পাটুরিয়া ফেরি ডুবির ঘটনায় চলছে উদ্ধার কাজ

প্রকাশিত: ২৭ অক্টোবর ২০২১, ১১:০৬ পিএম
পাটুরিয়া ফেরিঘাটে রো রো আমানত শাহ নামের ফেরি ডুবে যাওয়ায় ফেরিতে থাকা ১৭টি পন্যবাহী ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান পদ্মায় তলিয়ে গেছে। নির্দিষ্টভাবে নিখোঁজের কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। যাত্রী এবং যানবাহন উদ্ধারে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। বুধবার বেলা ৩ টা পর্যন্ত দুটি ট্রাক ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে। ফেরিতে থাকা প্রতক্ষদ্শীদের ভাস্য অনুযায়ী যানবাহনের চালক, হেলপার ও দুটি প্রাইভেটকার সহ মোট ৩০ থেকে ৩৫ জন যাত্রী ছিল। নিমজ্জিত ফেরি থেকে মর্মান্তিকভাবে বেঁচে ফিরেছেন তারা। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন আরিচা শাখার উপমহাব্যবস্থাপক মো. জিল্লুর রহমান বিডি২৪লাইভকে বলেন, দৌলতদিয়া ঘাট থেকে যানবাহন লোড করে পাটুরিয়া ঘাটের ৫ নং ফেরিঘাট নৌঙর করে বড় আকারে রো রো ফেরি আমানত শাহ। ফেরি থেকে দুই-থেকে তিনটি যানবাহন নামার পরপরই ফেরিটি ডুবে যায়। সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সরেজমিনে গিয়ে ফায়ার সার্ভিস এর ডুবুরি ইউনিট কাজ করছে। এখন পর্যন্ত কোন হতাহতর খবর পাওয়া যায়নি। উদ্ধার কাজ চালানোর জন্য উদ্ধারকারী ফেরি হামজ কাজ শুরু করেছে। উদ্ধার কাজের জন্য আরো একটি ফেরি নারায়ণগঞ্জ থেকে আসছে, জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল লতিফ। কুষ্টিয়া থেকে আসা ফেরিতে মোটরসাইকেল যাত্রী মোহাম্মদ সুজন বিডি২৪লাইভকে জানান, 'দৌলোদিয়া থেকে ছেড়ে আসার মাঝ পদ্মা তেই ফেরিতে পানি ঢুকতে শুরু করে, ফেরি কিছুটা কাত হয়ে যায়। ফেরী৫ নং ঘাটে আসা মাত্রই তলাতে থাকে। একটা গাড়ী আরেকটার সাথে ধাক্কা লাগছিল। ভয়ে আমি মোটরসাইকেল রেখে ফেরি থেকে নদীতে ঝাপ দেই। অনেকেই ফেরি থেকে ঝাপ দেওয়ার সময় পায়নি। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই লন্ডভন্ডভাবে ফেরি তলিয়ে যায়। গরাগরি খেয়ে অনেকেই গাড়ীর নিচে চাপা পরে ততক্ষণে ফেরি সম্পূর্ণ ডুবে যায়। কপাল ভালো যে আমরা কয়েকজন প্রানে বাঁচি।' খুলনা থেকে ছেড়ে আসা কাভার্ডভ্যান চালক আসলাম ও তার সহযোগী প্রবীর কান্না করতে করতে বিডি২৪লাইভকে বলেন, 'আমরা গাড়িতেই ছিলাম কয়েকজন কে বলতে শুনেছি ফেরিতে পানি উঠছে। নদীতে স্রোত থাকলে ফেরিতে পানি উঠে এটা সব সময় দেখি এজন্য গুরুত্ব দেই নাই। যখন ফেরি পারে ভিড়ল তখন দুমড়ে মুড়চে একটা গাড়ি আরেকটা সাথে ধাক্কা খাচ্ছিল। তখন গাড়ি থেকে নেমে নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার চেষ্টা করি, ঝাঁপ দেওয়ার পর ফেরি উল্টা হয়ে দেখি আমার উপর আসছে। তখন মনে করছি আর বাচুম না। কয়েকবার দম আটকে গেছে, ডুবে যাওয়া গাড়ির সাথে জোরে জোরে অনেক ধাক্কা খেয়েছি।' এ ঘটনায় সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান বিডি২৪লাইভকে খান, বিআইডব্লিউটি এর চেয়ারম্যান এম মাহাবুব উল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল লতিফ, পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক মোঃ শরিফুল ইসলাম ঘাট এলাকা পরিদর্শন করেন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল লতিফ বিডি২৪লাইভকে বলেন, এখনো পর্যন্ত কোনো হতাহতের ঘটনা পাওয়া যায়নি। উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা চেষ্টা করছে, আরো একটি উদ্ধারকারী জাহাজ নারায়ণগঞ্জ থেকে আসছে। ফেরি ডুবে যাওয়ার এই ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সানোয়ারুল হককে আহ্বায়ক করে ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: