প্রতিদিন যশোরের করোনা পরিস্থিতি যেন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সাথে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিলও। গত ৯ দিনে যশোরের বিভিন্ন উপজেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২১ জন । আর গত ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন পাঁচজন।
তবে পরিস্থিতি ভয়াবহ হলেও কঠোর বিধিনিষেধের মানছেন না যশোরের জনগন। একই সাথে চলছে জনগণ ও প্রশাসনের লুকোচুরি খেলা। যশোর পৌর এলাকা ও আশপাশের চারটি ইউনিয়নে চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা মানা হচ্ছে না।
প্রশাসনের তৎপরতার মধ্যেও দড়াটানার মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় যানজট লাগছে। এমন পরিস্থিতিতে যশোরের মৃত্যুর মিছিল ঠেকাতে কঠোর বিধিনিষেধ নয়, কার্যকর লকডাউনের দাবি জানিয়েছে সচেতন মহল।
সুত্র জানায়, গত ৯ জুন থেকে যশোর পৌর এলাকা ও নওয়াপাড়া পৌরসভা এলাকায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে প্রশাসন। ঐদিন জেলায় ৩৬৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৫২ জনের করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ছিলো ৫৩ শতাংশ। ওই দিন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান দুইজন।
এরপর বিধি নিষেধ চলাকালেই যশোরে করোনা পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। প্রতিনিয়িত আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে মৃত্যুর মিছিলও। সর্বশেষ বুধবার যশোরে ১৬৫ জন শনাক্ত হয়েছেন। ৪১২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে এই ২০৪ জনের করোনা পজিটিভ হয়েছে। এছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় মারা গেছেন আরো পাঁচজন।
এর আগে ১৫ জুন আক্রান্ত হন ২৪৯ জন। আক্রান্তের হার ছিলো ৪৭ শতাংশ। মারা
যান তিনজন। ১৪ জুন ২৪২টি নমুনা পরীক্ষা করে শনাক্ত ৯২ জন। মারা যান পাঁচজন। ১৩ জুন ৩০৪টি নমুনা পরীক্ষা করে শনাক্ত হয় ১৫০ জন। ১২ জুন ২০১টি নমুনা পরীক্ষা করে শনাক্ত হয় ৬১ জন। মারা যান তিনজন। ১১ জুন ২৬৯টি নমুনা পরীক্ষা করে শনাক্ত হয় ৭৮ জন। মারা যান দুই জন। ১০ জুন ৪৯১টি নমুনা পরীক্ষা করে শনাক্ত হয় ১৯৪ জন। মারা যান একজন।
এদিকে, করোনার এই প্রকোপ ঠেকাতে যশোর পৌর এলাকা ও নওয়াপাড়া পৌর এলাকায় কঠোর বিধিনিষেধ আরো এক সপ্তাহের জন্য বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া যশোর পৌরসভার লাগুয়া উপশহর, নওয়াপাড়া, আরবপুর ও চাঁচড়া ইউনিয়নে এই কঠোর বিধিনিষেধে জারি করা হয়েছে। কিন্তু কোনভাবেই মানুষ ঘরে থাকছেন না। সঙ্গত কারণেই প্রতিনিয়িত করোনার প্রকোপ যশোরে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। মারা যাচ্ছেন মানুষ।
পাঠকের মন্তব্য: