‘ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই, ছোট সে ফেরি’

প্রকাশিত: ০১ আগষ্ট ২০২১, ১২:৩৪ এএম
করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে সরকার ঘোষিত চলমান কঠোর লকডাউনের মধ্যে আগামীকাল রবিবার ( আগস্ট) থেকে রপ্তানিমুখী শিল্প-কারখানা খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। তবে দূরপাল্লাসহ সকল গণপরিবহন পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী বন্ধ আছে। শুধু চলমান লকডাউনে পণ্যবাহী ট্রাক ও জরুরি পরিবহন পারাপারের জন্য চালু আছে ফেরি। সেই ফেরিতেই যাত্রীদের চাপে ঠাঁই মেলেনি পরিবহনের। ফেরিগুলোতে মৌমাছির মতো গিজগিজ করছে মানুষ। এমন ঘটনা ঘটেছে লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর ঘাটের 'কৃষাণি' নামের এক ফেরিতে পারাপারের ঘাটে। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি ও বিধিনিষেধ অমান্য করে প্রায় ৭০০ যাত্রী নিয়ে এসেছে ফেরিটি। এতে একটি গাড়িও দেখা যায়নি। শনিবার (৩১ জুলাই) এ রুটে যাতায়াত করা ৩ টি ফেরিতেই যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় ছিলো। করোনার এ মুহূর্তে স্বাস্থ্যবিধি ভুলে গিয়ে যাত্রীদের এমন চাপে ভাইরাসটির সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল। এরপর বিকেল ৩ টার দিকে মজুচৌধুরীরহাট ফেরিঘাটের প্রান্তিক সহকারী রেজাউল করিম রাজু বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন- ভোলা থেকে সিডিউল অনুযায়ী ছেড়ে আসা প্রত্যেকটি ফেরিতেই যাত্রীদের ভিড় ছিল। একটি ফেরিতেও গাড়ি আনা সম্ভব হয়নি। তবে সবাই কারখানার শ্রমিক। শিল্প-কলকারখানা খুলে দেওয়ায় যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। এছাড়া ঈদ থেকে গত শুক্রবার পর্যন্ত যাত্রীদের এমন চাপ হয়নি। স্থানীয় সূত্র জানায়, আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফেরি কৃষাণি এসে মজুচৌধুরীর হাট ঘাটে পৌঁছায়। এসময় ফেরিটিতে নারী-পুরুষের ভিড় দেখা যায়। একটি গাড়িও আসেনি এ ফেরিতে। পুরো ফেরি যাত্রীর ভিড়ে কানায় কানায় পূর্ণ ছিল। এরমধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশের মুখেই মাস্ক ছিলো না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এদিকে, ঈদ থেকে শনিবার (৩১ জুলাই) পর্যন্ত দেশের সকল রপ্তানিমুখী শিল্প-কারখানা বন্ধ ছিলো। লম্বা ছুটি নিয়ে শ্রমজীবী মানুষগুলো বাড়িতে চলে আসে। হঠাৎ করে আগামীকাল রবিবার (১ আগস্ট) থেকে কারখানাগুলো খুলে দেয়ার ঘোষণা পায় পোশাক শ্রমিকরা। চাকরি বাঁচাতে লকডাউনের কথা ভুলে গিয়ে শ্রমজীবীরা ভোলা থেকে মেঘনা পাড়ি দিতে ফেরিতে উঠলেও ইজারাদার নিজ ইচ্ছে মতো ভাড়া হাকিয়ে নিচ্ছেন। ৭০ টাকা ভাড়া হলেও অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছেন বলে যাত্রীদের অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, মজুচৌধুরীরহাট থেকে লক্ষ্মীপুর উত্তর স্টেশন আসতে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ৫০ টাকা স্বাভাবিক ভাড়া। তবে আজ শনিবার সকাল থেকে এ রুটের অটোরিকশা চালকরা নিজ ইচ্ছেমতো ভাড়া নিচ্ছেন। ১০০-১৫০ টাকা প্রতি যাত্রী থেকে আদায় করা হচ্ছে। কর্মস্থলে যেতে বাধ্য হয়ে যাত্রীরা অতিরিক্ত ভাড়া দিচ্ছেন। ব্যক্তিগত মোটরসাইকেলে জনপ্রতি ২০০ টাকা করে ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের লক্ষ্মীপুর পৌঁছে দিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পোশাক শ্রমিক রেহানা, সুমনা, রেজাউল, হান্নান, নূর আলম ও সুমাইয়াসহ অনেক যাত্রী জানায়, কারখানা খুলে দিয়েছে। যেভাবেই হোক কর্মস্থলে পৌঁছতে হবে। ভাড়া বেশি দিয়ে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত এসেছেন। যত ভাড়াই লাগুক, যে বাহনই হোক ঢাকায় পৌঁছতে হবে। লক্ষ্মীপুর-মজুচৌধুরীরহাট মহাসড়কের সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক মো. সজিব জানান, রাস্তার অবস্থা ভালো না। ২০ মিনিটের পথ পাড়ি দিয়ে জেলা শহরে আসতে আধাঘণ্টার ওপর সময় ব্যয় হয়। এ মুহুর্তে যাত্রীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৮০-১০০ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: