণি মনে পড়ে গেল) তাদের মতো আমিও কেবল তাদের দল ভারি করতে চলেছি হয়তো। আফসোস ছাড়া কারোর কি করার থাকবে তখন! আমি তাদের মতো চুপ কি করে থাকতে পারি মা? আমি তো আপনাকে দেখিনি চুপ থেকে কোনো অন্যায় মেনে নিতে! পরীমনি আবেগী ওই স্ট্যাটাসে আরও লেখেন, আমার মা যখন মারা যান তখন আমার বয়স আড়াই বছর। এতদিনে কখনো আমার এক মুহূর্ত মাকে খুব দরকার এখন, মনে হয়নি এটা। আজ মনে হচ্ছে, ভীষণ রকম মনে হচ্ছে মাকে দরকার, একটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরার জন্য দরকার। আমার আপনাকে দরকার মা। আমার এখন বেঁচে থাকার জন্য আপনাকে দরকার মা। মা আমি বাচঁতে চাই। আমাকে বাঁচিয়ে নাও মা। এরপর রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার বনানীর বাসায় সাংবাদিকদের কাছে নির্যাতনকারীদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেন পরীমনি। তিনি দুজনের নাম প্রকাশ করে জানান, তাদের একজন রাজধানীর উত্তরা ক্লাব লিমিটেডের সাবেক প্রেসিডেন্ট নাছির ইউ মাহমুদ এবং অন্যজন তার (পরীমনি) কস্টিউম ডিজাইনার জেমীর স্কুলবন্ধু অমি নামের এক ব্যবসায়ী। এর আগে সোমবার দুপুরে চিত্রনায়িকা পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: